গর্ভপাতকে ‘বৈধ’ করে ইতিহাস গড়ল আয়ারল্যান্ড
প্রকাশিত : ০৩:১২ পিএম, ২৭ মে ২০১৮ রবিবার
প্রসূতির প্রাণ সংশয় থাকলেও, গর্ভপাত করা যাবে না। শতাব্দীপ্রাচীন আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভোট দিলেন আয়ারল্যান্ডের মানুষ। গর্ভপাতকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে সমর্থন করেছেন ৭০ শতাংশ মানুষ। আইরিশ টাইমসের বুথে সমীক্ষায় অন্তত তেমনটাই জানা গেছে। আর বাকি ৩০ শতাংশ মানুষের মত, গর্ভপাত আইনি স্বীকৃতি পেলে ভ্রূণহত্যার মতো ঘটনা বাড়বে।
আয়ারল্যান্ডের এই গণভোটে অংশ নিয়েছেন প্রায় ৩১ লক্ষ মানুষ। শুক্রবার ভোটগ্রহণের পর শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা।
ভারতীয় বংশোম্ভূত আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকর বলেছেন, ‘আয়ারল্যান্ডের মানুষ ইতিহাস গড়তে চলেছেন। তাই দেশবাসীকে অভিনন্দন না জানিয়ে পারছি না। তবে খোদ প্রধানমন্ত্রী আশাবাদী হলেও, গর্ভপাতকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে এখনই প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ বিরোধীরা।
২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের কড়া গর্ভপাত বিরোধী আইনের গেরোয় অকালে প্রাণ গিয়েছিল সবিতা হলপ্পনাবার নামে ৩১ বছর বয়সী এক তরুণীর। তিনি নিজেও চিকিৎসক ছিলেন। শারীরিক জটিলতার কারণে ১৭ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্বা সবিতার গর্ভপাতের অনুরোধ করেছিলেন পরিবারের লোকেরা। ক্যাথলিক দেশটিতে গর্ভস্থ ভ্রুণ যদি বেঁচে থাকে, তাহলে গর্ভপাত করা আইনবিরুদ্ধ। শেষপর্যন্ত মারা যান ওই ভারতীয় বংশোম্ভূত চিকিৎসক।
১৯৮৩ সালে আয়ারল্যান্ডের সংবিধান সংশোধন করা হয়। সংশোধিত সংবিধানে মা ও গর্ভস্থ শিশু দু’জনেরই বাঁচার সমান অধিকার স্বীকৃতি পেয়েছে। গর্ভপাতের শাস্তি ১৪ বছরের জেল ও জরিমানা। আয়ারল্যান্ডে ধর্ষণের গর্ভবতী হলে তো প্রশ্নই নেই, শিশু ও প্রসূতির শারীরিক জটিলতার কারণেও গর্ভপাত করা যায় না। কিন্তু সবিতা হলপ্পনাবার মৃত্যুর পরই পরিস্থিতি বদলে গেছে। গর্ভপাতকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তুলেছেন সাধারণ আইরিশ নাগরিকরা। শুক্রবারও সেদেশে রাস্তার মোড়ে মো়ড়ে সবিতার ছবি দেওয়া পোস্টার চোখে পড়েছে। নিচে ক্যাপশন, ‘মেয়েদের জন্য গর্ভপাত, সবিতার জন্য গর্ভপাত।’ বস্তুত, গর্ভপাতকে আইনি স্বীকৃতির প্রশ্নে গণভোটে কী ফল হয়, তা জানতে বিদেশ থেকে দেশের ফিরেছেন আয়ারল্যান্ডের বহু নাগরিক।
বছর তিনেক আগে গণভোটেই আয়ারল্যান্ডে সমলিঙ্গ বিবাহ আইনি স্বীকৃতি পেয়েছিল। ব্রিটেনের মহিলা এবং সমানাধিকার সংক্রান্ত মন্ত্রী পেনি মর্ডান্ট টুইটারে লিখেছেন, ‘বুথ ফেরত সমীক্ষা সত্য প্রমাণিত হলে আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে সত্যিই একটা বড়দিন।‘
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
একে//