সবার চোখ আজ গণভবনের দিকে
প্রকাশিত : ০৬:১১ পিএম, ১ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৬:২৩ পিএম, ১ নভেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

বর্তমান জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে আজ সন্ধ্যায় গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে৷ তাই আজ সবার চোখ গণভবনের দিকে৷ দুপক্ষই সংলাপে সাফল্য আশা করছে৷
নির্বাচনকালীন সংকট নিয়ে নিকট অতীতের কোনো রাজনৈতিক সংলাপই ফলপ্রসূ হয়নি৷ এই সংলাপে সরকারি দলের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তার সঙ্গে থাকবেন আওয়ামী লীগ ও ১৪-দলীয় জোটের আরও ২২ নেতা৷ অপর পক্ষে থাকছেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় ১৬ নেতা৷ এর মধ্যে বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির পাঁচ জন জ্যেষ্ঠ নেতা অংশ নেবেন৷
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা বলছেন, সাত দফা দাবি নিয়েই তারা সংলাপে আলোচনা করবেন৷ ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার মধ্যে মূল দাবি প্রথমটি৷ সেটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, আলোচনা করে নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার৷ দাবি মেনে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবেন তারা৷
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ সে সময় ৩০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়৷ আর সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ছিল ১৫টি৷ ওই সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ৭ এপ্রিল, তেজগাঁওয়ে অবস্থিত তখনকার জাতীয় সংসদ ভবনে৷ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৩টিতে জয়লাভ করে৷ বঙ্গবন্ধু সে সময় ঢাকা-১২ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন৷
তবে ঐক্যফ্রন্টের সূত্র বলছে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রশ্নে সংবিধান সংশোধনে সরকারি দল রাজি না হলে তারা তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবিতে জোর দেবেন৷ সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনের বিষয় নেই৷ এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার৷ আর এটা মেনে নিলে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে বিকল্প প্রস্তাব দেবে৷ সেটা হলো, মন্ত্রিসভার ১০ শতাংশ সদস্য যেহেতু টেকনোক্র্যাট কোটা থেকে নেওয়ার বিধান আছে, সেখানে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নেওয়ার প্রস্তাব থাকবে৷
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগ মুহূর্তে এই সংলাপ আসলে কী ফল বয়ে আনছে তাই দেখার প্রত্যাশায় সবাই৷ তবে বিএনপি এখনো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে৷ কারণ, সংলাপে রাজি হওয়ার পরে পরপর দু`দিন দু`টি আদালতে দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাজার রায় হয়েছে৷ এরপর বুধবার বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করার জন্য হাইকোর্ট একটা আদেশ দেন৷ যার ফলে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে থাকাটা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে৷
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর সাড়া দেখে সংলাপের আমন্ত্রণ চেয়ে বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন৷ ওই রাতেই তাদের ২ নভেম্বর শুক্রবার সংলাপের তারিখ জানিয়ে চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী৷ এরপর ৫ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটায় জাতীয় পার্টিকে সংলাপের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্ধারিত সংলাপে অংশ নিলেও নৈশভোজে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট৷
সংলাপ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন দাবি ও লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা হতে পারে৷ তবে সংবিধানের আলোকে সিদ্ধান্ত হবে৷
তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে।
এসএইচ/