ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪,   বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্যান্সারে আক্রান্ত মেডিকেল ছাত্রীর খোলা চিঠি

প্রকাশিত : ০৫:২৭ পিএম, ২৪ মে ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৭:৫০ পিএম, ২৫ মে ২০১৮ শুক্রবার

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না,ও বন্ধু, একটি বিখ্যাত গানের লাইন। অসহায় মানুষগুলো এই সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচতে চায়। একটু সহানুভূতি পেতে চায়। মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষার্থী নিজের জীবন বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বরাবরই অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। সেই আশায় এই মেয়েটিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি লেখেছেন। তার সেই চিঠিটি একুশে টেলিভিশন অনলাইনে তুলে ধরা হলো-

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী!

আজ না পেরে বাধ্য হয়ে আপনার কাছে খোলা চিঠি লিখছি।

আমি জানিনা, ঠিক কোন ঠিকানায় আর কোন ফোন নাম্বারে আমি আপনাকে খুঁজে পাবো। তাই খোলা চিঠি লিখে দিলাম, কেউ যদি দয়া করে আমার এই আহাজারি আপনার নিকট পৌঁছায়।

আমার বয়স ২৩। আমি একজন ফাইনাল ইয়ারের মেডিকেল ছাত্রী। আজ আড়াই মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছি! আমার একিউট মায়েলোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া বা এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার যা মধ্যম পর্যায়ে ধরা পড়ে। এখন আমাদের দেশের বিভিন্ন অভিজ্ঞ ও স্বনামধন্য ডাক্তাররা আমাকে বলেছেন, হাতে বেশি সময় নেই। আমাকে দ্রুততম সময়ে অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্ল্যান্টে যেতে হবে যা বাংলাদেশে এখনো শুরু হয়নি এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে যার উন্নত চিকিৎসা রয়েছে কিন্তু অত্যন্ত ব্যয়বহুল (৮০ লাখ টাকা) যা আমার মধ্যবিত্ত বাবা মায়ের পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব নয়।

কেমো নিয়ে নিয়ে আমরা সর্বশান্ত। আরও যত দেরী হবে ততই কেমো খরচ এবং আমার মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে। আমার জীবনের শুরুতেই আজ মেঘের অন্ধকার নেমে এসেছে। হায়াত আল্লাহর হাতে তবু চেষ্টা করে দেখতে যদি পারতাম! যদি আমার চিকিৎসাটা হত! যদি আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পারতাম! আপনি তো কত অসহায়ের পাশে ছিলেন, কত পিতামাতা হারা সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছেন, আমিও এই দেশের এবং আপনারই সন্তান তবে কেন আমাকে বুকে টেনে নেবেন না, এই দিনে?

আমি মানি, আমি বিখ্যাত সাবিনা ইয়াসমীন না, আমি ছোটখাটো একজন মেডিকেল ছাত্রী। তাই বলে কি আমার জীবনের কোন মূল্যই নেই? বেঁচে থাকলে দেশের জন্য আমি কি কিছুই করতে পারতাম না? আমিও তো মেডিকেল কমিউনিটিরই একজন। প্রতি মুহূর্তে আমি মৃত্যুর প্রহর গুণছি। এক একদিন সময় আমার জীবনের প্রদীপ নিভিয়ে দিচ্ছে ধীরে ধীরে।

দেশমাতা, আপনি কী এই অসহায় মেয়েটির বেঁচে থাকার এই যুদ্ধে শামিল হবেন?

জারিন তাসনিম রাফা।
আদ-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজ।

এসএইচ/