ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যেতে চাইলে ভাষাগত দক্ষতা থাকা জরুরি: শফিকুল

প্রকাশিত : ০৬:৩৫ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ১২:০৮ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৮ সোমবার

শফিকুল ইসলাম

শফিকুল ইসলাম

হালের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখন অনেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী। বিদেশের বহু দেশে আগের তুলনায় এখন অনেকের ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগও তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর বেশ কিছু নাম করা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে স্কলারশিপে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশের তরুণরা।

আগ্রহ থাকলে আপনিও এই সুযোগ নিতে পারেন। সেজন্য প্রস্তুতিটা হতে হবে গুছানো। এমনটাই মনে করেন গ্লোবাল স্টাডি কনসালট্যান্সির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম জীবন। সম্প্রতি একুশে টিভি অনলাইনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকার তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাতকার নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান। তার কথায় উঠে এসেছে স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়তে যাওয়ার বিভিন্ন দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ।

একুশে টিভি অললাইন : একজন শিক্ষার্থী বিদেশ পড়তে যেতে চাইলে কোন কোন বিষয় প্রস্তুতি নিতে হবে ?  

শফিকুল ইসলাম : অনেক বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে যে শিক্ষার্থী বিদেশ যেতে ইচ্ছুক তার পরিবারের সার্মথ্য আছে কি না সেটি দেখতে হবে। পরিবার তাকে কি ধরনের সহযোগিতা করতে পারবে সেটা মাথায় রাখতে। পড়ালেখা করতে টাকা পয়সা দিয়ে কি ধরনের সহযোগিতা করতে পারবে সেটার চিন্তা আগে মাথায় রাখতে হবে। এরপর কোন দেশ যেতে চান সেদেশের ভাষা শিখে নিতে হবে। এজন্য নিজেকে আগে থেকেই প্রস্তুত করতে হবে। যেদেশে যান না কেন আগে আপনাকে ইংরেজিতে ভাল দক্ষ হতে হবে। এজন্য বিভিন্ন কোচিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদি  কোর্স করতে পারেন।

নিজের পড়াশুনার পাশাপাশি নিজেকে  প্রস্তুত করতে পারলে অনেক ভাল হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপর্ণ কাজ হলো কোন দেশে যাবে শিক্ষার্থীরা সে বিষয় আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের দেশের অনেক শিক্ষার্থী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কোন দেশে যাবে এবং কোন বিষয় পড়াশুনা করব। যে কারণে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। আজকে হয়তো কানাডা যাওয়া চেষ্টা করছেন কাল হয়তো সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়ে যায়। অন্যদিন নিউজিল্যাড যাওয়ার চিন্তা করে। এমন করার জন্য অনেক সময় সমস্যা সৃষ্টি হয়। একারণে আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন দেশে যাবেন। এবং সেই দেশে যেতে হলে কি কি বিষয় আগে জানতে হবে। তাদের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। কোন  কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে আগ্রহী তারা কি ধরনের সুযোগ সুবিধা দেবে সেগুলো জানতে হবে। পড়তে হলে কি  কি যোগ্যতা লাগে সে বিষয় আগেই দেখে নিতে হবে। অনেক শিক্ষার্থী আছে তিন মাস চার ধরে সবকিছু প্রস্তুতি শেষ করে। কিন্তু আবেদন ফি পরিশোধ করতে গিয়েই পড়তে হয় সমস্যার মধ্যে। কারণ  শিক্ষার্থীর  সরাসরি নিজেদের অবেদন ফি পরিরোধ করতে পারে না। কারণ বাংলাদেশে আবেদন ফি পরিশোধ করার জন্য কিছু শর্ত আছে। এখনও আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোতে আবেদন ফ্রি পরিশোধ করা তেমন ব্যবস্থা চালু নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের তেমন উদ্যোগ নেই। এছাড়া কমসংখ্যাক লোক আছে যারা আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করে। যে কারণে নিজে নিজে আবেদন ফি পরিশোধ করতে সমস্যায় পড়তে হয়। তবে শিক্ষার্থীরা যেদেশে পড়ালেখা করতে চান সেদেশে তার কোন আত্নীয় স্বজন থাকলে তাদের মাধ্যমে আবেদন ফি পরিশোধ করতে পারেন।

একুশে টিভি অনলাইন :  প্রতিবছর কী পরিমাণ শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে যাচ্ছে ?

শফিকুল ইসলাম : বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কতজন শিক্ষার্থী দেশের বাইরে যাচ্ছে তাদের সঠিক কোন ডাটা নেই। ডাটা বা তালিকা তৈরি করতে সরকারের কোনো ধরনের  উদ্যোগ নেই। কিন্তু মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করার নিয়ম থাকার কারণে তালিকা রয়েছে। এ বিষয় যদি একটা মরিটরিং করা যেতো তাহলে সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করা যেতো।

তবে আমার ধরণা বাংলাদেশে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ইচ্ছা বিদেশ পড়তে যাওয়া। আপনি যদি ১০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন তাহলে দেখবেন ৬ জন শিক্ষার্থীর ইচ্ছা থাকে বিদেশ থেকে পড়াশুনা করার।

একুশে টিভি অলনলাইন : কোন সময় ‍শিক্ষার্থীর বিদেশে যেতে বেশি আগ্রহী হয়ে থাকে ?

শফিকুল ইসলাম: এক সময় ছিলো অর্নাস মাস্টাস শেষ করে বেশি শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়তে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করত। কিন্তু এখন এসএসসি পাশ করার পরপর বিদেশে পড়তে আগ্রহী হয়ে উঠছে। আগে তো এইচএসসি পাশ করার পর বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা ছিল এখন শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কারণে এসএসসির পর এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তবে মূলত বেশি  আগ্রহ দেখায় এইচএসসি পাশের পর।

একুশে টিভি অললাইন :  বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ নিয়ে কি পরিমাণ শিক্ষার্থী বিদেশে যাচ্ছে ?

শফিকুল ইসলাম: স্কলারশিপের অনেকগুলো শ্রেণী আছে। একটা হলো প্রাতিষ্ঠানিক স্কালারশিপ। বিভিন্ন দেশে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন ধরণের স্কালারশিপ দিয়ে থাকে। যেমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যারা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এছাড়া সরকার টু সরকার বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের স্কালারশিপ দিয়ে থাকে। এটা সরকার বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে ব্যবস্থা করে থাকে। আবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় মেধাভিত্তিক স্কালারশিপ দিয়ে থাকে। যেমন কানাডা, ইউএসএ, ইউকে, চায়নাসহ বিভিন্ন দেশের সরকার  ফুল  স্কালারশিপ দিচ্ছে। অনেক সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিবৃতি দিয়ে স্কলার দিয়ে থাকেন। তবে কতজন স্কালারশিপ নিয়ে আসলে বিদেশ যাচ্ছে এটার নির্ধারিত পরিমাণ বলা সঠিক। স্কালারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়া ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।

একুশে টিভি অললাইন : বিদেশ পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীকে আপনি কি পরার্মশ দেবেন?  

শফিকুল ইসলাম : একজন শিক্ষার্থী যদি স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়তে যেতে ইচ্ছা করে তাহলে অবশ্যই তাকে বিভিন্ন দেশের  বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট নিয়ে তাদের অফারগুলো দেখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন সময় স্কলারশিপের অফার দিয়ে থাকে। সেই অফার অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।

একুশে টিভি অনলাইন: আপনার মূল্যবান সময় দেওয়া জন্য ধন্যবাদ।

শফিকুল ইসলাম : আপনাকেও ধন্যবাদ।

/ এআর /