কোটা নিয়ে কাজ করবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে কমিটি
প্রকাশিত : ০৬:২৩ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার

কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অবস্থান বুধবার জাতীয় সংসদে তুলে ধরেন। এর পরপরই কোটা পদ্ধতি সংস্কারের বিষয়ে কাজ শুরু করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরপরই কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে গিগগিরই ওই কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার জাতীয় সংসদে বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনও কোটারই দরকার নেই, যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।’
তিনি বলেন, ‘কোটা থাকলেই সংস্কারের প্রশ্ন আসবে। এখন সংস্কার করলে আগামীতে আরেক দল আবারও সংস্কারের কথা বলবে। কোটা থাকলেই ঝামেলা। সুতরাং কোনও কোটা পদ্ধতিরই দরকার নেই। কোটা ব্যবস্থা বাদ, এটাই আমার পরিষ্কার কথা।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোটা রাখার দরকার হয় ক্যাবিনেট সেক্রেটারি তো আছেই। তাকে তো আমি বলেই দিয়েছি, সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কমিটি বসে কাজ করবে। সেখান থেকে তারা দেখবে।’
জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি এ বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর সার্কুলার জারি করে কোটা সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বৃহস্পতিবার সকালে জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কমিটি পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবে।
এই কমিটির দায়িত্ব কী হবে তা কার্যপরিধিতে উল্লেখ থাকবে বলে জানান শফিউল। তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করার পর আমরা কাজ শুরু করব।
তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে কমিটিতে জনপ্রশাসন সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব ছাড়াও কয়েকজন শিক্ষাবিদকে রাখার চিন্তাভাবনা চলছে।
জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আকবর আলী খান জানান, প্রধানমন্ত্রী যখন নির্দেশ দিয়েছেন, তখন সরকার তা বাস্তবায়ন করবে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ। বাকি ৪৪ শতাংশ নেওয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। এ নিয়মের সংস্কার করে কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে গত রোববার থেকে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসছিল শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। এ আন্দোলনের মুখে বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার ইস্যুতে প্রথমবারের মতো সরাসরি কথা বলেন। সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে বলেন, ‘কোটা পদ্ধতিই বাতিল।’
একে//এসি