ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৪ ১৪৩২

বিদিশাকে দেখে এরশাদের চোখে পানি  

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৫৮ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ বুধবার

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সেখানে তার মৃত্যুর গুঞ্জন উঠেছিল। জাতীয় পার্টি সেটা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে। এরশাদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে গত রবিবার চিকিৎসার জন্য তিনি সিঙ্গাপুর যান।       

এরশাদের মৃত্যু হয়েছে এমন ‘গুজব’ উঠায় ফেসবুকে আবেগঘন এক স্ট্যাটাস দেন তার সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদ। স্ট্যাটাসে তিনি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বাঁচতে দিতে অনুরোধ জানান। সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে সিএমএইচ হাসপাতালে বিদিশাকে দেখে এরশাদের চোখে পানি এসেছিল বলে জানান তার সাবেক এই স্ত্রী।  

বিদিশা এরশাদের স্ট্যটাসটি নিম্নে তুলে ধরা হলো:

বিদিশা লিখেছেন, উনাকে আরও কিছুদিন বাঁচতে দিন। ফেসবুকে দেখেছি উনাকে মেরে ফেলেছেন। বিশ্বাস করুন, উনি আরও কিছুদিন বাঁচতে চান আমাদের ছেলে এরিকের জন্য। উনি পৃথিবীতে এরিক ছাড়া বোধ হয় আর কাউকে এতো ভালোবাসেননি। আমিও সব মাতৃত্বের লড়াই করার পরও ছেলেকে বাবা থেকে আলাদা করতে পারিনি।

তিনি লিখেন, সব থেকে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছি আমি আমার সন্তানকে কাছে না রেখে, চোখে না দেখে। তারপরও আমাকে পরম আনন্দ দেয় বাবা ছেলের খুনসুটি দেখে। কোনো শর্তের বন্ধন নেই। বাবা-ছেলের বয়সের পার্থক্যের পরও তাদের মধ্যে আড্ডা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক চোখে পড়ার মতো। ছেলেকে স্কুলে দিয়ে ও নিয়ে আসে একজন বৃদ্ধ পিতা। ছুটির দিনে বাবা-ছেলের একসঙ্গে ভ্রমণ। রাতে এরিক ছাড়া উনি ঘুমাতে পারেন না একদম। তাই তো গত সপ্তাহে আমি যখন সিএমএইচ গেলাম দেখতে, দেখি নাস্তা করেন নাই, অপেক্ষায় আছে এরিকের। দুপুরে এরিক স্কুল থেকে ফিরলে লাঞ্চ করবেন বললেন। আমাকে সরি বললেন, অনেক অন্যায় হয়ে গেছে আমার সঙ্গে যা সংশোধন করার উপায় নেই। তা অন্য প্রসঙ্গ। অনেক স্মৃতি চারণ করলেন তিনি।

বলেই ফেললেন, রাত জেগে এরিক নাকি বক বক করে, যা নাকি আমি করতাম এক কালে। উনি চোখ বন্ধ করলে এরিক নাকি চোখ খুলে দেয়, বলে আচ্ছা ড্যাডি এইবার তাহলে একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনাই, কিন্তু তুমি তো ঘুমাবে না আমার আগে। গান করতে করতে এরিক নিজেই ঘুমিয়ে পড়ে। আমিও নাকি একি কাজ করতাম অনেক বছর আগে। সেদিন উনার চোখে জল ছিল। জীবন মৃত্যুর এই শেষ সময়ে উনার উপলব্ধিগুলো নিশ্চয়ই মিথ্যা না। চল্লিশ মিনিট আমার হাত উনার দুই হাত দিয়ে ধরে বসে ছিলেন। চোখ দিয়ে ঝরছিল জল আমাদের দুজনেরই। আমাদের দুইজনের মধ্যে সময়ের গ্যাপটা অনেক বেশি হয়ে গেছে এতদিনে, তাই উনার জীবনে শেষ সময়ে আমি কোনো সেবা করতে পারলাম না।

এসি