ঢাকা, রবিবার   ০৫ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২২ ১৪৩১

খাবারে কৃত্রিম রং হতে পারে ক্যান্সার

মাহ্ফুজা নাসরীন (শম্পা)

প্রকাশিত : ০৪:৩৮ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:০২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ শনিবার

খাবারকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় কারার জন্য খাবারে বিভিন্ন ধরনের রং মিশানো হয়ে থাকে। সাধারনত -চকলেট , ক্যান্ডি, মিষ্টি, সস, জুস, চিপস্ ইত্যাদি। সর্বত্রই খাবার লোভনীয় করে তুলতে মেশানো হচ্ছে রং। যা আমাদেরকে শারীরিক ভাবে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে, কিডনি, হৃদপিন্ড, অস্থি-মজ্জা সহ সমগ্র দেহ-যন্ত্রের! লোভনীয় রং ডেকে আনতে পারে ক্যান্সার এমনকি, ক্ষতি করতে পারে লিভার এবং কিডনির৷ হতে পারে মস্তিষ্কের ক্ষতি এবং গর্ভপাতও ৷

খাবারে যে রং মেশানো হয় তা সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক রং- শুধুমাত্র খাবারকে লোভনীয় করতে প্রাকৃতিক রং ব্যাবহার করা হয়। গাজর, বিট, হলুদ, জাফরান ইত্যাদি দিয়ে এসব রং তৈরি করা হয়। এসমস্ত রং শরীরের কোন ধরনের ক্ষতি করে না। বরং কিছু  স্বাস্থ্য গুনও আছে।

রাসায়নিক রং- আরেক প্রকার খাবারের রং হচ্ছে রাসায়নিক ভাবে তৈরি রং। যা মূলতো পেট্রলিয়াম জাতীয় পদার্থ। যেমন—yellow- 4,yellow-5,red-3, red-40 ইত্যাদি। এসকল রং স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর।

শুধুমাত্র খাবারকে আকর্ষণীয় করতে এসব রং ব্যবহার হচ্ছে। মুলুত এসব রং দরজা, জানালা, জুতা, ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়। যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

প্রাকৃতিক রং ছাড়া বাকি সব রং ই স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এসমস্ত খাবার গ্রহণের ফলে আমাদের দেহে দেখা দেয় নানা রোগের উপসর্গ যেমন--এলার্জি, চর্মরোগ এছাড়া ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যারা বেশি পরিমানে রং দেয়া খাবার খায় তাদের ADHD(Attention Deficit Hyperactivity Disorder) দেখা দেয়। অর্থাৎ তারা খুব অমনোযোগী হয়ে পরে কোন কিছু তে মনোযোগ দিতে পারে না ফলে পড়ালেখায় খারাপ করে, অতিরিক্ত চঞ্চলতা দেখা দেয়, মারমুখী হয়ে উঠে।

খাবারের রং সম্পূর্ন বিষাক্ত রাসায়নিক একটা পদার্থ। ফলে যখন এই রাসায়নিক পদার্থ আমাদের দেহে প্রবেশ করে। তখন তা আমাদের দেহে সুস্থ কোষ গুলোকে ধংস করে দিয়ে ক্যানসার তৈরি করে। এছাড়া গর্ভবতী মা যদি এইসমস্ত রং দেয়া খাবার খান তাহলে তার গর্ভস্থ সন্তান প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম লাভ করা স্বাভাবিক।

এছাড়া দীর্ঘ দিন রং দেয়া খাবার গ্রহণের ফলে কিডনির বিভন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয় এমনকি কিডনি সম্পূর্ন অকেজোও হয়ে যেতে পারে। খাবারে রং ব্যাবহারের ফলে খাবারের যে প্রাকৃতিক রং থাকে তা নষ্ট করার সাথে সাথে খাবারের পুষ্টি গুনাগুনও নষ্ট করে ফেলে।  তাই এসমস্ত পুষ্টিহীন,  মারাত্মক শারীরিক সমস্যা সৃষ্টিকারী রং মেশানো খাবার থেকে বাঁচতে  রাসায়নিক রং দেয়া খাবার থেকে আমাদের সবাই কে বিরত থাকতে হবে।

 

লেখক: মাহ্ফুজা নাসরীন (শম্পা) নিউট্রিশনিস্ট৷ আল রাজী ইসলামিয়া হসপিটাল। বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা।