ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৩ মে ২০২৫,   বৈশাখ ৩০ ১৪৩২

সরকার চাইলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন : খন্দকার মাহবুব

প্রকাশিত : ০৩:২৯ পিএম, ২৮ মে ২০১৮ সোমবার

কুমিল্লায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছয় মাসের জামিন পেয়েছেন। তবে একই দিন আদেশের জন্য রাখা নড়াইলের মানহানির মামলাটির জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। কুমিল্লার দুই মামলায় খালেদা জিয়া জামিন পেলেও এই দুই মামলার বিরুদ্ধে আজই আপিলের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন মনে করেন, কুমিল্লার দুটি মামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় জামিন হওয়ার পর অন্য মামলাগুলো সবই জামিনযোগ্য। এগুলো বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টে উত্থাপন করলেই জামিন পাওয়া যাবে। মূলত সরকারের সদিচ্ছাই এখানেই যথেষ্ট। সরকার যদি মনে করে, তাহলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন।

শুনানিতে অংশ নিয়ে এই আইনজীবী আরও বলেন, কুমিল্লার দুটি মামলায় ছয় মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে। আর নড়াইলের মামলাটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, জজকোর্টের আদেশ শেষ না হওয়ার আগে হাইকোর্টে আসা ঠিক হয়নি। তবে আমরা আইনের ব্যাখ্যায় বলেছি, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী জজকোর্ট ছাড়াও হাইকোর্ট আদেশ দিতে পারেন এবং এ সংক্রান্ত একটি মামলায় আপিল বিভাগের রায় রয়েছে।

কুমিল্লার দুটি মামলায় জামিন পেলে সরকার খালেদা জিয়াকে নতুন কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখাবে না বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের উল্লেখ করেন খন্দকার মাহবুব। তিনি বলেন, এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা কতটুকু গ্রহণযোগ্য, সেটাই দেখার বিষয়।

খালেদা জিয়া আর কয়টি মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন জানতে চাইলে তাঁর আইনজীবী বলেন, নড়াইলেরটিসহ আর চারটি মামলায় খালেদা জিয়া গ্রেফতার রয়েছেন। তবে এখানে সঠিক তথ্য বলা যাবে না। কেননা সরকারই ভালো বলতে পারবে। আমরা দৃশ্যমান মামলাগুলোর জামিন করিয়েছি। সরকার আবার নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখায়।

খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল আছে। একইসঙ্গে আজ  (সোমবার) কুমিল্লার দুই মামলায় তিনি ছয় মাসের জামিন পেয়েছেন। এ মুহূর্তে তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট বা প্রোডাকশন অ্যারেস্ট না থাকায় তার মুক্তিতে বাধা নেই।

তিনি আরও বলেন, আজকের আদেশের (কুমিল্লার দুই মামলায় জামিন) পর খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আইনগত বাধা নেই। তবে এরপরও সরকারের যদি অসৎ উদ্দেশ্য থাকে এবং অন্য কোনও মামলায় অ্যারেস্ট দেখালে, তার জামিনে মুক্তি আবারও আটকে যাবে।

বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার আরও দুটি মামলায় জামিন আবেদন হাইকোর্টে শুনানির জন্য রয়েছে। কিন্তু ওই দুই মামলায় তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়নি। তার বিরুদ্ধে এক মামলায় গ্রেফতার ও কুমিল্লার দুই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো ছিল। তাই এই তিন মামলায় জামিন থাকায় তার মুক্তিতে আইনগত বাধা নেই।

তিনি আরও বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিননামা (বেইল বন্ড) দেওয়া আছে। এখন কুমিল্লার মামলায় হাইকোর্টের লিখিত আদেশ পেলেই জামিননামা দেওয়া হবে। এরপর স্বাভাবিক নিয়মে তার মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার কোনও কূটকৌশল করে যদি অন্য মামলায় তাকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখায়, তবে তার জামিন প্রক্রিয়া আটকে যাবে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। ওইদিনই তাকে পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়।
/ এআর /