ঢাকা, সোমবার   ১২ মে ২০২৫,   বৈশাখ ২৮ ১৪৩২

বুশকে জুতা নিক্ষেপকারী সাংবাদিক লড়ছেন ইরাকের নির্বাচনে   

প্রকাশিত : ০৬:২৪ পিএম, ৪ মে ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:৫৭ পিএম, ৪ মে ২০১৮ শুক্রবার

ইরাকী সাংবাদিক মুনতাধার আল জাইদীর কথা মনে আছে? অথবা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের ওপর এক সাংবাদিক জুতা ছুঁড়ে মেরেছিলেন। এই ঘটনাটি মনে আছে? সেই জুতা ছুঁড়ে মারা সাংবাদিক জাইদী এখন ইরাকের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

প্রায় ১০ বছর আগের ঘটনা। ২০০৮ সালে ইরাক সফরে আসেন সেসময়ের মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। রাজধানী বাগদাদে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন বুশ। হঠাত করেই সাংবাদিককের মধ্যে থেকে তাঁর দিকে জুতা ছুঁড়ে মেরেছিলেন এই জাইদী। 

ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে রীতিমত তারকা বনে যান জাইদী। সাধারণ ইরাকী তো বটেই, মার্কিন বিরোধী সবার কাছে প্রতিবাদের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে ইরাকী আদালতে, ১ বছরের সাজা হয় তাঁর। বিদেশী ব্যক্তিকে অপমানের দায়ে শেষ পর্যন্ত ৯ মাস কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছিলেন মুনতাধার আল জাইদী। 

জেল থেকে মুক্তির পর আর সাংবাদিকতা পেশায় ফিরে যাননি জাইদী। গড়ে তোলেন মানবাধিকার সংগঠন। ইরাক যুদ্ধে হতাহতের সাহায্য করে এই সংগঠন। সংগঠনের কারণে ইরাকের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা আরও বাড়তে থাকে জাইদীর।

চলতি মাসের ১২ তারিখ ইরাকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। ২০১৭ সালে আইএস মুক্ত হওয়ার পর ইরাকে এটিই প্রথম সাধারণ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩৯ বছর বয়সী এই সংগঠক।

জেল থেকে বের হওয়ার পর লেবাননের বৈরুতে থাকা জাইদী মাস দুয়েক আগে ইরাকে ফিরে আসেন। প্রচারণা চালাচ্ছেন নির্বাচনের জন্য।

সম্প্রতি এক অনলাইন ভিডিও বার্তায় নিজের নির্বাচনী ইশতেহার সম্পর্কে জানান তিনি। দূর্নীতির বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান জানিয়েছেন জাইদী। এছাড়াও জনগণের টাকায় সরকারি ব্যয় কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। এসময় নিজের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমি আগে যেমন ছিলাম তেমনই আছি। ঠিক যেভাবে আপনারা আগে আমার ওপর ভরসা রেখেছিলেন। শোষিতদের সঙ্গী এবং শাসকদের বিরোধিতাকারী”।

কথা বলেছেন নিজের সেই জুতা নিক্ষেপ করা নিয়েও। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা সিএনএনকে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সাথে আমার কোন সমস্যা নেই। আমার সমস্যা ছিল শুধু জর্জ বুশকে নিয়ে। তিনি অবৈধভাবে আমার দেশ কব্জা করেন। আমার দেশের মানুষদের হত্যা করেছেন তিনি”।

নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর নিজের পরিকল্পনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, “আমি যদি ইরাকের প্রধানমন্ত্রী অথবা প্রেসিডেন্ট হতে পারি তাহলে সবার আগে যে কাজটি করব তা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইরাকীদের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে বলব। এদেশের ধ্বংসযজ্ঞের জন্য বুশকে দায়ী করে নির্যাতিতদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করবো”।

সূত্রঃ সিএনএন

//এস এইচ এস//এসি