ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

হার্ট ফেইলিওর এড়াতে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন লবণ

প্রকাশিত : ০১:৪৭ পিএম, ১৪ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০১:৫৭ পিএম, ১৪ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার

হার্ট ফেলিওর মানেই হৃৎপিন্ড থেমে যাওয়া, বেশির ভাগ মানুষেরই এই ধারণা। আর এটাও তারা মানেন যে, হার্ট অ্যাটাক আর হার্ট ফেলিওর ব্যাপারটা ‘এক’। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, এই দু’টি সমস্যা সম্পুর্ণ আলাদা।

নানা কারণে হৃৎপিণ্ডের পেশি দুর্বল হয়ে গিয়ে পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে রক্ত চলাচল ব্যহত হয়, অক্সিজেনের ঘাটতিতে শুরু হয় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। এটাই হার্ট ফেলিওর। ডাক্তাররা হার্ট ফেলিওরকে ‘অসুখ’ না বলে, বলেন ‘সিনড্রোম’।

অন্য দিকে হার্ট অ্যাটাক ব্যাপারটা অন্য রকম। হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহী ধমনিতে চর্বির প্রলেপ জমে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে  গেলে হার্টের পেশি অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকতে শুরু করে। দ্রুত চিকিৎসা না করালে হৃৎপিণ্ডের পেশির কিছু অংশ ধ্বংসপ্রাপ্ত যায়। তবে হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে হার্ট ফেলিওরের একটা সম্পর্ক আছে। এক দিকে যেমন কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ (অর্থাৎ হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহী ধমনিতে চর্বি জমে হার্টের রক্ত চলাচল কমে যাওয়া) বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হার্ট ফেলিওরের মতো সমস্যাও।

বিশ্বের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ হার্ট ফেলিওর নিয়ে দিন যাপনের গ্লানি বয়ে বেড়াচ্ছেন। হার্ট ফেলিওর শুধু আমাদের দেশেই নয়, সব দেশের চিকিৎসকদের মাথা ব্যথার কারণ। মানুষের গড় আয়ু যেমন বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হার্ট ফেলিওরের ঘটনাও কিন্তু মহামারীর আকার নিচ্ছে। তবে শুরুতে অত্যাধুনিক চিকিৎসার সাহায্য নিয়ে এবং দৈনিক জীবনযাত্রায় কিছুটা পরিবর্তন আনলে ভাল থাকা যায়।

আগেকার দিনে দাদী-নানীরা বলতেন, লবণ খেলে নাকি গায়ের রক্ত পানি হয়ে যায়। ভাষাটা একটু গোলমেলে হলেও কথাটা যথেষ্ট যুক্তি সঙ্গত। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লবণে থাকা সোডিয়াম হার্ট ফেলিওরের সমস্যা জটিল থেকে জটিলতর করে তোলে। সোডিয়াম ক্লোরাইড অর্থাৎ লবণ ছাড়া খাবার খাওয়া মুশকিল। কিন্তু লবণের বাড়তি সোডিয়াম হার্ট ফেলিওর বা হাই ব্লাডপ্রেশারের সমস্যাকে উত্তরোত্তর বেড়ে যায়। কেননা, লবণের সোডিয়াম রক্তবাহী ধমনিতে পানির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলস্বরূপ আর্টারিতে বাড়তি চাপ পড়ে। ফলে এক দিকে ব্লাড প্রেশার বেড়ে যায়, অন্যদিকে হৃৎপিণ্ডের পেশি বাড়তি চাপের ফলে আরও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই অন্যান্য নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি লবণ খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে। ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোশিয়েশন’-এর গাইড লাইন অনুযায়ী, যাদের প্রেশার ও হার্টের সমস্যা আছে তারা দিনে ২.৩ গ্রামের বেশি লবণ খাবেন না। নিত্য ডায়েটে থাকুক পর্যাপ্ত ফল ও সবজি। হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রেখে সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন।

সূত্র: আনন্দবাজার

একে//