ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

সাইবার আক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়    

আউয়াল চৌধুরী

প্রকাশিত : ০৬:১৫ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৮ রবিবার | আপডেট: ০৮:৪৪ পিএম, ১৭ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার

ইন্টারনেটের ব্যবহার যত বৃদ্ধি পাচ্ছে সাইবার আক্রমণের শিকারও হচ্ছে মানুষ তত বেশি। অপরাধীরা বিভিন্ন ধরণের ফাঁদ তৈরি করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নানাভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার বা প্রয়োজনীয় জিনিস।

আইডি হ্যাক থেকে শুরু করে পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে বা অশ্লীল বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে করছে হেয়। কিন্তু সামান্য একটু সচেতন হলেই অনেকাংশে হ্যাকিং বা সাইবার আক্রমন প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমরা যে সব সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে থাকি সেখানেই রয়েছে আমাদের সুরক্ষা। একটু সচেতনতাই পারে ভয়াবহ অবস্থার হাত থেকে বাঁচাতে।   

সাইবার আক্রমণের শিকার হওয়ার আগেই আমাদের জন্য রয়েছে কিছু করণীয়। সে বিষয়গুলো যদি মাথায় থাকে তাহলে অনেকাংশে আমরা নিরাপদ থাকতে পারি। এ বিষয়ে সাইবার প্রতিরোধ নিয়ে কথা বলেছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের উপকমিশনার (ডিসি) আলীমুজ্জামান।   

তিনি সাইবার আক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে বললেন। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো-  

১. সাইবার আক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে প্রথমত প্রয়োজন সাইবার সচেতনতা।  

২. আপনি অন্ধকারে হাঁটতে পারবেন না। সাইবার একটি অন্ধকার জগত। এই জগতে এমন অনেক কিছু আছে যা আপনি জানেননা। এখানে এমন অনেক বিষয় আছে যা সম্পর্কে আপনার ধারণাও নেই। তাই প্রয়োজনীয় প্রতিটি বিষয়কে যাচাই বাছাই করে নিতে হবে।

৩. কেউ আপনার কাছে একটা লিঙ্ক পাঠিয়েছে। এখন আপনাকে দেখতে হবে সেটায় আপনি ক্লিক করবেন কি না। লিঙ্কটা ক্লিক করার পর দেখা যাচ্ছে তারা আপনার পাসওয়ার্ড চাচ্ছে। এখন আপনি কি করবেন? পাসওয়ার্ড কি দিয়ে দেবেন? এ বিষয়ে ভাবতে হবে, জানতে হবে। কেউ আপনাকে একটা লিঙ্ক পাঠালো আপনি সেটা ডাউনলোড করলেন, এরপর তারা একটা নাম্বার চাইলো; ই-মেইল চাইলো, এসব দেওয়া যাবে না। তারা একটা অ্যাপ বা সফটওয়্যার পাঠিয়েছে, কন্ট্রাক নাম্বার চাচ্ছে বুঝতে হবে তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। আপনার ছবি চাচ্ছে, সহজেই বুঝে নিতে হবে এখানে কোনো সমস্যা রয়েছে। এসব তথ্য দেওয়া যাবে না।

৪. কোনো ই-মেইল আসলে আগে দেখতে হবে মেইলটা পরিচিত কি না। আনট্রাস্ট কোনো কিছুতে ক্লিক দেওয়া যাবে না। এর মাধ্যমে নিজের সব তথ্য অন্যের কাছে চলে যাবে। সুতরাং এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

৫. কেউ কোনো তথ্য চাইলে আমাকে আগে নিশ্চিত হতে হবে আমার তথ্য আমি কাকে দেব আর কাকে দেব না। আমার প্রয়োজন কতটুকু। কতটুকু আমি তাকে বিশ্বাস করবো। এসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

৬. ফেসবুকে অনেকেই এখন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এজন্য আমাকেই ঠিক করতে হবে আমার ফেসবুক আইডি কতটুকু অপেন রাখবো আর কতটুকু বন্ধ রাখবো। সব ধরণের পদ্ধতি দেওয়া আছে। এখন নিজেকেই সেটা ঠিক করতে হবে আমি কী করবো। ফেসবুকে অনেকগুলো অপশন আছে যেগুলো বন্ধ রাখলে আপনি নিরাপদ থাকবেন। কিন্তু এ বিষয়গুলো অনেকে জানেননা। তাই ফেসবুক হ্যাক হওয়া বা হয়রানি হওয়ার আগে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। নিজে না জানলে কাউকে দিয়ে এ ব্যবস্থাগুলো করে নিলে আপনি নিরাপদ থাকবেন।

সাইবার আক্রমনের শিকার হলে করণীয় কী?   

এ বিষয়ে আলীমুজ্জামান বলেন, কেউ যদি সাইবার আক্রমনের শিকার হয় সেক্ষেত্রে কিছু করণীয় রয়েছে। তাকে প্রথমে পুলিশে রিপোর্ট করতে হবে। ঢাকা মহানগর হলে ডিএমপি’তে আমাদের সাইবার ক্রাইম ইউনিট কাজ করছে। এখানে এসে অভিযোগ জানাতে হবে। ঢাকার বাহিরে হলে সংশ্লীষ্ট থানায় যোগাযোগ করতে হবে। ঢাকা মহানগরে যোগাযোগের জন্য আমাদের ফেসবুক সাইট https://www.facebook.com/cyberctdmp এখানে যে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। অথবা ০১৭৬৯৬৯১৫২২ এই নাম্বারে যোগাযোগ করা যেতে পারে। তবে স্বশরীরে আসলে খুবই ভালো। কারণ পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে কাজটি করতে হবে। তাই নিজে এসে অভিযোগ জানালে দ্রুত ফলাফল পাওয়া সম্ভব।    

এসি