কোটা চাইলে আন্দোলন করুক, আন্দোলন ছাড়া দেবো না: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত : ০৬:২৪ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার
মন্ত্রিসভা প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের বিষয়টি অনুমোদনের পর মুক্তিযোদ্ধা ও নারী কোটা রাখার পক্ষে কেউ কেউ মত দিচ্ছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, তখন (কোটা আন্দোলন) সবাই যখন বলল কোটার দরকার নাই তখন আমি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিলাম। এখন আবার যখন কোটা প্রয়োজনের কথা উঠছে তখন আমি বলবো, কোটা চেয়ে আন্দোলন করুক। কোটা চাইলে এর পক্ষে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোটা দেওয়া হবে না।
আজ বুধবার বিকাল ৪টায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘ সফরসহ বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ এবং বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নঈমুল ইসলাম খান কোটা নিয়ে প্রশ্ন করে বলেন, কোটাটা বাতিল না করে সংস্কার করা দরকার ছিল। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা বিষয়টা আমাদের নজরে আগে থেকেই ছিল। প্রতিবছরই বিষয়টি আমি মনিটরিং করছিলাম। কোনো সরকারি চাকরিতে যদি কোটা পূরণ না হয়, তাহলে মেধাতালিকা থেকে সেই পদ পূরণ করার জন্য আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম। এর মধ্যে আন্দোলন শুরু হলো, ভিসির বাড়িতে হামলা হলো। ক্যাম্পাসে এমন নৃশংসতা কেউ আগে দেখেনি। আমরাও তো ছাত্ররাজনীতি করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সারারাত ঘুমোতে পারি নাই। মেয়েরা হল থেকে বের আসছে, মিছিল করছে, সব দেখলাম। কিন্তু অনেক ধরনের মানুষ তো আছে। এই রাতে মেয়েদের যদি কিছু হয়ে যায়? আমি সবাইকে নির্দেশ দিলাম, মেয়েরা যেন নিরাপদে হলে ফেরে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তো কোটা পূরণ না হলে শূন্য পদ মেধাতালিকা থেকেই পূরণ করছিলাম। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি বলে, আমি কোটা চাই না। মেয়েরা বলছে, তারা প্রতিযোগিতা করে আসবে। তাহলে তো আর কোনো অসুবিধা নাই। কোটা না থাকলে আর সংস্কার নিয়েও আন্দোলন হবে না। তাই কোটাই বাতিল করে দিলাম।
তিনি বলেন, কিন্তু কোটা বাতিল করেও আরেক মুশকিল। তখন বলল কোটা চাই না। এবার আন্দোলনকারীরা-ই বলে, আমরা বাতিল চাই না, সংস্কার চাই। একবার বলে বাতিল, একবার বলে সংস্কার। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে আর কোনো কোটা থাকবে না। এখন কারও যদি কোটা দরকার হয়, সেটা বলুক আমাদের এই কোটা চাই। আন্দোলন ছাড়া আর কোটা দেবো না।
প্রসঙ্গত, এবারের নিউ ইয়র্ক সফরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গেও শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি সঙ্কট সামাল দিতে দূরদর্শী ভূমিকার জন্য নিউ ইয়র্কে ইন্টার প্রেস সার্ভিসের ‘ইন্টারন্যাশনাল এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’এবং গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশনের ‘স্পেশাল রিকগনিশন ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ’সম্মাননা দেওয়া হয় শেখ হাসিনাকে।
/ এআর /