ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২০ ১৪৩১

টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন

শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তায় গুরুত্ব দিচ্ছে না গার্মেন্ট মালিকরা

প্রকাশিত : ০১:১৪ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০১:১৭ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ বৃহস্পতিবার

টিআইবির সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল, ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ অন্যরা। আজ সকালে ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে। ছবি একুশে টিভি অনলাইন

টিআইবির সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল, ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ অন্যরা। আজ সকালে ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে। ছবি একুশে টিভি অনলাইন

রানাপ্লাজা ধসের আগে তৈরি পোশাক খাতে সুশাসনের ব্যাপক ঘাটতি ছিল। দুর্ঘটনার  পর সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সমন্বিত উদ্যোগের ফলে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও অনেকক্ষেত্রেই এখনও ঘাটতি রয়ে গেছে। মালিকপক্ষ রফতানি বৃদ্ধি,  প্রবৃদ্ধি অর্জন ও ব্যবসা ধরে রাখার বিষয়ে প্রাধান্য দিলেও শ্রমিক অধিকার রক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
`তৈনি পোশাক খাতে সুশাসন: অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ পর্যালোচনা` শীষর্ক টিআইবির (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্যই তুলে ধরা হয়েছে। আজ ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
টিআইবির সহকারী প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজমুল হুদা মিনা এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। গবেষণাটির তদারকি করেন টিআইবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপার্সন অ্যাডভোকোট সুলতানা কামাল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জান, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ড. সুমাইয়া খায়ের এবং টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মো. রফিকুল হাসান।
শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আইনি সীমাবদ্ধতা এবং রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যর্থতা ও মালিক পক্ষের প্রভাবের কারণে  শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে দাবি করা হয় গবেষণা প্রতিবেদনটিতে।
গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, শ্রমিকের চাকরিচ্যুতিতে ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা, দূর্ঘটনার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ, মাতৃত্বকালীন সুবিধা, সংগঠন করার অধিকারসহ নানা বিষয়ে প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি। এগুলো নিশ্চিত করা সম্ভব হলে টেকসই উন্নয়নে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হবে।  
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, আইন প্রয়োগে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার, শ্রমিক অধিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে বিশ্বে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত করানো সম্ভব।
গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলো হলো- তৈরি পোশাক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কেন্দ্রীভূত তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য একক কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে। শ্রম আইন- ২০০৬ এ বিদ্যমান ঘাটতি বিশেষ করে শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ, প্রসূতিকালীন ছুটি, সংগঠন করা ও যৌথ দরকষাকষির অধিকার ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দায়ের করা মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করা।
এছাড়া মজুরি, অতিরিক্ত কর্মঘন্টা, ছুটি ইত্যাদি ক্ষেত্রে শ্রমিকের আইনগত অধিকার সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে নিশ্চিত করার সরকারি তদারকি বৃদ্ধির দাবি করা হয়।
উল্লেখ্য তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্প যা দেশের মোট রফতানির ৮১.২৩%।  জিডিপিতে এ খাতের অবদান ১৪.৭%। কিন্তু ২০১৩ সালে ২৪ এপ্রিল সাভারে রানাপ্লাজা ধস হয়ে প্রচুর শ্রমিক নিহত ও পঙ্গু হলেও এখনো তাদেরকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।
আআ / এআর