ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

দেশীয় পশুতে মিটবে কোরবানির চাহিদা

রিজাউল করিম

প্রকাশিত : ০৬:৪৩ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:৪৫ এএম, ১ আগস্ট ২০১৮ বুধবার

আসন্ন ঈদুল আযহায় কোরবানির চাহিদা মিটবে দেশীয় পশুতে। এবার কোরবানি দেওয়ার জন্য ১ কোটি ১৫ লাখ ৮৯ হাজার গবাদিপশু তৈরি রয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এ বি এম খালেদুজ্জামান বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারও কোরবানি সামনে রেখে অধিদফতর নানা  প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। গত বছর যে পরিমান পশু জবাই হয়েছিল এবার তার চেয়ে ১২ লাখ বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। তাই দেশীয় পশুতেই কোরবানির চাহিদা মিটবে বলে আশা করছি।

তিনি জানান, কোরবানির জন্য এবারও প্রাণিসম্পদ অধিদফতর গবাদিপশুর খামারগুলোতে স্বাস্থ্যহানিকর রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ল্যাবরেটরি-পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রাণী স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর স্টেরয়েড ও হরমোনজাতীয় ওষুধের বিক্রয় ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ, সীমান্তবর্তী এলাকায় এসব দ্রব্য চোরাইপথে আসা বন্ধে কঠোরভাবে মনিটরিং করবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কোরবানির জন্য দেশে মোট ১ কোটি ১৫ লাখ ৮৯ হাজার গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য প্রাণী রয়েছে। মোট প্রস্তুত পশুর মধ্যে ৪৪ লাখ ৫৭ হাজার গরু-মহিষ, ৭১ লাখ ছাগল-ভেড়া ও প্রায় ৩২ হাজার উট-দুম্বা। গরু-মহিষের মধ্যে প্রায় ২৯ লাখ ১০ হাজার হৃষ্টপুষ্ট। বাকি ১৫ লাখ ৪৬ হাজার অনুৎপাদনশীল বা বয়স্ক।

গত বছর ঈদুল আযহায় দেশে ১ কোটি ৪ লাখ পশু জবাই হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৫ লাখ ২৯ হাজার ছিল গরু-মহিষ। বাকি ৫৮ লাখ ৯১ হাজার ছিল ছাগল-ভেড়া। এ বছর কোরবানির জন্য ৫ শতাংশ বেশি পশু তৈরি রাখা হয়েছে।

তবে এই সংখ্যক পশুতে কোরবানির বাজার স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে সন্দিহান দেশীয় পশু ব্যবসায়ীরা।  গাবতলী পশুহাটের ব্যবসায়ী মো. আলাদীন ব্যাপারী বলেন, কোরবানি ঈদে পশুর দাম কেমন যাবে তা এখন বলা মুশকিল। সরকার কোনোভাবে ভারতকে ম্যানেজ করে গরু আনতে পারে। আমাদের ধারণা আনবে। সেই চেষ্টা সরকার করছে।

তিনি আরো বলেন, যতদূর জানি ভারতের যেসব অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে গরু আসে, সেসব অঞ্চল এবার বন্যা কবিলিত। এজন্য খামারিরা বর্ষা মৌসুমে যেভাবেই হোক পশু বিক্রি করে দিতে চায়। যদি এমনটি হয় তবে গরুর দামে প্রভাব পড়বে। দেশি গুরুর দাম কমে যাবে।

অপর ব্যবসায়ী লতিফ মিয়া বলেন, এবার পশুর দাম নিয়ে দোটানায় আছি আমরা। কী হবে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আগেভাগে গরু হাটে এনে ক্ষতির শিকার হতে চাই না। গরু আনার বিষয়ে আমরা ভেবেচিন্তে এগোচ্ছি। তবে সরকার যে পরিমান গরুর কথা বলেছেন তার সবগুলো হয়তো কোরবানি উপযোগি না। তাই শুধু দেশীয় গরু দিয়ে কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে কি না সন্দেহ আছে। 

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহমেদ মনে করছেন এবারও বাজারে কোরবানির পশুর ঘাটতি থাকবে। তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে যে পরিমান গবাদিপশুর কথা বলা হয়েছে এর সবগুলো কিন্তু কোরবানির জন্য জবেহ উপযোগী নয়। ফলে ঘাটতি আমাদের পড়বেই। আর ঘাটতি মেটাতে পার্শবর্তী দেশ থেকে আমদানি করতেই হবে। সৌদি আরব যেমন কোরবানির সময় আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড থেকে আমদানি করে। আমরাও তেমন করতে পারি।

বিদেশ থেকে গরু আমদানি করা হলে দেশি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন কি না এমন প্রশ্নে শাহিন আহমেদ বলেন, দেশি ব্যবসায়ীরা যদি ক্ষতিগ্রস্থের আশংকা থাকে তবে সরকার গরুর দাম নির্ধারণ করে দিতে পারে। নতুবা তাদের বিনিয়োগে সহায়তা করতে পারে। যাতে তারা বেশি পরিমান গরু পালতে পারে।

/ এআর /