‘জলবায়ু পরির্তন মোকাবেলায় ক্ষয়-ক্ষতি পরিমাপ প্রয়োজন’
প্রকাশিত : ১১:২৫ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার

জলবায়ু পরির্তনজনিত দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতির মাত্রা নিরুপন করার জন্য বাংলাদেশে একটি সুনির্র্দিষ্ট কাঠামো দরকার। যে কাঠামো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়-ক্ষতি পরিমাপ, ক্ষতিপূরণ ও নীতিনির্ধারণে সহযোগিতা করবে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন ও দাবি আদায়ে সহযোগিতা করবে এই কাঠামো।
সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে একশনএইড বাংলাদেশ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত একটি বহুপাক্ষিক আলোচনায় এমন কথা বলেন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও সরকারি কর্মকর্তাগণ। ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়-ক্ষতি’বিষষয়ক এই আলোচনায় অনেকগুলো গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন আয়োজকরা, যার মূল লক্ষ্য ছিল ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপনে একটি জাতীয় কাঠামো তৈরিতে সহযোগিতা করা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই একশনএইড বাংলাদেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়-এর যৌথ উদ্যোগে দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপন এবং এর জন্য একটি জাতীয় কাঠামোর বিভিন্ন দিক নিয়ে একটি ধারণাপত্র তুলে ধরেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়-এর অতিরিক্ত সচিব সত্য ব্রত সাহা। সেখানে তিনি বলেন, জাতিসংঘের কয়েকটি কয়েকটি প্রতিবেদনে বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০০৫ থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমান হতে পারে প্রায় ১২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশের জিডিপির ৫ শতাংশ। তবে এ ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান বিস্তারিত জানা, পরিমাপ করা, বোঝা ও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কাঠামো দরকর। যে কাঠামোতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাপের পদ্ধতি ও নিরুপনসহ বিভিন্ন দিক থাকবে।
আইসিসিএডি এর পরিচালক ড. সালিমুল হক বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত প্রশমন ও অভিযোজন নিয়ে কাজ করেছে। তবে আসলেই কি পরিমান ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হচ্ছে, তা নিয়ে এখন কাজ করা দরকার। সম্প্রতি আইপিসিসি প্রকাশিত ১.৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোজন বা প্রশমনের মাধ্যমে ক্ষয়-ক্ষতি পুরোপুরি নিরসন সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট কাঠামো, যেটি ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপন করবে।
এরপরই ক্ষয়-ক্ষতি পরিমান নির্ধারণে প্রান্তিক পর্যাযের মানুষের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে একটি আলোচনাপত্র তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশর জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের প্রধান তানজির হোসেন। যেখানে তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে একজন সাধারণ মানুষের আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কি সমস্যা হচ্ছে তা নিরুপন করা দরকার। সে কারণে, সধারণ মানুষকে যুক্ত করে তাদের ধারণা, অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়নের আলোকে একটি কমিউনিটি ভিত্তিক ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ কাঠামো তৈরি করতে হবে। যেটি সরকারসহ সব পক্ষকে একটি সঠিক ধারণা দেবে ক্ষয়-ক্ষতি বিষয়ে। যার আলোকে ধনী দেশসহ যারা জলবায়ূ পরির্তনের জন্য দায়ী, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারবো। একইসঙ্গে আমরা ক্ষয়-ক্ষতির প্রেক্ষাপটে জাতীয়ভাবে কি উদ্যোগ নিতে হবে তাও বুঝতে পারবো।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশর অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঝুঁকিতে পরছে মানুষের স্বাস্থ্য, বাসস্থান, জমি ও নদী। এর একটি সঠিক হিসাব আমাদের থাকা উচিত। যাতে সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপনে সঠিক উদ্যোগ নিতে পারে এবং জলবায়ু সম্মেলনের মত বড় পরিসরে আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরতে পারি।
এসএইচ/