ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রোজায় হৃদরোগীদের খানাপিনা

অধ্যাপক ডা. বিল্লাল আলম

প্রকাশিত : ০১:১৮ পিএম, ২৮ মে ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ১২:১৩ এএম, ২৯ মে ২০১৮ মঙ্গলবার

রোজা রাখলে যাদের হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশী আছে, তারা রোজা রাখবেন কি না এনিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে।

সাম্প্রতিক নির্ভরযোগ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, যদি অন্য কোনো ঝুঁকি উপাদান না থাকলে, শুধুমাত্র রোজা থাকার কারণে কারও সহসা হৃদরোগে (হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক কিংবা হার্ট ফেইলিউর ইত্যাদি) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিছু কিছু পর্যবেক্ষণে অন্য রকম ফলাফলও এসেছে।

যাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে, তারা নির্বিঘ্নেই রোজা থাকতে পারেন। তবে ওষুধের সময় এবং মাত্রা পরিবর্তনের প্রয়োজন থাকলে রমজানের পূর্বেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সাধারণত রমজানের সময় এমন ওষুধ সেবন করা উচিত যা দিনে একবার কিংবা দুইবার গ্রহণ করলেই চলে।
উচ্চ রক্তচাপের জন্য যারা ডাইউরেটিক জাতীয় ওষুধ সেবন করছেন, তাদের এটা বদলে নেওয়া উত্তম।

বিশেষত গ্রীষ্মকালের রোজার সময় ডাইউরেটিক জাতীয় ওষুধ শরীরে পানি ও লবণশূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে। আর মনে রাখতে হবে যে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের খাবারে কম লবণ এবং কম পরিমাণ চর্বি থাকা ভাল। যারা রক্ত তরল রাখার ওষুধ সেবন করেন ( যেমন- warfarin), রোজা রাখলে তাদের কোন সমস্যা হয় না।
কিন্তু যাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই, যাদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, অনিয়ন্ত্রিত হার্ট ফেইলিউর, কিংবা সদ্য হার্টের অপারেশন হয়েছে, তাদের রোজা পরিহার করা উত্তম। এজন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

কোলেস্টেরলের ওপর রোজার প্রভাব সম্পর্কে আসলে সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাওয়া যায়নি। কিছু কিছু গবেষণায় দেখা যায় রোযা থাকার পরে টোটাল কোলেস্টেরল এবং এলডিএল কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমেছে। আবার অন্য কিছু পর্যবেক্ষণে তেমন কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি। আসলে ইফতার এবং সেহরিতে কেমন খাদ্য গ্রহণ করা হচ্ছে, তার ওপরেও এটা অনেকাংশে নির্ভর করে।

খানাপিনা : বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই ইফতার এবং সেহরির জন্য অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত, মিষ্টি এবং মশলাদার খাবার পছন্দ করে থাকেন। এধরণের খাবার আসলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশী কিংবা সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই কম চর্বিযুক্ত (কম সম্পৃক্ত চর্বি এবং ট্রান্স ফ্যাট) খাবার খেতে হবে।

যারা রোজা শুরুর আগে থেকেই কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ সেবন করছেন, তাদের তা অব্যাহত রাখতে হবে। তবে রোজার সময় নতুন কোন কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ সেবন শুরু না করাই ভাল।

লেখক : অধ্যাপক স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
/ এআর /