আগামী বাজেটে তামাক দ্রব্যে কর বাড়বে: পরিকল্পনামন্ত্রী
প্রকাশিত : ০২:৫০ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বুধবার

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে তামাকপণ্যের উপর করের হার বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) এবং এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, পার্শবর্তী দেশগুলোতে আমাদের দেশের তুলনায় তামাকদ্রব্যে করের হার অনেকগুণ বেশি। তারা তামাককে নিরুৎসাহিত করতে এ জাতীয় পণ্যে করের হার বাড়ায়।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে আমাদের দেশেও তামাকের উপর করহার বাড়ানো হবে। তবে মনে রাখতে হবে তামাক নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বড় করণীয় এ ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। মানুষকে বোঝাতে হবে যে তামাক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। নিজের জন্য ও ছেলে-মেয়েদের জন্য তামাক বর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে আসলে দেশের স্বাস্থ্য সমস্যাও অনেকটা কমে আসবে। আর দেশের মানুষের স্বাস্থ্য উন্নয়ন এসডিজি উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায়ও আছে। তাই আমি আশা করবো এসডিজির উন্নয়ন কাজের সঙ্গে জড়িত প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবও এ নিয়ে কাজ করবেন।
‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচক: এফসিটিসি আর্টিকেল ৫. ৩ বাস্তবায়ন প্রতিবেদন, বাংলাদেশ ২০১৮’ শীর্ষক এ সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, দেশের তামাক দ্রব্য উৎপাদনকারী বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক সচিব পর্যাযের কয়েকজন ব্যক্তি। তামাকের নিয়ন্ত্রণে যখনই কোনো কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখনই তারা আটকে দেয়। তামাক নিয়ন্ত্রণে তাদেরকেই এ ব্যবসা থেকে সরে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এরই মধ্যে ১৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে জাপানের টোবাকো কোম্পানি। তারা ভারতে ঠাই না পাওয়ায় বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জায়গা হিসেবে বেঁছে নিয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার ৫ শতাংশে নিয়ে আসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও এসডিজির স্বাস্থ্য বিষয়ক লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে জাপান টোবাকোর সে বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) আবুল কালাম আজাদ বলেন, অনেকে বলে দেশে গাজা থাকলে ফেনসিডিল আসতো না। এটা সম্পূর্ণ খোড়া একটি যুক্তি। অথচ বাংলাদেশের তুলনায় পার্শবর্তী দেশ ভারতে নিম্নমানের তামাক পণ্যে ৮গুণ বেশি করহার আরোপ করা হয়েছে।
আর উচ্চমানের তামাকপণ্যে ৪গুণ করহার আরোপ করা হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে এর উপর করহার বাড়াতে হবে। তামাকের ব্যবহার কমলে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সহজ হবে।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে ৫ শতাংশের নিচে নিয়ে আসা কঠিন হবে। তাই এখন থেকেই এর ক্ষতিকর দিকগুলো পাঠ্য বইয়ে সন্নিবেশ ঘটাতে হবে। ছেলে-মেয়েদের মধ্যে তামাকের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। এ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে।
সেমিনারে এটিএন বাঙলার প্রধান প্রতিবেদক ও এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মার কো কনভেনর নাদিয়া কিরণ এর সঞ্চালনায় গবেষণা ফলাফর প্রকাশ করেন প্রজ্ঞা’র কো অর্ডিনেটর মো. হাসান শাহরিয়ার।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে তামাক কোম্পানির হস্তক্সেপ বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। সামগ্রিকভাবে, আর্টিক্যাল ৫.৩ এর নির্দেশনাবলী বাস্তবায়নে অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। তামাক কোম্পানির হস্তক্সেপ সূচকে এশিয়ার দশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে খারাপ (নবম)।
আরকে// এআর