ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৬ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

পদ্মা সেতুতে ট্রায়াল হিসেবে বসানো হলো আট রেলওয়ে স্ল্যাব 

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:১৭ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:১৭ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

পদ্মা সেতুতে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর ট্রায়াল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর ট্রায়াল দেওয়া শুরু হয়েছে। ট্রায়াল সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হলে শিগগির স্ল্যাব বসানো হবে। ইতোমধ্যে ৮টি স্ল্যাব সফলভাবে বসানো হয়েছে। সেতু প্রকল্পের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে সাতশ’র বেশি স্ল্যাব তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতুর স্প্যানে (সুপার স্ট্রাকচার) রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। জাজিরা প্রান্তে ৭ এফ স্প্যানের ওপর প্রথম সেকশনে স্ল্যাব বসানোর ট্রায়াল দিচ্ছেন প্রকৌশলীরা।  স্ল্যাবগুলো মাওয়া থেকে  জাজিরা প্রান্তে নিয়ে আসা হয়েছে।

পদ্মা সেতুর একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বললে একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।  

এক প্রকৌশলী জানান, ‘স্ল্যাবগুলো সফলভাবে বসানো হচ্ছে। কাজেই এগুলো আর সরানোর দরকার পড়বে বলে মনে হয় না।’

পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী ৭ এফ স্প্যানের ওপর এসব রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। মাওয়া থেকে জাজিরা পৌঁছাতে সময় লাগে একদিন। এসব স্ল্যাবের ওজন ৮ টন হয়ে থাকে।

এছাড়া দৈর্ঘ্য ২ মিটার এবং প্রস্থ ৫ দশমিক ১৫ মিটার হয়। মাওয়া প্রান্তে প্রায় সাত`শর বেশি স্ল্যাব প্রস্তুত আছে। জাজিরা প্রান্তে এখন যে ৬টি পিলারে ৫টি স্প্যান বসানো হয়েছে তাতে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হচ্ছে।

এদিকে, সেতুর ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পাঁচটি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে জাজিরা প্রান্তে পৌনে এক কিলোমিটার কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে যদিও সেতুর পিলারের ওপর এ বছর আর কোন স্প্যান বসানো হবে না বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। পিলারের ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পুরো সেতুতে মোট পিলার হবে ৪২টি। এর মধ্যে নদীতে থাকবে ৪০টি পিলার। এক পিলার থেকে আরেক পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতু নির্মিত হবে। ৪২টি পিলারের ওপর এ রকম ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে সমুদ্রপথে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। স্প্যানের অংশ সংযুক্ত করা হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর এ বছরের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর খুঁটিতে বসানো হয় দ্বিতীয় স্প্যান। গত ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান। ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর খুঁটির ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হলে সেতুর ৬০০ মিটার দৃশ্যমান হয়। প্রমত্তা পদ্মা নদীতে পরে বসানো হয় পঞ্চম স্প্যান। নদীর দক্ষিণ প্রান্তে ৪১ ও ৪২ নম্বর খুঁটির ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। ফলে সেতুর পৌনে এক কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়।

এ পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সব ঠিক থাকলে ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ হবে নির্মাণ কাজ। খুলে দেওয়া হবে যান চলাচলের জন্য।

 কেআই/এসএইচ/