ঢাকা, শনিবার   ১৯ জুলাই ২০২৫,   শ্রাবণ ৩ ১৪৩২

আইন না মানায় দুর্নীতি বাড়ছে : দুদকের চেয়ারম্যান

প্রকাশিত : ০৩:৪৫ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০১৮ সোমবার

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আইন তৈরি হয় আইন মানার জন্য। আইনটা না মানার কারণে দুর্নীতি বাড়ছে এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় দুদকেরর প্রধান কার্যালয়ে ‘দুর্নীতি প্রতিরোধ ও উত্তম চর্চার বিকাশে এফ.এম বেতারের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আইন তৈরি হয় আইন মানার জন্য। কিন্তু আমার কাছে অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, আইনটা তৈরি হয়েছে ভাঙার জন্য। আপনারা দেখেছেন, আমরা বারবার বলার চেষ্টা করেছি, আইনটা মানেন। আইনটা না মানার কারণে দুর্নীতি হয়েছে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তবে আমরা দৃশ্যমান বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা বিআরটিএ-এর মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যে পরিমাণ অভিযান পরিচালনা করেছি, সে পরিমাণ অভিযান অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পরিচালনা করা হয়নি।


তিনি আরও বলেন, বিআরটিএ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, বিআরটিএ কর্মকর্তা কারাগারে গেছেন। কিন্তু সেই যে লেজ বিআরটিএ-এর, তা কাটা যাচ্ছে না। আমরা অবজার্ভ করছি। বিআরটিএ কার্যালয়ে যে পরিমাণ ভিড়, শিশু-কিশোরদের আন্দোলনের দু’দিন আগেও আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে বিআরটিএ তে অভিযান চালিয়েছি।

বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা চুরির মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কর্মকর্তারা সেখানে গেছেন, কথা বলেছেন, কাজ করছেন। খুব শিগগিরই আদালতে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। দেশের বেশিরভাগ মানুষ আইন মানতে চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেখানে যারা ক্ষমতাবান সেখানে তারাই আইন মানতে চান না। তাহলে কত দূর সম্ভব? আমাকে দিয়েছেন ক্ষমতা। সেখানে আইন মানার জন্য আমি তো আগে আইন মানবো।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমি দুর্নীতির ব্যাপারে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের (দুদক) বিরুদ্ধেও অভিযোগ করতে পারেন। আমাদের মধ্যে যদি দুর্নীতি থাকে তবে অভিযোগ করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের অনেক কর্মকর্তা চাকরি হারিয়েছেন। যারা আইন মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সামনের দিনগুলোতে কিভাবে আইন মানাতে হয় সেই ব্যবস্থা দুদক গ্রহণ করবে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, সেই যে উল্টোপথের গাড়ি চলা। তা আজও বন্ধ হয়নি। ফুটওভার ব্রিজ রয়ে গেছে কিন্তু তা ব্যবহার হচ্ছে না। এটা ঠিক না। সুতরাং আইন না মানার প্রবণতায় আমরা সবাই দোষী। আসুন আমরা নিজেদের স্বার্থে, ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে নিজেদের আইনটা মানি। আইন জানি না বললে হবে না। কারণ আইনটা কিন্তু হঠাৎ করে আকাশ থেকে পড়েনি। বিবেকে যা বাধা দেয় সেটা আগে অনুসরণ করুন।

এরআগে আলোচনা সভায় দুদক চেয়ারম্যান দেশে স্বীকৃত সকল এফ.এম বেতারে দুর্নীতিবিরোধী অনুষ্ঠান, জকিদের ব্যবহার, সোস্যাল মিডিয়ায় দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রয়োজনে বেতারের এসব কর্মসূচির জন্য কিছুটা হলেও আর্থিক সহযোগিতা দুদক করবে। বিভিন্ন এফএম বেতার কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের এক মাসের মধ্যে আলাদা প্রোগ্রাম সিডিউল ও কৌশলগত বিষয়গুলো জানানোর প্রস্তাব করেন।

টিআর/