ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

‘আমরা ভারত ও চীনের বাজারে ব্যবসা সম্প্রসারণে গুরুত্ব দিচ্ছি’

প্রকাশিত : ১১:৫৯ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ সোমবার

(ফাইল ফটো)

(ফাইল ফটো)

ভারতের বাজারে ব্যবসা সম্প্রসারণ করা গেলে দেশের রফতানি বাড়বে বেশ কয়েকগুণ। তাই সেদিকে এখন নজর দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াস মৃধা। তিনি মনে করেন, ভারতের পরেই চীনের বাজার নিয়ে বাংলাদেশের মনোযোগী হওয়া উচিৎ। সম্প্রতি একুশে টেলিভিশন ব্যবসা বাণিজ্য কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও শিল্পখাতবিষয়ক অনুষ্ঠান একুশে বিজনেস- এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, কৃষিজাত দ্রব্য থেকে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রফতানির ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া উচিৎ।

একুশে টেলিভিশন: নতুন বছর, নতুন সরকার। এ অবস্থায় ভোগ্য পণ্যের বাজারে নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা কী?

ইলিয়াস মৃধা: ভোগ্য পণ্যের বাজার খুব চ্যালেঞ্জিং। এ বাজারটা উঠানামা করে। নতুন বছর। বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে। যেহেতু স্কুল খুলে গেছে, নতুন বছর, সব মিলিয়ে অর্থনীতি এ সময়টাতে চাঙ্গা হয়ে উঠছে। আরেকটা ব্যাপার হলো এখন শীতকাল। শীতকালে কনজ্যুমার বাজারটা গরম থাকে। শীতকালে পিকনিকে যাচ্ছে মানুষ। এতেও বাজারে একটা প্রভাব পড়ছে। পাশাপাশি যোগ হয়েছে বাণিজ্য মেলা। বাণিজ্য মেলা ভোগ্যপণ্য বাজারে একটা প্রভাব বিস্তার করে। কারণ, ব্যবসায়ীরা তার উৎপাদিত পণ্য ভোক্তার সামনে তুলে ধরার জন্য এটা একটা বড় সুযোগ। পাশাপাশি ব্যবসায়ী তার উৎপাদিত পণ্য নিয়ে গ্রাহকের মতামত জানতে পারছে। ফলে তার পণ্যের দাম নির্ধারণ, মান নিয়ন্ত্রণ- সবকিছুতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। বছরের শুরুতে এসব মিলিয়ে আমরা আশাবাদী যে নতুন বছরে ভোগ্যপণ্যের বাজারটা ভালোই যাবে।

একুশে টেলিভিশন: এগ্রো নিয়ে ভাবনা কি?

ইলিয়াস মৃধা: এবার আসি এগ্রো প্রসেসিংয়ের ক্ষেত্রে। এবছর উত্তরবঙ্গে টমেটোর অধিক ফলন হয়েছে। কারণ, অসময়ে বৃষ্টি হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি, মধ্যসত্ত্বভোগীকে বাদ দিয়ে সরাসরি কৃষককে লাভবান করানোর জন্য। আমরা এখন টমেটো কেচাপের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এটা চলবে। সব মিলিয়ে আমরা আশাবাদী, বছরটা ভালো যাবে।

একুশে টেলিভিশন: সরকার কৃষিজাত পণ্যকে প্রোডাক্ট অব দ্যা ইয়ার বলছে। আপনার অভিমত কী?

ইলিয়াস মৃধা: সরকার প্রোডাক্ট অব দ্যা ইয়ার ঘোষণা করেছে। সেজন্য সরকারকে ধন্যবাদ। আমাদের সব সময় চাওয়া এগ্রো প্রসেসিং ও এগ্রো প্রোডাক্টের বাজার সম্প্রসারণ করা। যাতে করে সরাসরি কৃষকরা লাভবান হতে পারে। এই সরকারও কৃষিকে গুরুত্বের দিক থেকে থার্ড সেক্টরে রেখেছে। কৃষিজাত পণ্য যদি আপনি রফতানি করেন তার শতভাগ কাঁচামাল কিন্তু বাংলাদেশের। কিন্তু অন্যান্য সেক্টরে বেশীরভাগ কাঁচামাল আসে বিদেশ থেকে। ফলে মোট লাভের একটা বড় অংশ কিন্তু দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।
ফলে কৃষি সেক্টরটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। সরকারও ব্যাপারটাতে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা যারা শুধু কৃষি প্রক্রিয়া নয়, বরং কৃষিপণ্য থেকে খাদ্য দ্রব্য উৎপাদনে জড়িত, আমরা কিন্তু আর মান্ধাতার আমলের কৃষিতে নেই। বরং আমরা অনেক ম্যাকানাইজড। ফলে ভবিষ্যতে আমাদের উৎপাদন বাড়বে কিন্তু উৎপাদন খরচ কমবে। যেহেতু আমরা খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ তাই আমরা যদি কৃষিজাত পণ্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্য বিদেশে রফতানি করি তাহলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

একুশে টেলিভিশন: গ্লোবাল বিজনেসে আপনারা কতোটুকু যেতে পেরেছেন বা নতুন ব্যবসার সম্প্রসারণে আপনাদের পরিকল্পনা কী?

ইলিয়াস মৃধা: কিছুদিন আগে যখন ব্যবসায়ীদের সম্মেলন হয়েছিল তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আপনাদের রফতানির জন্য বাজার খুঁজুন। সরকার সহযোগিতা করবে। আপনারা জেনে খুশী হবেন যে, আন্তার্জাতিক বাজারে যেসকল বড় বড় বাণিজ্যমেলাগুলো হয়ে থাকে আমরা প্রাণ- এর পক্ষ থেকে সেখানে অংশগ্রহণ করে থাকি। ইউরোপ - আমেরিকায় আমাদের রফতানি বাজার বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। সর্বোপরি রফতানির জন্য আমাদের বড় বাজার হচ্ছে ভারত। ভারতের বাজারে আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমাদের লক্ষ্য থাকবে চীনের বাজারে যাওয়ার জন্য। তবে ইন্ডিয়ার বাজারটি এতো বড় এটি কয়েকটি বাংলাদেশ। আমারা যদি ভারতের বাজারে ঠিক মতো ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারি তাহলে আমাদের রফতানি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব।

একুশে টেলিভিশন: কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন। কীভাবে এখাত কে বাড়ানো যায় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলাম।

ইলিয়াস মৃধা: এই সেক্টরকে সম্প্রসারিত করতে হলে শুধু ফলমূল বা সবজি নয়, বরং ডেইরি শিল্পের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। আমরা এ সেক্টর নিয়ে কাজ করছি। এর ফলে দেশের দুগ্ধশিল্পের সম্প্রসারণ ঘটবে। দেশের উত্তরাঞ্চলে দুগ্ধশিল্পের সম্প্রসারণের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রাণ ডেইরি এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।

একুশে টেলিভিশন: আপনাকে ধন্যবাদ।
ইলিয়াস মৃধা: আপনাকেও ধন্যবাদ।

আআ/এসএইচ/