ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাস্তবেও আছে ব্যাটম্যানের সেই ‘টাম্বলার’ গাড়ি

প্রকাশিত : ১১:৫৭ পিএম, ১১ মে ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১০:৪৩ এএম, ১৪ মে ২০১৮ সোমবার

‘ব্যাটম্যান: ডার্ক নাইট’ সিরিজের চলচ্চিত্রে তার চমৎকার গাড়িটির কথা মনে আছে না? টাম্বলার নামের সেই যে গাড়িটি যেটি চলার পথে বাঁধা অতিক্রম পারত লাফিয়ে। গথাম সিটির ধনকুবের ব্রুস ওয়েনের সেই গাড়িটি কিন্তু শুধুই ‘সায়েন্স ফিকশন’ বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী না। বাস্তবেও আছে তার অস্তিত্ব।

টাম্বলারের  মতো হুবহু গাড়ি না থাকলেও আছে কাছাকাছি একটি সংস্করণ। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অনেক আবিষ্কারের মতোই এই গাড়িটি পরিকল্পনা হয় সামরিক গবেষণা থেকে। তারই একটি ফিকশন রুপ দেখা যায় ব্যাটম্যান সিনেমাতে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে শুরু হয় এই গাড়ি তৈরি করার পরিকল্পনা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এক ‘আজগুবি’ গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করে। সামনে থাকা বাঁধা লাফিয়ে চলে যাবে এমন গাড়ির চিন্তা আজগুবিই বৈকি! কিন্তু এই আজগুবি চিন্তা বাস্তবায়ন করতেই কাজে নেমে পড়লেন ব্রিটিশ সামরিক গবেষকেরা। তারা এমন একটি গাড়ি নির্মাণ করতে চাইলেন যা শত্রুর নিরাপত্তা বেষ্টনী লাফিয়ে অতিক্রম করতে পারবে। সহজেই ঢুকে পরতে পারবে শত্রু শিবিরে।

গবেষক হ্যাফনার এমন এক গাড়ির নকশাঁও তৈরি করে ফেলেন। গাড়িটির নাম রাখা হয় ‘রোটাবাগী’।

স্পর্শকাতর নকশাঁর এই গাড়িটি তৈরি করা হয় একটি জিপ গাড়ির আদলে। একটি রোটর ব্লেড এবং পিছন দিকে বিশেষ এক নকশাঁ রাখা হয় এটিতে। এটুকুই।

যেহেতু রোটরগুলোতে কোন শক্তির সঞ্চার করা হয়নি সেসময়, তাই মূলত গাড়িটি কোন ধরণের বিমান হওয়ার বদলে একধরনের গিরোকপ্টার হয়ে থেকে যায়। এটিতে একজন চালক বসার আসন ছিল শুধু। একই চালক মাটিতে গাড়িটিকে চালাতো আবার আকাশেও এটিকে ভাসিয়ে রাখত। মূলত ‘গ্লাইডিং’ করে হাওয়ায় ভেসে থাকত গাড়িটি।

গাড়িটির যে সর্বশেষ সংস্করণ আনা হয় সেটি বাতাসে প্রায় মিনিটখানেক ভেসে থাকতে পারত। শত্রুপক্ষের বাঁধা অতিক্রম করার জন্য কিছুটা ‘যথেষ্ট’ ছিল এই সময়। কিন্তু সামরিক ময়দানে যাওয়ার জন্য তখনও প্রস্তুত ছিল না এই আজব গাড়িটি।

তবে যুদ্ধের সেই উত্তাল সময়ে অন্য ধরণের সামরিক যানগুলো তৈরির দিকে বেশি আগ্রহী ছিল সামরিক কর্তারা। তাই ব্যাটম্যানের গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা সেসময় বাদ দেয় ব্রিটিশরা।

ষাট এর দশকে গাড়িটি নিয়ে আবারো কাজ শুরু করে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। এবারে নকশায় পরিবর্তনও আনা হয়। গাড়িটির চারদিকে ১২টি ফ্যান বা পাখা যুক্ত করে নকশাঁ চূড়ান্ত করা হয়। এই ফ্যানগুলোর সাহায্যে গাড়িটিকে শূণ্যে ভাসিয়ে তোলা হবে। বাঁধা অতিক্রম করার সাথে সাথে পাখা বন্ধ করে গাড়িটিকে মাটিতে নিয়ে আসা যেত সেই নকশায়। ঠিক যেমনটা ব্যাটম্যান করতো। তবে গাড়িটিতে ব্যাটম্যানের থেকে রকেটের সংখ্যা ছিল কম।

কিন্তু দুঃখের কথা এই যে, অর্থের অভাবে শেষ পর্যন্ত গাড়িটি নকশাঁর কাগজেই পড়ে থাকে। ব্রুস ওয়েনের মতো কোন ধনকুবের ব্যক্তি বা সংস্থা এই আজগুবি গাড়ি বানাতে অর্থ লগ্নি করতে সাহস করেনি।

সূত্র: বিবিসি

//এস এইচ এস//টিকে