ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

বাড়ছে ডেঙ্গু, প্রয়োজন সচেতনতা

প্রকাশিত : ১২:০৫ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ১২:৪৬ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শনিবার

প্রতিদিনই রাজধানীতে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ভাদ্র মাসের শেষ দিকে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়ায় এডিস মশার বংশবৃদ্ধির কারণে ডেঙ্গু বেড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা বলছেন, একমাত্র সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু থেকে মুক্তি দিতে।  

১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৫১ জন ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ১ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৭৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

জানা গেছে, গত মাসে ঢাকা শহরে ১ হাজার ৫৪১ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। রোজ গড়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ জন। সবমিলিয়ে আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

রাজধানীর অন্যতম অভিজাত আবাসিক এলাকা ধানমন্ডিতেও পাওয়া গেছে এডিস মশার লার্ভা। সবচেয়ে বেশি এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে কলাবাগান, কাঁঠালবাগান, মিন্টো রোড, সিদ্ধেশরী, সেগুনবাগিচা এলাকায়।

এ অঞ্চলগুলো ডিএসসিসির অঞ্চল-১ এর আওতাধীন। তাদের ‘এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত ও ধ্বংসকরণ’ কর্মসূচির মাধ্যমে এই তথ্য উঠে এসেছে। এখন ডিএসসিসির পাঁচটি অঞ্চলে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস ও জনসচেতনতায় তৃতীয় দফার এই কর্মসূচি চলছে।

প্রথম দফায় অঞ্চল-১-এর ৩৬ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। তবে ডিএসসিসির অন্যান্য এলাকা বিশেষ করে পুরান ঢাকায় এই মশার উপস্থিতি কম বলে দাবি করেছে সংস্থাটি। 

ডিএসসিসি জানিয়েছে, এডিস মশা সাধারণত বাসাবাড়িতে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র ও টায়ারের স্বচ্ছ পানিতে জন্মায়। টব, প্লাস্টিকের পাত্র ও টায়ারের স্বচ্ছ পানিতে জন্মায়। এসব মশার প্রজননস্থল নিজ দায়িত্বে মালিককেই ধ্বংস করতে হবে।

ডিএসসিসি জানায়, গত ২৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ডিএসসিসির পাঁচটি অঞ্চলে মশার লার্ভা শনাক্তকরণ ও ধ্বংসে অভিযান চালানো হয়েছিল। এর মধ্যে অঞ্চল-১-এর ২ হাজার ৫৯৯ টি বাসাবড়ি, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর পরিদর্শন করা হয়। লার্ভা পাওয়া যায় ৯৩৮ টিতে, যা প্রায় ৩৬শতাংশ।

মশার লার্ভা ধ্বংস করতে ২৮ জুলাই থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীতে মশক নিধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর ৩ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় দফায় কর্মসূচি চলছে।

ওই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে প্রায় ৭২ হাজার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। প্রতিটি ওয়ার্ডে তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা। এছাড়া মশক নিধনে সমান তালে কাজ চলছে জানায় ডিএসসিসি।

এদিকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বার্তা প্রচার করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রচার-প্রচারণায় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ৭ টি করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন।

এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক ৭ টি করণীয় বিষয়-

১) ঘরের এবং আশেপাশে যেকোনো পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি তিন দিন পরপর ফেলে দিতে হবে।

২) ব্যবহৃত পাত্রের গায়ে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ঘষে ঘষে পরিষ্কার রাখতে হবে।

৩) অব্যবহৃত পানির পাত্র বিনষ্ট অথবা উল্টে রাখতে হবে, যাতে পানি না জমে।

৪) দিনে অথবা রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারী ব্যবহার করতে হবে।

৫) সম্ভব হলে জানালা এবং দরজায় মশা প্রতিরোধক নেট লাগানো, যাতে ঘরে মশা প্রবেশ করতে না পারে।

৬) ডেঙ্গু জ্বরে শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ ব্যতীত অন্য কোন জ্বর ও ব্যথানাশক ঔষধ সেবন করবেন না।   

৭) ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগে আতঙ্ক নয়, সময়মত সুচিকিৎসায় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

 এমএইচ/