চাকরির নামে বেকারদের টার্গেট করে প্রতারণা, গ্রেফতার ৭
প্রকাশিত : ০৫:৫৫ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৭:৩২ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০১৮ মঙ্গলবার

বেকার যুবকদের ট্রেনিং এর মাধ্যমে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের ভুয়া একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৭ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেসটিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) ঢাকা মেট্রোর দক্ষিণ বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. এনামুল কবির এর নেতৃত্বে সিআইডি রমনা ইউনিটের একটি দল গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানাধীন আমান্তা এসএইচ টাওয়ারের ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ এর সিটি এজেন্সি অফিস থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় মালিবাগ সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার এনামুল কবির।
তিনি বলেন, ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ একটি ভুয়া নিয়োগ প্রতিষ্ঠান। বেকারদের নিয়োগের কথা বলে তারা জামানত হিসেবে টাকা জমা রেখে তা আত্মসাৎ করে। এই গ্রুপের সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
এনামুল কবির বলেন, গত ২৫ অক্টোবর রাজধানীর দক্ষিণখানের গাজী টাওয়ারের ৫ম তলা থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মাধ্যমেই অপরাধ চক্রের এই হোতাদের ধরা হয়। তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যুবকদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে ট্রেনিং করায়। কিন্তু পরবর্তীতে চাকরির জন্য প্রার্থীরা চাপ দিতে থাকলে তারা তাদেরকে আরও লোক নিয়ে আসার জন্য বলে। নতুন লোকদের কাছ থেকেও তারা বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নেয়। এভাবে এমএলএম পদ্ধতিতে তারা মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে প্রতারণা করে আসছে।
এনামুল কবির জানান, তারা এই যুবকদেরকে ১৫-২০ দিনের একটা কর্মশালা করায় এতে "উন্নত জীবন কেমন হবে বা কেমন করে গঠন করতে হবে" এই সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়। তারা প্রতি জনের কাছ থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করে থাকে চাকরি দেবার নাম করে। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে আর চাকরিতো দেওয়া হয়ই না বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিতে থাকে।
তিনি আরও বলে, আমরা এ ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। ২০১০ সাল থেকে ‘লাইফওয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামক এই প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে। তারা মানুষের কোটি কোটি টাকা ইতিমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে।
বিশেষ এ অভিযানে গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্যরা হলেন- ঠাকুরগাঁ হরিপুরের বাবুল হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩০), পাবনা ঈশ্বরদীর রেজাউল হকের ছেলে আরিফুল হক পলাশ (৩০), নাটোর বড়াইগ্রাম এর আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে লিটন রনি (২৫), পাবনা ঈশ্বরদীর আব্দুল খালেক সরদারের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৫), নাটোর বড়াইগ্রাম এর মমতাজ আলীর ছেলে আব্দুল কাদের (৩৫), সিরাজগঞ্জ কাজিপুর এর আবদুল হামিদের ছেলে আব্দুস সালাম (২৬), নেত্রকোনা কলমাকান্দা আর গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা (৩১)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে সিটিসি এলইডি মনিটর ১০টি, রাইস কুকার একটি, একটি ডিনার সেট, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মার্কেটিং লেখা একটি ক্রেস্ট, সাপ্তাহিক ইনসেনটিভ এর তালিকা, সিটি ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাব নাম্বার, টাকা জমা প্রদানের রশিদ বই, ট্রেনিংয়ের নামের তালিকা সম্বলিত খাতা, পূরনকৃত সদস্য ফরম ১০ টি, অফিসের টাকা লেনদেনের লেজার খাতা, অফিসে ব্যবহৃত ৩ টি ডিজিটাল সিল, অস্পষ্ট ও ঘষামাজা একটি সিল এবং একটি সিপিও জব্দ করা হয়।
এসি