ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘আমার মা ছিলেন সত্যিকারের গেরিলা’

প্রকাশিত : ১২:১৫ পিএম, ৮ আগস্ট ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ০৩:৫২ পিএম, ৮ আগস্ট ২০১৮ বুধবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার মা ছিলেন একজন সত্যিকারের গেরিলা। দেশের ক্রান্তিকালে যখন কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার পড়তো তখন আমার মা আব্বাকে সাহায্য করতেন।’
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মা আব্বাকে সবকিছু থেকে কিছুক্ষণের জন্য আলাদা করে রাখতেন। বলতেন ১৫ মিনিট শুয়ে রেস্ট নাও। অনেকে অনেক কথা বলবে, কিন্তু তোমাকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। গোটা দেশ তোমার দিকে তাকিয়ে। তোমার মনে যে কথাটা আসবে সেই কথাটাই বলবে।
তিনি আরও বলেন, আমার মা খুব জ্ঞানপিপাসু ছিলেন। তার খুব বই পড়ার অভ্যাস ছিল। আব্বার জন্য বই কিনতেন। লেখাপড়ার তেমন সুযোগ না পেলেও চিন্তা ভাবনায় তিনি খুব উচ্চমানের ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মা কখনই নাই শব্দটা বলতেন না। মায়ের মুখে কোনো সময় অভাব অনটনের কথা শুনতাম না। আমাদের কঠোর নির্দেশ দিতেন, ঘরে কোনো জিনিস না থাকলে নাই বলা যাবে না। ঘরে চিনি না থাকলে বলতেন, ফুরিয়ে গেছে, আনতে হবে। তিনি কখনই দৈন্য, অভাব-অনটন প্রকাশ করতেন না। কখনও হতাশা ছিল না তার মধ্যে।
তিনি আরও বলেন, মা অনেক উদারমনা ছিলেন। গরীবদের-দলের নেতাকর্মীদের সাহায্য করতে তিনি গহনা বিক্রি করে দিয়েছেন। বলতেন ডিজাইন পুরনো হয়ে গেছে তাই বিক্রি করে দিয়েছি, পরে নতুন বানাব। ঠাণ্ডা পানি খেলে গলা ব্যথা হয় এটা বলে ফ্রিজ বিক্রি দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি বড় মেয়ে, সব বুঝতাম। মা রাজনৈতিকভাবেও ছিলেন দৃঢ়চেতা। রাজনীতিতে সময়মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ গুণটিও তার মধ্যে ছিল।
উল্লেখ্য, জাতি আজ বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছে। জাতির পিতার পাশে থেকে জাতি গঠন কর্মকান্ড এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বেগম ফজিলাতুননেছা ১৯৩০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
পাকিস্তানী শাসনকালে বঙ্গবন্ধুকে বারবার কারাবন্দী করা হলে এই মহীয়সী নারীকে অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালেও অসীম সাহস, ধৈর্য ও প্রজ্ঞার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন।
বাঙালি জাতির গর্ব বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কতিপয় বিপথগামী সেনা অফিসারদের হাতে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যদের সঙ্গে নিহত হন।
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ছাত্র সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করছে।
এসএ/