ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সেহরি না খেয়ে রোজা রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

তামান্না চৌধুরী

প্রকাশিত : ০৪:৩০ পিএম, ১৯ মে ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০৩:০৪ পিএম, ২০ মে ২০১৮ রবিবার

তামান্না চৌধুরী

তামান্না চৌধুরী

রমজানে খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে আমাদের বেশ কিছু ভুল হয়ে থাকে। প্রথমত  ট্রাডিশন বা ঐতিহ্য, দ্বিতীয়ত রসনা বা তৃপ্তি- মনের তৃপ্তি বা জিহবার তৃপ্তি, আর তৃতীয়ত থাকে পুষ্টি।
এসবগুলোর সমন্বয় করেই খাবারের ব্যবস্থাটা করতে হবে। আমরা পুষ্টিবিদরা সাধারণত বলে থাকি, ভাজাপোড়া খাবেন না, পরিমাণ মতো খাবেন ইত্যাদি। কিন্তু আমরাও পছন্দ করি একটা বা দুটো পেঁয়াজু বা বেগুনী থাকবে ইফতারিতে।
এসব বিবেচনায় রোজায় স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবারের বিষয়ে কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হলো-
এক. স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসম্মত খাবার
দুই. বাইরের কেনা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা
তিন. ঘরে তৈরি ভাজা পোড়া খাবারে একটু রকমফের করা যেমন- আজকে যদি বেগুনী থাকে কাল পেঁয়াজু, পরশু আলুর চপ।  ফলে মেন্যুটা বৈচিত্রময় হয় ও একইদিনে  অনেক ভাজা পোড়া খাবার খাওয়া হয় না।
একদিনে অনেক ভাজাপোড়া খাবার থাকলে ইফতারের পর অস্বস্থি বোধ হতে পারে। এসিডিটি হতে পারে। পেটের পাশাপাশি ওজনও বেড়ে যেতে পারে।
একজন পুষ্টিবিদ হিসেবে আমি প্রতি রোজার পর অনেককেই পাই  যাদের হঠাৎ করে কোলস্টেরল বেড়ে গেছে,  ইউরিক এসিড বেড়ে গেছে, এমনকি  কিডনি ক্রিয়েটিনিন ও অনেকের বেড়ে গেছে। তাই সবাইকে এই বিষয় গুলো মাথায় রাখতে হবে। ফল, ফলের জুস, (আমরা যদিও  জুস না খেয়ে ফল খেতে বলি, কিন্ত রমজানে ঘরে তৈরি ফলের জুস খাওয়া যেতে পারে, সেক্ষেত্রে চিনির ব্যবহার না করাই ভালো) চিড়া, দই, মুড়ি, খৈ-অর্থাৎ সহজপাচ্য খাবার যা অ্যাসিডিটি করে না আবার পুষ্টির যোগান দেয়, তা  ইফতারের মেন্যুতে থাকলে ভালো।
নুডলস, ঘরে তৈরি পাস্তা, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি ভালো ইফতার। ঘরে তৈরি মুরগির  হালিম  থেকে অনেক পুষ্টি পাওয়া যায়। আমরা সবসময় দইয়ের কথা বলি এজন্যই যে, দই ভালো প্রোবায়োটিক এবং দই আমাদের  ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে  সাহায্য করে।
রাতের খাবারে আমরা রুটি, সবজি, ডিম, দুধ, চিড়া, ওটস দুধ ইত্যাদি খেতে  পারি।
সেহরি গুরুত্ব দিয়ে খেতে হবে। অনেকে সেহরীতে খাবার না খেয়ে শুধু একগ্লাস পানি খেয়ে রোজা রাখে। এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। এর ফলে রোজা রেখে ক্লান্ত হয়ে যাবেন। পানির পিপাশা বেড়ে যাবে। শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে।
দেখা যাবে, ত্রিশ রোজার মধ্যে দশ- বারো রোজা যাওয়ার পর এতোটাই অসুস্থ হয়ে যাবেন, তখন অন্য রোজা রাখার ক্ষমতা থাকবে না। যেহেতু রোজা সংযম, রোজা ইবাদাত- তাই আমাদের ঐতিহ্যটা ধরে রেখেই আমরা খাওয়া দাওয়া করতে পারি।

লেখক : তামান্না চৌধুরী অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউট্রিশনিষ্টস ও ডায়টিশিয়ানসের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

অনুলেখক: অালী অাদনান

/ এআর /