ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই আজ

প্রকাশিত : ০৮:০৩ এএম, ১৫ জুলাই ২০১৮ রবিবার

আজ বিশ্বকাপ ফুটবলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি অথবা নতুন ইতিহাস রচনা হবে। দেড় অথবা দুই-সোয়া দুই ঘণ্টায় লেখা হবে স্বপ্নপূরণ আর স্বপ্নভঙ্গের গল্প।

প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের দুই দশকপূর্তির বছরে ফ্রান্স যেমন দ্বিতীয় শিরোপার জন্য ব্যাকুল, তেমনি অবিস্মরণীয় বিশ্বকাপযাত্রার পূর্ণতা দিয়ে প্রথম শিরোপার আকুলতা কম নয় ক্রোয়েশিয়ারও। কে হারাবে প্রাণ, কে জিতবে বিশ্বজয়ের হাসি- সেই কৌতূহল নিয়েই আজ টিভি সেটের সামনে বসবে বিশ্বের প্রায় এক বিলিয়ন দর্শক। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু বিশ্বকাপ ফাইনাল নামের সেই যুদ্ধে প্রস্তুত ইউরোপের দুই দেশ ফ্রান্স আর ক্রোয়েশিয়া।
প্রস্তুত আসলে তারা অনেক আগে থেকেই। ফ্রান্সকে নিয়ে ক্রোয়েশিয়া আর ক্রোয়েশিয়াকে নিয়ে ফ্রান্সের প্রস্তুতি বুধবার রাতের দ্বিতীয় সেমির পর শুরু হয়নি। শুরুটা গত বছর। গ্রুপ পর্বে ফরাসিরা ছিল ‘সি’ গ্রুপে, ক্রোয়াটরা ‘ডি’ গ্রুপে। বিশ্বকাপ শুরুর আগের যে বাস্তবতা, সে অনুসারে ফ্রান্স গ্রুপসেরা আর ক্রোয়েশিয়া গ্রুপ রানার্সআপ হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে দুই দলের দেখা হয়ে যেত দ্বিতীয় রাউন্ডেই। গত বছরের শেষ দিকে গ্রুপিং হওয়ার পরপরই তাই ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া একে অপরকে নিয়ে ‘হোমওয়ার্ক’ সেরে রাখতে শুরু করে। কিন্তু `ডি` গ্রুপে আর্জেন্টিনা রানার্সআপ আর ক্রোয়েশিয়া চ্যাম্পিয়ন হলে সব গড়বড় হয়ে যায়। যে লড়াই হওয়ার কথা শেষ ষোলোয়, শেষ পর্যন্ত তা এখন শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে।

এদিকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেই নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্জনটি পেয়ে গেছে লুকা মডরিচের দল।
ফাইনাল-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে কোচ জল্গাটতো দালিচও সে রকমই বলে গেলেন, ‘জিতি বা হারি, ক্রোয়েশিয়ায় ভূকম্পনের মতো আলোড়ন উঠবে। একজন খেলোয়াড় বা কোচের জীবনে বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো দিন তো আর হতে পারে না। যাই ঘটুক, আমরা খুশি থাকব। গর্বিত হবো।’

প্রতিপক্ষ যেমনই হোক, বিশ্বকাপটা তারা ঘরে নিয়েই ফিরতে চান। ফ্রান্স এবার রাশিয়ায় পা রেখেছিল ফেভারিটের তকমা গায়ে দিয়েই। গ্রুপপর্ব মনমতো না হলেও নকআউট থেকে স্বরূপে দেখা দেয় দিদিয়ের দেশমের দল। দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনা, কোয়ার্টারে উরুগুয়ে আর সেমিফাইনালে বেলজিয়ামকে হারায় তারা। বিপরীতে ক্রোয়েশিয়ার যাত্রাপথ তুলনামূলক সহজ ছিল। আর্জেন্টিনা, আইসল্যান্ডের গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দ্বিতীয় রাউন্ডে ডেনমার্ক, কোয়ার্টারে রাশিয়া আর সেমিতে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে তিনটি ম্যাচই গড়িয়েছে অতিরিক্ত আধা ঘণ্টায়।

ডেনমার্ক ও রাশিয়ার বিপক্ষে জয়ের মীমাংসা হয় তারও পরে- টাইব্রেকার শুটে। তিন নকআউট ম্যাচ মিলিয়ে ফ্রান্সের চেয়ে ৯০ মিনিট বেশি খেলতে হয়েছে ক্রোয়াটদের। বেশি খেলার ক্লান্তির সঙ্গে আছে স্বল্প বিশ্রামও। ফ্রান্স ফাইনাল নিশ্চিত করে মঙ্গলবার রাতে, ক্রোয়েশিয়া বুধবারে। সব মিলিয়ে ফাইনালে নামার আগে ফ্রান্সের চেয়ে ক্রোয়াটরাই খানিকটা পিছিয়ে।
শেষ পর্যন্ত আসলে কী হবে! ফ্রান্স দ্বিতীয় শিরোপা জিতে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে, নাকি প্রথমবার ফাইনালে উঠেই ইতিহাস তৈরি করবে ক্রোয়েশিয়া! তা দেখা যাবে আজ রাতেই।
এসএ/