ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫,   পৌষ ২ ১৪৩২

মানবিক নেতৃত্ব, বৈশ্বিক দৃষ্টি ও বাংলাদেশের সম্ভাবনার আন্তর্জাতিক প্রতিচ্ছবি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৪৩ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:৪৫ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার

দেশ ও প্রবাসে বহুমুখী মানবিক উদ্যোগ, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং উন্নয়নভিত্তিক রাজনৈতিক দর্শনের মাধ্যমে কাজ করছেন ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ কবীর আহমেদ ভূঁইয়া। মানবিক মূল্যবোধ, বৈশ্বিক সংযোগ এবং কৌশলগত উন্নয়ন-দৃষ্টিভঙ্গিকে একত্রিত করে কাজ করে যাচ্ছেন এই  ব্যবসায়ী। তার কাজ কেবল একটি জেলার নয়, বরং একটি সম্ভাবনাময় জাতীয় নেতৃত্বের রূপরেখা উপস্থাপন করছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে  জেলা বিএনপি এবং এর ১৪টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ ও গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলীয় রাজনীতিতে তার ভূমিকা বিভাজন নয়, বরং সংগঠন, অংশগ্রহণ এবং ভবিষ্যৎমুখী ঐক্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত।

কোভিড-১৯ মহামারিতে মানবিক নেতৃত্ব
২০২০ সালের বৈশ্বিক কোভিড-১৯ সংকটের সময়, যখন বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম এবং সাধারণ মানুষ গভীর অনিশ্চয়তায় নিমজ্জিত, তখন কবীর আহমেদ ভূঁইয়া মানবিক নেতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

তিনি চিকিৎসা সহায়তা, খাদ্যসামগ্রী, পিপিই, মাস্ক ও অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম বিতরণে নেতৃত্ব দেন শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা এবং আন্তর্জাতিক পরিসরেও। এই মানবিক উদ্যোগের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আসে এক ব্যতিক্রমী ঘটনায়। নাইজেরিয়ার ওইও স্টেটের তৎকালীন গভর্নর, সিনেটর আবিওলা আজিমোবি করোনায় আক্রান্ত হলে নাইজেরিয়া সরকার সরাসরি আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়ার সহায়তা প্রার্থনা করে। বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত একটি বিশেষ করোনা প্রতিরোধী ইনজেকশন সরবরাহের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয় এবং স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, এই সহায়তা যেন তার মাধ্যমেই পৌঁছায়। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিশ্বব্যাপী আকাশপথ বন্ধ থাকার মধ্যেও নাইজেরিয়া থেকে একটি বিশেষ বিমান বাংলাদেশে এসে তার কাছ থেকে ওষুধ ও সীমিত পরিমাণ সুরক্ষা সামগ্রী সংগ্রহ করে। এই ঘটনা কেবল ব্যক্তিগত আস্থার নয়, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একজন বাংলাদেশির মানবিক নেতৃত্বের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি— যা জাতির জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।

বৈশ্বিক পানি সুরক্ষায় নেতৃত্ব: ‘ব্লু গোল্ড’ ভিশন

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান পানিসংকট কবীর আহমেদ ভূঁইয়ার চিন্তাজগতের অন্যতম কেন্দ্রীয় বিষয়। তিনি বিশ্বাস করেন, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মিঠা পানির ভাণ্ডারসমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ‘ব্লু গোল্ড ইকোনমি’র নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। আন্তর্জাতিক ফোরাম ও নীতিনির্ধারণী আলোচনায় তিনি বোতলজাত পানি রপ্তানি, পানি কূটনীতি, জলবায়ু সহনশীল পানি অবকাঠামো এবং আন্তঃদেশীয় পানি ব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগের সুস্পষ্ট নীতি-প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছেন। তার দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, বাংলাদেশ কেবল পানিসংকটে ভুক্তভোগী দেশ নয়, সঠিক পরিকল্পনা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এটি বৈশ্বিক পানি সমস্যার সমাধানদাতা হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

বায়ুদূষণ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক উদ্যোগ
পানি সুরক্ষার পাশাপাশি তিনি বায়ুদূষণ রোধ এবং পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতার সীমাবদ্ধতা, নগরাঞ্চলে পরিকল্পিত সবুজায়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিস্তারে তিনি আন্তর্জাতিক গবেষক, পরিবেশবাদী সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। তার অবস্থান স্পষ্ট, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও পরিবেশ সুরক্ষা পরস্পরবিরোধী নয়; বরং সঠিক নীতিতে এগুলো পরস্পর-সম্পূরক।

রাজনৈতিক নির্যাতন ও অদম্য প্রত্যয়
মানবিক কাজ, সংগঠক হিসেবে প্রভাব এবং জনপ্রিয়তার কারণেই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি রাজনৈতিক নির্যাতনের শিকার হন। তাকে এবং তার ব্যক্তিগত সহকারী আজাদকে গুম করা হয়। দেশব্যাপী দলীয় প্রতিবাদ এবং সাংবাদিকদের বলিষ্ঠ লেখনীর চাপে সরকার শেষ পর্যন্ত তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। সেই নির্যাতনের শারীরিক ও মানসিক অভিঘাতে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তার হৃদপিণ্ডের দুটি ধমনীতে রিং প্রতিস্থাপন করতে হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু এই নির্যাতন তাকে থামাতে পারেনি, বরং তার প্রত্যয় আরও দৃঢ় হয়েছে।

বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ও বিনিয়োগভিত্তিক উন্নয়ন দর্শন
কবীর আহমেদ ভূঁইয়ার শক্তির অন্যতম ভিত্তি তার বিস্তৃত বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক। আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতা, বিনিয়োগকারী, ব্যবসায়ী এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। এই নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে তিনি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে কাজ করছেন। তিনি ভূঁইয়া গ্লোবাল ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, যার মাধ্যমে দেশ-বিদেশে সামাজিক উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিস্তৃত গার্মেন্টস, রিয়েল এস্টেট, আইটি, আমদানি-রপ্তানি ও উন্নয়ন পরামর্শ খাতে। তার প্রতিষ্ঠান ‘গেলেন্স’ বিশ্বজুড়ে সরকার ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যৌথভাবে সমস্যা সমাধান ও খাতভিত্তিক উন্নয়নে কাজ করে।

জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরের কৌশল
তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ও পানি সমস্যা সঠিক পরিকল্পনায় বোঝা নয়, বরং শক্তিতে রূপান্তর করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই তিনি কারিগরি শিক্ষা, ভাষা শিক্ষা, বিদেশগামী কর্মীদের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের আইন ও কর্মসংস্কৃতি শিক্ষা এবং বিদেশে বাংলাদেশি শ্রমবাজার সম্প্রসারণে কাজ করছেন। একই সঙ্গে তিনি ঢাকা ও অন্যান্য যানজটপীড়িত শহরে কেবল কার নেটওয়ার্ক চালুর মাধ্যমে কর্মঘণ্টা সাশ্রয় ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছেন। যুবসমাজকে মাদকমুক্ত, কর্মমুখী ও উদ্যোক্তামুখী করতে লাভজনক ও টেকসই প্রকল্প উন্নয়ন তার কাজের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অধিকার রক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠাতেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছেন।

বাংলাদেশের জন্য এক জাতীয় সম্পদ
কবীর আহমেদ ভূঁইয়া সেই প্রজন্মের নেতৃত্বের প্রতিনিধি, যারা দেশীয় রাজনীতিকে বৈশ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে সংযুক্ত করতে সক্ষম। মানবিক নেতৃত্ব, আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ এবং উন্নয়নভিত্তিক রাজনৈতিক দর্শনের সমন্বয়ে তিনি একটি সমৃদ্ধ, আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশের রূপরেখা উপস্থাপন করছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেলে এটি কেবল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসন (কসবা-আখাউড়া) বা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনামই বাড়াবে না; বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের জন্য একটি কৌশলগত সম্পদে পরিণত হবে। আজকের বিশ্বে রাজনীতি আর কেবল ভৌগোলিক সীমানায় আবদ্ধ নয়, আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব, মানবিক গ্রহণযোগ্যতা ও বৈশ্বিক অংশগ্রহণই আধুনিক রাজনীতিকের নতুন পরিচয়পত্র। সেই বিচারে আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া এক উজ্জ্বল মডেল, যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও বিএনপি, উভয়ের সম্ভাবনাই বহু গুণে বিস্তৃত হতে পারে।