ঢাকা, শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

তুরস্ককে ৫০ কোটি ডলারের বিমান উপহার দিল কাতার

প্রকাশিত : ১২:৫১ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

কাতারের আমির শেখ তামিম আল থানি তুরস্ককে একটি দামি বিমান উপহার দিয়েছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তুরস্ক একটি বিমান কেনার চেষ্টা করছে- একথা শোনার পর কাতারের আমির তুরস্ককে এই বিমানটি উপহার দেন। এমনটাই জানালেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। বোয়িং ৭৪৭-৮আই বিমানটির মূল্য ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলার বলে জানা গেছে।

তুরস্কের বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে দেশ যখন অর্থনৈতিক সংকট পার করছে তখন জনগণের করের টাকায় বিমান কেনা হয়েছে।

বিমানটি সবচেয়ে বড় এবং ব্যয়বহুল ব্যক্তিগত বিমান। ২০১৫ সালে বিমানটি কাতার ক্রয় করে। কাতারের আমির কিছুদিন বিমানটি ব্যবহারের পর এটি বিক্রির জন্য গতমাসে বিজ্ঞাপন দেন।বিমান বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর তুরস্কের তরফ থেকে বিমানটি ক্রয়ের জন্য আগ্রহ দেখানো হয়। কাতারের আমির বিষয়টি জানার পর বিমানটি তুরস্ককে উপহার হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

বিমানটির বৈশিষ্ট্য-

* বিমানটি দ্বিতল বিশিষ্ট

* সাধারণত এ বিমানে ৪০০ যাত্রী ধারণক্ষমতা থাকলেও, কাতারের চাহিদা অনুযায়ী এখানে মাত্র ৭৫টি আসন সংযোজন করা হয়েছিল।

*কাতারের আমীরের ব্যক্তিগত বিমান হিসেবে এটি প্রায় ৪০০ ঘণ্টা উড়েছে

* এ বিমানে ১৪ আসনের একটি ডাইনিং রুম আছে যেটি মিটিং রুম হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

* বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল লাউঞ্জ আছে বিমানটিতে।

* কাঠ দিয়ে সজ্জিত বিলাসবহুল একটি বেডরুম আছে এ বিমানে।

* বিমানে ১০টি বাথরুম রয়েছে।

* এ বিমানে স্টোররুম এবং একটি হাসপাতাল রয়েছে।

গত সপ্তাহে বিমানটি তুরস্কে পৌঁছানোর পর বিরোধী দলীয় একজন সংসদ সদস্য সংসদে ভাইস-প্রেসিডেন্টের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন যে বিমানটি কেনা হয়েছে কি না?

গত সপ্তাহান্তে আজারবাইজান থেকে তুরস্কে ফেরার পথে বিমানে এরদোয়ান সাংবাদিকদের বলেন, কাতারের আমির যখন জানতে পারেন যে তুরস্ক এ ধরণের একটি বিমান কিনতে আগ্রহী, তখন তিনি তুরস্ককে বিমানটি উপহার দেন।

কাতারের আমীর শেখ হামাদকে উদ্ধৃত করে এরদোয়ান বলেন, ‘তিনি বলেছেন, আমি তুরস্কের কাছ থেকে কোন অর্থ নেব না। আমি এ বিমানটি তুরস্ককে উপহার হিসেবে দিচ্ছি।’

এর আগে চারটি আরব দেশ- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত,মিশর ও বাহরাইন কাতারের সাথে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করার পর তুরস্ক কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছিল।

কাতারের সুপার মার্কেটে খাদ্য সংকট যাতে তৈরি না হয় সেজন্য তুরস্ক সমুদ্র এবং আকাশ পথে কাতারের জন্য খাদ্য পাঠিয়েছে।

কাতারের উপর চারটি দেশ যে অবরোধ দিয়েছে সেটিকে `অমানবিক` হিসেবে ব্যাখ্যা করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ  তাইয়েপ এরদোগান বলেছিলেন, এ ধরণের অবরোধ `মৃত্যুদণ্ড` দেওয়ার শামিল।

তুরস্কের সাথে কাতারের এক ধরণের সামরিক সম্পর্কও রয়েছে। কাতারের উপর অবরোধ আরোপের পর দেশটিতে তুরস্কের সেনা মোতায়েন সমর্থন করে সংসদে একটি বিল পাশ হয়েছিল।

এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তুরস্ক বুঝিয়ে দিয়েছিল যে কাতার একা নয়। অন্যদিকে কাতারও বন্ধুত্বের প্রতিদান দিয়েছে। তুরস্কের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে কাতার।

তুরস্কের অর্থনীতিকে সহায়তা করার জন্য গত মাসে কাতারের আমির ১৫ বিলিয়ন বা ১৫শ কোটি ডলার অর্থনৈতিক প্রকল্প এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক অবনতির প্রেক্ষাপটে ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা লিরার মূল্যমান প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএইচ/