ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৩ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ১৮ ১৪৩২

হুইলচেয়ারে বিশ্ব ভ্রমণ

প্রকাশিত : ০২:৫৫ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার

স্বপ্ন যদি থাকে তবে পর্বতও আহরণ করা যায়। তবে সে জন্য থাকতে হবে অদম্য ইচ্ছাশক্তি। এমনই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন দুর্ঘটনায় পা হারানো দুই প্রবীণ গিলিউম ফেরাল ও মাইক লমবার্গ। গিলিউম ফেরাল ১৯৬০ সালে মাদাগাস্কারের তানানরাইভ শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত সুইস নাগরিক মাইক লমবার্গ।

মাদাগাস্কারের তানানরাইভ শহরে জন্মগ্রহণ করলেও গিলিউম ফেরাল পাড়ি জমান ফ্রান্সে। সেখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি ১৯ বছর বয়স থেকে শেখেন বিমান চালানো। সদস্য হন অ্যারো ক্লাবেরও। একটি বিমান দুর্ঘটনায় দুই পা অচল হয়ে যায় তার। দুই বছর রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে কাটিয়ে একটি ব্যাংকে কাজ শুরু করেন তিনি। ২০১৭ সালে আবার শুরু করেন ফ্লাইট চালানো। নিজের মতো প্রতিবন্ধীদের উৎসাহিত করতে ৭টি দেশ ঘুরে প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন চট্টগ্রামে।

দুর্ঘটনায় পা অচল হয়ে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত সুইস নাগরিক মাইক লমবার্গও এসেছেন ১০টি দেশ ঘুরে। তিনি পেশাদার বিমান পাইলট। সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন প্রায় ১৮ বছর আগে। দুর্ঘটনায় পা হারালেও জীবনে তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। অদম্য ইচ্ছা শক্তি দিয়ে জয় করেছেন বিশ্ব। প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে আকাশপথে পুরো বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছেন।

গতকাল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে বিশ্বজয়ের গল্প শোনালেন হুইলচেয়ারে বসে বিমান চালানো দুই পাইলট।
গিলিউম ফেরাল বলেন, ‘২৫ বছর বয়সে বিমান দুর্ঘটনায় দুই পা অচল হয়ে যায় আমার। তারপরও আমি নিজেকে দমিয়ে রাখিনি। ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য আবার বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু করি।’

মাইক লমবার্গ বলেন, ‘আমি পেশাদার বিমানচালক ছিলাম। ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় কোমরের স্পাইনাল কডে সমস্যা হওয়ায় দুই পা অচল হয়ে যায় আমার। ১৯৯৯ সাল থেকে আবারও বিমান চালানো শুরু করি। আমার মতো প্রতিবন্ধীদের উৎসাহিত করতে হ্যান্ডিফ্লাইট অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি। প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। সমান সুযোগ দেওয়া হলে তারাও এগিয়ে যাবে।’
জানা যায়, হ্যান্ডিফ্লাইট অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের আমন্ত্রণে গত ২১ ডিসেম্বর আলাদা আলাদা ফ্লাইটে করে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করেন গিলিউম ফেরাল ও মাইক লমবার্গ। তাদের এ ভ্রমণের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে আছেন দানিয়েল।

ইতালি, গ্রিস, মিসর, সৌদি আরব, দুবাই, পাকিস্তান ও ভারতের নাগপুর হয়ে চট্টগ্রাম এসেছেন তারা। বুধবার চট্টগ্রাম থেকে থাইল্যান্ডের চিংমাই যাবেন এই দু`জন। আগামী দুই মাসে আরও ৩০টিসহ মোট ৪০টি দেশ ভ্রমণ করে সুইজারল্যান্ডে ফিরে যাবেন তারা।
এসএ/