ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

পৃথিবীর সব থেকে দামি বিচ্ছেদ!

প্রকাশিত : ০২:৪২ পিএম, ১১ জানুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৩:২৬ পিএম, ১১ জানুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার

সারা বিশ্বকে অবাক করে গতকালই টুইট করে ২৫ বছরের সঙ্গী ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে নিজের বিচ্ছেদের কথা জানিয়েছিলেন পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি এবং আমাজনের মালিক জেফ বেজোস। আর ঘটনাক্রমে তা-ই হয়ে দাঁড়াচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে দামি বিবাহ বিচ্ছেদ।

এখনও পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে নিজের প্রাক্তন স্ত্রীকে আনুমানিক ৪.২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি দিতে হবে জেফকে। খোরপোশ হিসেবে এই পরিমাণ টাকা দেওয়ার নজির এখনও পাওয়া যায়নি পৃথিবীর ইতিহাসে। যদিও আদালতের মাধ্যমে এই সম্পত্তি ভাগ করা হবে, নাকি নিজেরাই বোঝাপড়া করে নেবেন, তা জানা যায়নি এখনও।

২০১৭ সালে পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি হয়েছিলেন জেফ। এখন তার সম্পত্তির পরিমান ১৩৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৯.৬ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ টাকা তাকে দিতে হবে ম্যাকেঞ্জে বেজোসকে। সেই কারণে এই ডিভোর্স এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর সব থেকে দামি বিবাহ বিচ্ছেদ।

২৫ বছর আগে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন জেফ এবং ম্যাকেঞ্জি। আর ঠিক পঁচিশ বছর আগে ১৯৯৪ সালেই অনলাইন-রিটেল সংস্থা আমাজন তৈরি করেছিলেন জেফ। আবার নিজেদের বিয়ের পঁচিশতম বছরেই মাইক্রোসফট এবং অ্যাপলকে হারিয়ে পৃথিবীর ধনীতম কোম্পানি হিসেবে উঠে আসে আমাজন।

অর্থাৎ, যে সময়কালে ধনকুবের হয়ে উঠছেন জেফ, সেই সময় একসঙ্গেই ছিলেন জেফ এবং ম্যাকেঞ্জি। টুইট করে যৌথ বিবৃতি দিয়ে নিজেদের বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেছেন জেফ এবং ম্যাকেঞ্জি। সেখানে তারা বলেছেন, ‘দীর্ঘ দিনের ভালবাসা এবং বিরহের পর আমরা সরকারি ভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আমরা খুবই ভাগ্যবান, তাই একে অন্যকে পেয়েছি। সম্পর্কের প্রতিটা বছরের জন্য আমরা একে অন্যের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের দাম্পত্য জীবন ছিল খুবই সুখের। আমাদের ভবিষ্যৎও হবে খুব উজ্জ্বল। সম্পর্কের তকমা বদলে গেলেও আমরা পরস্পরের বন্ধু হয়ে বাকি জীবন কাটাব।’

জেফের অর্জিত সম্পত্তিতে ম্যাকেঞ্জির আইনমাফিক অংশীদারিত্ব আছে এবং সেই সম্পত্তি প্রায় সমান দু’ভাগে ভাগ হবে, এমনটাই মত আইনজীবীদের। কারণ গত ২৫ বছরেই ধন সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন বেজোস দম্পতি, আর ২৫ বছর ধরে সেই সাম্রাজ্য গড়ে তোলার পিছনে উল্লেখযোগ্য অবদান আছে ম্যাকেঞ্জি বেজোসেরও।

পাশাপাশি তাদের বাড়ি ওয়াশিংটনে এবং সেই বাড়ি যৌথ সম্পত্তি হিসেবে নথিভূক্ত। ওয়াশিংটনের নিয়ম অনুযায়ী নিজেরা বোঝাপড়া না করলে বিবাহিত সম্পর্কে থাকা অবস্থায় কোনও দম্পতি যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে, তার উপর অধিকার স্বামী এবং স্ত্রী, দু’জনেরই। তাই গত পঁচিশ বছরের সম্পত্তি বিবেচনা করলে প্রায় অর্ধেক ভাগ হবে গোটা সম্পত্তি, যদি না তারা নিজেরা বোঝাপড়া করে নিজেদের মতো সম্পত্তি ভাগাভাগি না করেন।

আর তা হলে এই বিচ্ছেদের ফলে পৃথিবীর ধনীতম মহিলা হয়ে যাবেন ম্যাকেঞ্জি, যদিও ধনীতম ব্যক্তির মুকুট হারাবেন জেফ বেজোস। ফলে আবার পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি হয়ে যাবেন মাইক্রোসফট প্রধান বিল গেটস। অন্য দিকে ফেসবুক মালিক মার্ক জাকারবার্গ এবং টেসলা প্রধান এলন মাস্কের থেকেও বড়লোক হয়ে যাবে ম্যাকেঞ্জি।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার

এমএইচ/