ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সরকারি প্রতিষ্ঠানকে হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে বলা হয় : জব্বার

প্রকাশিত : ১১:৩৬ পিএম, ৯ জুলাই ২০১৮ সোমবার | আপডেট: ১১:৩৯ পিএম, ৯ জুলাই ২০১৮ সোমবার

রাষ্ট্র মালিকানাধীন সরকারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে হাত পা বেঁধে বাজারে সাঁতার কাঁটতে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন আভ্যন্তরীণ জটিলতা এবং নিয়মকানুনের বিধিনিষেধে এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা বেশ কঠিন। এমনটাই বলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে মোবাইল ভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান বিকাশের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী জব্বার। বিকাশের ‘পে বিল’ নামক একটি নতুন সেবা কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সরকারি মালিকানার প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব প্রতিষ্ঠানের গভীরে গিয়ে দেখতে হয়েছে আমাকে। যা দেখলাম তা হলো সরকারি প্রতিষ্ঠানকে হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে বলা হয়। সরকারি নিয়মকানুন মেনে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান চালালে তা যে কতো কঠিন তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি”।

এসময় তার সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকাধানীন মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিনও একমত বলে উল্লেখ করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, “এসব প্রতিষ্ঠান চালানো যে কী কঠিন তা আমার মতোই উনিও (সাহাব উদ্দীন) প্রতিদিন অফিসে গিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পান”।

দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টিএসএস) একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল উল্লেখ করে তিনি জানান, টিএসএস এখন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এসময় ব্যক্তি মালিকানাধীন যেসব মোবাইল অপারেটর আছে তার সঙ্গে বাজারে টেলিটককে বেশ কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয় বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী জব্বার। ব্যক্তি মালিকানার মোবাইল ফোন অপারেটরের থেকে টেলিটকের মূলধন কম থাকায় তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টেলিটক পেরে উঠতে পারছে না বলে জানান তিনি।

বিনিয়োগের পার্থক্যের একটি উদাহরণ দিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “অন্যান্য অপারেটরের যত বিনিয়োগ, যত মূলধন তা আমার টেলিটকের নেই। জিপি যদি ৪০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ পায় সেখানে টেলিটক বিনিয়োগ পায় চার হাজার কোটি টাকা। একারণেই এখনও দেশের অনেক জায়গায় অন্য অপারেটরের থেকে আমাদের নেটওয়ার্ক দুর্বল; এমন অভিযোগ শুনতে হয়”।

তবে সব বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে টিএসএস এবং টেলিটক লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেন তিনি।

বিকাশ আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “এই বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরু নাগাদ দেশের সব ইউনিয়ন ফাইবার অপটিক্স কানেকটিভিটির আওতায় আসবে। আর ইন্টারনেটের প্রসারে এবং দেশের জনগণের কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা খুচরা পর্যায়ে সবধরনের ইন্টারনেট সেবার ওপর ১০ শতাংশ ভ্যাট কমিয়েছি। আগে এটা ১৫ শতাংশ ছিল। এখন পাঁচ শতাংশ”।

তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মোবাইল ফোন অপারেটররা খুচরা পর্যায়ে ইন্টারনেট প্যাকেজের মূল্য কমাবেন না এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মোস্তাফা জব্বারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “আমি ভ্যাট কমিয়েছি। সব প্রতিষ্ঠানকে তা চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। এর প্রেক্ষিতে কারও কিছু বলার থাকলে আমরা শুনব। তবে মন্ত্রী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে ভ্যাট কমবে। তাই ইন্টারনেটের মূল্যও কমাতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান মূল্য না কমায় তাহলে আমরা দেখব। আইনানুগ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।

//এসএইচএস// এসএইচ/