ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কোটা সংস্কার দাবি যৌক্তিক, দ্রুত সুরাহা হওয়া উচিত: ঢাবি ভিসি

প্রকাশিত : ০৬:০৬ পিএম, ১৬ মে ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৯:৫৫ এএম, ২৪ মে ২০১৮ বৃহস্পতিবার

যেকোনো অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করবে, এটাই স্বাভাবিক। আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে। তবে আন্দোলনের জন্য যেন ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত না করে সেদিকে সবার নজর রাখতে হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে একুশে টিভি অনলাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি মনে করেন কোটা সংস্কার দাবি যৌক্তিক। এই দাবির প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমর্থন আছে। দ্রুত এর সমাধান হওয়া উচিত। তার কথায় উঠে এসেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিকতা, শিক্ষার্থীদের দাবির ন্যায্যতা, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানসহ নানা দিক। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান

একুশে টিভি অনলাইন:  সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিতভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। এই আন্দোলনকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

. মো. আখতারুজ্জামান: কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করে যাচ্ছে এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা আছে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে সরকার কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। আশা করি সরকার সঠিক সময় প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

একুশে টিভি অনলাইন: কোটা বাতিলের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণার প্রায় ৩৫ অতিবাহিত হলেও আজও প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করে যাচ্ছে। এভাবে চললে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ব্যাহত হবে। আপনি কি মনে করেন।

. মো. আখতারুজ্জামান : বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আন্দোলনের বেশি ক্ষতি শিক্ষার্থীদের ও তাদের পরিবারের। আন্দোলনের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করছে। এটা শিক্ষার অবশ্যই ক্ষতি হচ্ছে। তাই কোনো আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এর দায়িত্ব সরকার, আমার আপনার সবার। যুগের প্রয়োজনে কোটা সংস্কারের দরকার আছে। শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। তাদের দাবিকে সদয় বিবেচনায় না নিলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। এ বিষয়টির দ্রুত সুরাহা করলে স্বস্তি আসবে। জনগণের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি থাকতে পারে যে, শিক্ষার্থীরা একদিকে আমরা অন্যদিকে। আমরা সব সময়ই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময়ই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থেকেছে। শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী নয়, তারা সংস্কার চায়, আমিও সরকারকে এটা স্পষ্ট করেছি।

একুশে টিভি অললাইন: সম্প্রতি ঢাবি ভিসির বাসভবনে হামলা হয়েছে। হামলা সঙ্গে কারা জড়িত। কি কারণে এই হামলা?

ড. মো. আখতারুজ্জামান : ভিসি ভবনে যে হামলা হয়েছে এই হামলা ও ভাংচুরের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছিল। ইতোমধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশা করি প্রশাসন তাদের বিচারের আওতায় আনবেন।

ইটিভি অনলাইন : আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

ড. আখতারুজ্জামান : ইটিভি পরিবারকেও ধন্যবাদ।

‘‘অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ১৯৬৪ সালের ১ জুলাই বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের কালিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে বিএ অনার্স ও এম এ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপ্লোমা ইন পার্সিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ বিষয়ে পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট সম্পন্ন করেন। ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন কলেজের ফুলব্রাইট স্কলার এবং যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো ছিলেন।

ড. আখতারুজ্জামান ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে  ইসলাম ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের লেকচারার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৫ সালের ১৫ জানুয়ারি সহকারী অধ্যাপক, ২০০০ সালের ২ জানুয়ারি সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০০৪ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কবি জসীমউদ্দীন হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে কলা অনুষদের ডিন নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালের ২৩ জুন থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি ভিসির দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।’’

 

টিআর/ এআর