ঢাকা, রবিবার   ০৫ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২২ ১৪৩১

কর্ণাটকের নির্লজ্জতা ঢাকতে অবশেষে মুখ খুললেন অমিত শাহ

প্রকাশিত : ১২:০৬ পিএম, ২২ মে ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:০৯ পিএম, ২২ মে ২০১৮ মঙ্গলবার

কর্ণাটকে নির্বাচন, সরকার গঠন ও পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া ইয়েদুরাপ্পার পদত্যাগ বিষয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন বিজেপি প্রধান অমিত শাহ। গত শনিবারই কর্ণাটক নির্বাচনের অন্যতম ‘মাস্টার প্ল্যানার’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদগাঢ় করেছেন। দেশব্যপী যখন বিজেপির সরকার গঠনের নির্লজ্জতা নিয়ে হাসাহাসি হচ্ছে, এমন সময় মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিলেন অমিত শাহ। তবে শেষে মমতাকে আক্রমণ করেই মুখ খুলেছেন বিজেপির এই ‘মাস্টার স্ট্র্যাটেজিস্ট’।

দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ডেকে অমিত শাহ কংগ্রেসকে তীব্র কটাক্ষো তো করলেনই সঙ্গে কর্ণাটকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করতে পারবেন, তুললেন সে প্রশ্নও তোলেন।

যে রকম মেজাজে সোমবার অমিত শাহকে দেখা গিয়েছে, মিডিয়ার সঙ্গে আলাপচারিতায় অমিত শাহকে ততটা হাসিখুশি খুব একটা দেখা যায় না। শুধু কর্ণাটক নিয়ে কথা বলার জন্যই এ দিন বিজেপি সদর দফতরে এই সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘কর্ণাটকে কোনও দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল বিজেপি-ই। সেই জন্যই বিজেপি সরকার গড়ার চেষ্টা করেছিল। বিজেপি-র সরকার গঠনের চেষ্টা কোনও ভাবেই ভুল ছিল না।’’

কংগ্রেস এবং জেডি(এস) জনমতের বিরুদ্ধে কাজ করছে বলে অমিত শাহ এ দিন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি ১০৪টি আসন পেয়েছে। ১০৪ আসন কোনও কম কথা নয়।’’ বিজেপি এবং জেডি(এস)-এর মধ্যে তুলনা টেনে অমিত শাহ দাবি করেন, ৬টি আসনে বিজেপি প্রার্থীরা নোটার চেয়েও কম ভোটে হেরেছেন। উল্টো দিকে, অনেক আসনে জেডি(এস) প্রার্থীদের জামানত জব্দ হয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানান। যে দু’টি দলের আসন এবং ভোট কমে গিয়েছে, সেই দুই দল হাত মিলিয়ে যে ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সবচেয়ে কাছে থাকা দলকে রুখে দিল, তাকে অনৈতিক আখ্যা দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি।

ঘোড়া কেনাবেচার মাধ্যমে সরকার গড়ার পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি— এমন অভিযোগ বার বার করছে কংগ্রেস। সে অভিযোগ নস্যাৎ করে মোদীর সেনাপতি এ দিন তীব্র কটাক্ষ করেন কংগ্রেসকে। বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ঘোড়া কেনাবেচার মিথ্যা অভিযোগ আনছে। কিন্তু কংগ্রেস নিজে তো গোটা আস্তাবল বেচে খেয়েছে।’’ কেন নিজের দলের বিধায়কদের পাঁচতারা হোটেলে ‘বন্দি’ রেখেছিল কংগ্রেস? প্রশ্ন তোলেন অমিত। ‘‘যদি বিধায়কদের হোটেলে বন্দি রাখা না হত, যদি তাঁদের বাইরে থাকতে দেওয়া হত, যদি তাঁরা নিজেদের বিধানসভা কেন্দ্রে যেতে পারতেন, তা হলে জনগণই তাঁদের বলে দিতেন, কোন দিকে ভোট দিতে হবে।’’ মন্তব্য বিজেপি সভাপতির।

কর্ণাটক মডেল অনুসরণ করে বিভিন্ন বিরোধী দল বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে যাবে এ বার? ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কি সম্মিলিত বিরোধী পক্ষের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে? প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বিজেপি সভাপতিকে। কিন্তু অমিত শাহ বোঝানোর চেষ্টা করেন, বিরোধী জোটের সম্ভাবনা নিয়ে তাঁরা ভাবিত নন। বলেন, ‘‘মমতাজি কর্ণাটকের নির্বাচনে কী করতে পারবেন? অখিলেশজি মধ্যপ্রদেশে কী করতে পারবেন? রাহুলজি বাংলার নির্বাচনে কী করতে পারবেন? ২০১৪ সালেও এই দলগুলো আমাদের বিরুদ্ধেই ছিল। তা সত্ত্বেও আমরা জিতেছিলাম। ২০১৯ সালেও বিজেপি-ই জিতবে।’’

কংগ্রেস অবশ্য জবাব দিতে দেরি করেনি। অমিত শাহের সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হতেই কংগ্রেস সদর দফতরে মিডিয়ার মুখোমুখি হন আনন্দ শর্মা। বিজেপির বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ করেন। কংগ্রেস বিধায়কদের উপর প্রবল চাপ তৈরি করা হচ্ছিল বলে আনন্দ শর্মা দাবি করেন। কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি কর্ণাটকের নির্বাচনে লড়েছে বলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে এ দিন।

সূত্র: আনন্দ বাজার
এমজে/

কর্নাটকে বিজেপি রুখতে কি মন্ত্র দিলেন মমতা?