ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

আলজাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

ফিক্সিংয়ে জড়িত পাকিস্তান-অষ্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের তারকা ক্রিকেটার

প্রকাশিত : ০১:৫৪ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার

 

ক্রিকেটে ফিক্সিং নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা। এতে বিশ্ব ক্রিকেটের বহু বড় বড় তারকার ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ পাকিস্তান, অষ্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের খেলোয়ারদের বিরুদ্ধে।

আল জাজিরার নতুন এই বোমায় তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে ক্রিকেট বিশ্বে। আইসিসি আল জাজিরার কাছে আবেদন জানিয়েছে, তাদের কাছে থাকা যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ দিয়ে নতুন ওঠা অভিযোগের তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য।

২০১১ থেকে ২০১২ সালে ১৫টি ম্যাচে মোট ২৬টির মত স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি আল জাজিরার। এসব দাবির পক্ষে তাদের কাছে সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমটি।

স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি জড়িত ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। ২০১১ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে মোট ৭টি ম্যাচে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়েছেন ব্রিটিশরা। এরপরই রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার নাম। অসি ক্রিকেটাররা স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়েছে ৫টি ম্যাচে। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা জড়িয়েছে ৩টি ম্যাচে। অন্য দেশের ক্রিকেটাররা স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়েছে একটি ম্যাচে।

আল জাজিরাই তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাদের তদন্তে যে ১৫টি ম্যাচে ২৬বার ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠে এসেছে, সেগুলোর প্রতিটিই ছিল স্পট ফিক্সিং। যা ম্যাচের মধ্যে ছোট ছোট কিছু ঘটনা। যেগুলো দিয়ে পুরো ম্যাচের ফলকে প্রভাবিত করা হয়নি কিংবা এসব ফিক্সিংয়ের ঘটনায় পুরো ম্যাচের রেজাল্টে কোনো প্রভাব পড়েনি।

আল জাজিরা ফিক্সিংয়ের তদন্ত করতে গিয়ে এক ভারতীয় বাজিকরের সঙ্গে অন্য আরেকজনের ফোন কলের রেকর্ড করায়ত্ব করেছে। ভারতীয় ওই বাজিকর সাংগঠনিকভাবেই নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে থাকেন। তবে সেই বাজিকর নিজেও জানেন না তার ফোনকল রেকর্ড ফাঁস হয়ে গেছে।

যে সব ম্যাচে ফিক্সিংয়ের ঘটনা ঘটেছে, এর মধ্যে লর্ডসে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড বনাম ভারতের টেস্ট ম্যাচ, কেপটাউনে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ম্যাচ এবং আরব আমিরাতে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার অনুষ্ঠিত কয়েকটি ম্যাচ রয়েছে।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সন্দেহজনক বাজিকররা সবচেয়ে বেশি টার্গেট করে ব্যাটসম্যানদের। তাদের সঙ্গে চুক্তিতে রাজি হলে নির্দিষ্ট সেই ব্যাটসম্যান বাজিকরদের কথামত ম্যাচে পারফর্ম করে থাকে। যার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন নামকরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারও। যদিও আল জাজিরা সেসব ক্রিকেটারদের কারও নাম প্রকাশ করেনি।

 আল জাজিরা চলতি বছরের মে মাসে ফিক্সিং নিয়ে প্রথম ডকুমেন্টারি প্রকাশ করে। সেখানে তারা সামনে নিয়ে এসেছিল জুয়াড়ি আনিল মুনাওয়ারকে। ভারতের মুম্বাই ভিত্তিক এই জুয়াড়ি ২০১০ সাল থেকে ক্রিকেট জুয়ার সঙ্গে জড়িত। অধিকাংশ সময়ই তিনি ব্যায় করেন দুবাই কিংবা আবু ধাবিতে।

তবে আল জাজিরার পক্ষ থেকে তোলা নতুন অভিযোগের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ড। তারা সরাসরি জানিয়েছে, কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণছাড়াই মনগড়া একটি রিপোর্ট বানিয়ে দিলে হয় না।

তবুও ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘ক্রিকেটের ইনটিগ্রিটি রক্ষায় তবুও আমরা বেশ সিরিয়াস। প্রয়োজন হলে আমরা নিজেরা এ বিষয়ে তদন্ত করবো কিংবা আইসিসিকে পূর্ণ সহযোগিতা করবো।’

সূত্র : আলজাজিরা।

/ এআর /