ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কসমো স্কুল

যে আলো ছড়িয়ে পড়ছে দেশ থেকে দেশান্তরে 

আউয়াল চৌধুরী

প্রকাশিত : ০৬:২৮ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৩:২৩ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ রবিবার

‘আমি প্রথম, আমি পারি, আমি পারবো,’ এমন শব্দ উচ্ছ্বারণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাদের সকাল। এমন মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে জীবন গড়ার প্রত্যয়ে ছোট ছোট শিশু-কিশোরদের আওয়াজে প্রতিদিন মুখরিত হয় পাহাড়। যেখানে এক সময় ছিল সীমাহীন অন্ধকার সেখানে আজ জ্বলছে আলোর মশাল। অসংখ্যা শিশু-কিশোরের কণ্ঠে বেজে উঠছে শাশ্বত রাগীনির অমোঘ সুর-মূর্ছনা। এমন সূরের মূর্ছনা পাহাড় থেকে ছড়িয়ে পড়ছে দেশ থেকে দেশান্তরে।          

বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে মাত্র ৭টি শিশুকে নিয়ে, ২০০১ সালে দুর্গম পহাড়ের নিরিবিলি পরিবেশে বাঁশের বেড়া আর টিনের চালের ঘরে যাত্রা শুরু করেছিল কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আজ সেখানে পড়ালেখা করছে প্রায় ২০০০ ছাত্র-ছাত্রী।

সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, এতিম, অনাথ ও অসহায় শিশুদের হাতে শিক্ষার আলোর মশাল তুলে দিতে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। স্কুলটির লক্ষ্য শুধু গতানুগতিক শিক্ষা দেওয়া নয় বরং অবহেলিত শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক ও মানবিক গুণাবলীতে সমৃদ্ধ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। তাইতো রোজ পুব আকাশে সূর্য উঠার আগেই শুরু হয়ে যায় নিরব জ্ঞানচর্চা। সুশৃংখল পরিবেশে দিনভর চলে বিদ্যাচর্চা। পাঠদানের ফাঁকে চলে খেলাধূলা এবং সুকুমার বৃত্তি ও সাংস্কৃতিক চর্চা।

এসব শিশু-কিশোররা শুধু পড়ালেখায় সীমাবদ্ধ নেই। তাদেরকে গড়ে তোলা হচ্ছে এক সুশৃংখল নিয়মের মধ্যে দিয়ে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পড়া-লেখা, খেলা, ব্যায়াম, প্রার্থনা, খাওয়া সবকিছুই চলে রুটিন মাফিক। শিক্ষা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাফল্য দেখলে যে কেউ বিস্মিত হবেন। দক্ষ একদল শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে সামাজিকতা-নীতি-মূল্যবোধ-ধর্মসহ জীবনের প্রতিটি বিষয়ে পাঠদানের মাধ্যমে গড়ে তোলা হচ্ছে তাদেরকে ভিন্নভাবেই।       

স্কুলটি সম্পর্কে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এন্ড কলেজের তত্ত্বাবধায়ক সালেহ আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারাদেশে আমাদের ৩০টি ক্যাম্প আছে। তারা সমাজের বঞ্চিত ছেলে-মেয়েদের খুঁজে বের করে এখানে নিয়ে আসে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তাদেরকে এখানে পড়ালেখা করানো হয়। রয়েছে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা। বর্তমানে ২০টি জাতিগোষ্ঠীর ৬টি ধর্মের ২০০০ ছেলে-মেয়ে এই স্কুলে পড়ালেখা করছে। এখানে ছেলেদের জন্য ৬টি ও মেয়েদের জন্য ২টি হল রয়েছে। স্কুলে প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে মেডিটেশন, নৈতিক শিক্ষা কার্যক্রম, চারু ও কারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, খেলাধূলা এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসমূহের সংস্কৃতি চর্চা কার্যক্রম প্রভৃতি বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।    

শিশুকানন  

বান্দরবান লামার কোয়ান্টামমে এতিম শিশুদের জন্য তৈরি করা হয় শিশুকানন। ৫৪ জন এতিম শিশুকে নিয়ে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে এই শিশুকানন। এ শিশুদেরকে আন্তরিক পরিচর্যায় আলোকিত মানুষ করে গড়ে তোলাই এই কার্যক্রমের লক্ষ্য।         

নতুন শিশুকাননে স্থান পেয়েছে বাঙালি, মারমা, মুরং, চাক, ত্রিপুরা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা জাতিগোষ্ঠীর মোট ১৮১ জন শিশু। এ শিশুদের কেউ মাতৃহীন, কেউ পিতৃহীন, কারো মা-বাবা কেউই নেই, কেউ-বা আবার মা-বাবার বিচ্ছেদের ফলে অভিভাবকহীন। এমন নানা কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল এদের ভবিষ্যৎ। তাই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নিয়েছে এই শিশুদের অভিভাবকত্ব।  

ইতোমধ্যেই এ শিশুদের পাঠ কার্যক্রম শুরু হয়েছে কোয়ান্টামম-এর বোধিছড়া পাবলিক স্কুলে শিশু শেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। তাদের সার্বক্ষণিক দেখভাল ও যাবতীয় তদারকির জন্যে রয়েছে কোয়ান্টাম শিশুকানন আবাসিকের উদ্যমী ও অভিজ্ঞ কর্মীবৃন্দ। দেশের যে প্রান্তেই থাকবে কোনো অসহায় অভিভাবকহীন শিশু, কোয়ান্টাম হবে তার ঠিকানা– সে লক্ষ্যেই গড়ে উঠছে নতুন শিশুকাননের সব অবকাঠামো।   

শিশু সদন 

কোয়ান্টামের শিশুসদন বঞ্চিত কন্যাশিশুদের আশ্রয়স্থল। বঞ্চিত জনপদের বঞ্চিততম জনগোষ্ঠী হলো এই কন্যাশিশুরা। লেখাপড়া দূরে থাক দুবেলা পেটপুরে খেতেও পায়না তারা। মায়ের স্নেহে, বাবার আদরে একটি শিশু বেড়ে উঠবে - সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এসব শিশুদের ভাগ্যে তা জোটে নি এমন ছিন্নমূল অভিভাবকহীন নবজাত শিশুদের লালনের জন্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কোয়ান্টাম শিশুসদন। ২০০৪ সালে এসব মেয়ে শিশুদের জন্য গড়ে তোলা হয় এই শিশুসদন। বর্তমানে ৩২৬টি মেয়েশিশু রয়েছে এখানে। যারা বেড়ে উঠছে কোয়ান্টামেরই সন্তান হয়ে।        

কোয়ান্টাম শিক্ষার্থী ওরিয়েন্টেশন          

কোয়ান্টাম শিক্ষার্থী ওরিয়েন্টেশন সাফল্যের প্রয়োজনীয় নির্দেশনারই এক গ্রন্থনা যার আন্তরিক অনুসরণ ধাপে ধাপে একজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে যায় ক্লাসে ১ম ও জীবনে ১ম হওয়ার পথে। ২ দিনের এ ওরিয়েন্টেশনে শিক্ষার্থী শিক্ষক ও অভিভাবকসহ স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো ছাত্রছাত্রী কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট এতে অংশ নিতে পারে। বিষয়ভিত্তিক আলোচনার পাশাপাশি রয়েছে মেডিটেশন, এসাইনমেন্ট ও গ্রুপ ডিসকাশন। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের সমস্যাকে সঠিকভাবে শনাক্ত ও দূর করার প্রক্রিয়ায় শামিল হতে পারে।    

প্রতি ৫ কোয়ান্টার জন্য ১ কর্মী  

কসমো স্কুলের ক্যাম্পাসই শিক্ষার্থীদের ঘরবাড়ি। একটি পরিবারে একজন সন্তান যেভাবে লালন-পালন বা ভালোবাসা পায়, যে মমতা-যত্ন পায়, কসমো স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য কোয়ান্টামের প্রয়াস তার কম নয়, বরং বেশিই। খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে গোসল করানো, চুল-নখ কাটা, কাপড় পরানো, কাপড় ধোয়া- কসমো স্কুলের এক বিশাল কর্মীদল নিবেদিত এসব যত্নায়ন কার্যক্রমে। প্রতি পাঁচ কোয়ান্টার জন্যে এখানে রয়েছে একজন কর্মী। তারা সার্বক্ষণিক তাদের দেখাশোনা করে।      

 

ওরা অসুস্থ হয় খুবই কম!   

কসমো স্কুলের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয় খুবই কম! সুষম খাবার ও নিবিড় যত্নের ফলে তাদের স্বস্থ্যে সব সময় ভালো থাকে। তবে দুই হাজার শিশুর আবাসিক এই স্কুলে জরুরি যেকোন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য স্থাপন করা হয়েছে কোয়ান্টাম চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র ‘শাফিয়ান’, যেখানে প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ হয়। এছাড়া প্রতিটি আবাসনে আছে কয়েকজন করে সুস্বাস্থ্যয়ন কর্মী- যাদের কাজ হলো প্রতিদিন কোয়ান্টাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর রাখা।            

২৭টিরও বেশি মেধাসৃজন কার্যক্রম     

কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের শিক্ষার্থীরা মেধা ও সৃজনশীলতা বিকাশে লেখাপড়ার পাশাপাশি নানা ধরনের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মেধাসৃজন নামের এসব সহপাঠ কার্যক্রমে কসমো স্কুলের শতভাগ শিক্ষার্থীই অংশ নিয়ে থাকে। এই কার্যক্রমে আছে ২৭টিরও বেশি ইভেন্ট। ২০১৮ সালের জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার যন্ত্রসঙ্গীত বিভাগে প্রথম পুরস্কার পায় কসমো স্কুলেরই চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কী-বোর্ড বাদক। 

শিক্ষায় সাফল্যে            

কসমো স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে পাশের হার শতভাগ। কসমো কলেজের এইচএসসি উত্তীর্ণ কোয়ান্টারা উচ্চশিক্ষার জন্য ২০১২ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যেতে শুরু করে। এদের মধ্যে যারা পরীক্ষা দিয়েছে (৫৬ জন) মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে সুযোগ পেয়েছে সরকারি মেডিকেল কলেজসহ চুয়েট, বুয়েট এবং চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।  

২০১৫ ও ২০১৬ সালে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায় ৭জন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় ৬জন শিক্ষার্থী।

কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার জন্য ১০ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ১০ জন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়। এছাড়া মেডিকেলে ৩ জন, বুয়েটে ১ জন, চুয়েটে ১ জন এবং ৩ জন ভর্তি হয় হবিগঞ্জ, জামালপুর ও রংপুর মেডিকেল কলেজে।

এ বিষয়ে সালেহ আহমেদ বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি নয়, স্কুলের ২০১৭ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার রেজাল্ট ছিল অভাবনীয়। এই স্কুলের ছিল শতভাগ পাশ। পিইসিতে মোট ৯৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮১ জন জিপিএ-৫ পায় এবং ১৪ জন পায় জিপিএ-৪ গ্রেড। এভাবে প্রতিটি ক্লাসেই তাদের রেজাল্ট ইর্ষনীয়।      

শিক্ষার্থীদের ‘আমি পারি, আমি করবো, আমার জীবন আমি গড়বো’ এমন মন্ত্রে উজ্জীবিত করা হয়। এদের রেজাল্ট চমকে দিচ্ছে সবাইকে। পড়াশোনা, খেলা, ব্যায়াম, ধর্মচর্চা এবং মেডিটেশন এর মাধ্যমে তাদেরকে এমনভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে যার কারণে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা সাফল্যের চিহ্ন রেখে যাচ্ছে।         

এ বিষয়ে সালেহ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এই স্কুলের পাঠদান থেকে শুরু করে সবকিছুই পরিকল্পিতভাবে হয়ে থাকে। ভোর ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে কার্যক্রম। সরকারি নিয়মেই ক্লাস চলে। মেডিটেশন, স্কুল, খেলাধুলা সবকিছুই রুটিন মাফিক হয়ে থাকে। এখানকার শিক্ষার্থীদের দিনে তিন বেলা খাবার ও চারবার নাস্তা দেওয়া হয়। প্রতিদিনের নাস্তায় থাকে একটি সিদ্ধ ডিম, ছোলা, নিমপাতা, কালজিরা ভর্ত্তা, সয়াদুধ ও বাদাম। আর তিন বেলা খাবারেও সাপ্তাহিক রুটিন মাফিক মাছ-মাংস-সবজি থাকে। আর এখানে ছোটদের স্কুলে যাওয়ার আগে ও দুপুরের পর মেডিটেশন করানো হয়। বড়দের সন্ধ্যার সময় মেডিটেশন করানো হয়।’              

ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যে       

ক্রীড়াক্ষেত্রেও রয়েছে কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অসামান্য সাফল্যে। ‘অলিম্পিকে সোনা আমি জিতবোই’ এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে কোয়ান্টাম তার ক্রিড়া কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের খেলোয়াড়রা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাদের অসাধারণ নৈপুণ্য ক্রীড়াঙ্গনের মানুষদের দৃষ্টি পড়ে তাদের ওপর। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাদের সাফল্যের ভুয়সী প্রশংসা করেন।     

জিমন্যাস্টিকস 

কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের খেলোয়াড়রা ২০১৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৩২ তম জাতীয় বয়সভিত্তিক জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতায় ৫ টি স্বর্ণ, ৬ টি রৌপ্য ও ৩ টি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে সবার নজরে চলে আসে। এরপর ২০১৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৩৩ তম জাতীয় বয়সভিত্তিক জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতায় কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের খেলোয়াড়রা ৩ টি স্বর্ণ, ৩ টি রৌপ্য ও ৪ টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১০টি পদক লাভ করে। এর পরের বছরও তারা ৭ টি স্বর্ণ, ৬ টি রৌপ্য ও ৭ টি ব্রোঞ্জ পদকসহ মোট ২০ টি পদক অর্জন করে। ২০১৫ সালে ২১টির মধ্যে ২০টি পদক লাভ করে।   

২০১৫ সালে ইন্দো বাংলা গেমস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলে ৬ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের ১ জন খেলোয়াড় সুযোগ পায় এবং সে জাতীয় দলের সঙ্গে ক্যাম্পিংয়ে অংশগ্রহণ করে।   

২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় বয়সভিত্তিক ও সিনিয়র জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতায় ৯ টি স্বর্ণ, ১০ টি রৌপ্য ও ১০ টি ব্রোঞ্জ পদকসহ ৩৬ টি পদকের মধ্যে মোট ২৯ টি পদক অর্জন করে। এবারই প্রথমবারের মতো অনুর্ধ্ব ৮ বছর বালিকা বিভাগে বালিকা কোয়ান্টারা ২ টি ইভেন্টের ৬ টি পদকের ৫ টিই অর্জন করে।

২০১৭ সালে পল্টন জিমনেসিয়ামে অনুষ্ঠিত ৩য় জাতীয় বয়সভিত্তিক জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতা-২০১৭ এর বালক ও বালিকা বিভাগের বিভিন্ন বয়স ক্যাটাগরির ১৬ টি ইভেন্টে মোট ৫৩ টি পদকের মধ্যে ৩২ টি পদক অর্জন করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ১১ স্বর্ণ, ১০ টি রৌপ্য ও ১১ টি ব্রোঞ্জ পদক। ২০১৮ সালে সিঙ্গাপুর ওপেন জিমন্যাস্টিকসে ব্রোঞ্জ পদক পায়।

খো খো খেলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাফল্যে        

কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের খেলোয়াড়রা ২০০৯ সালে ১ম জাতীয় স্কুল খো খো প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এরপর ২০১২ সালে ৫ম জাতীয় খো খো প্রতিযোগিতায় রানার আপ হয় এবং ২০১৩ সালে রৌপ্য পদক অর্জন করে।       

২০১৫ সালে ঢাকার ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা কাপ খো খো টুর্নামেন্টে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ২০১৪ সালেও তারা চ্যাম্পিয়ন হয়।     

২০১৬ সালে ভারতের গৌহাটি ও শিলং -এ অনুষ্ঠিত ১২ তম সাউথ এশিয়ান গেমসের খো খো ইভেন্টের বাংলাদেশ পুরুষ দলে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের ১০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে এবং বাংলাদেশ দলের জন্য রৌপ্য অর্জন করেছে। এই প্রথমবারের মতো সাউথ এশিয়ান গেমস বা এস এ গেমসে অনুষ্ঠিত খো খো ইভেন্টে ভারত ছাড়াও শ্রীলংকা, নেপাল ও পাকিস্তান অংশগ্রহণ করে।

ভারতের ইন্দোর (মধ্য প্রদেশ) ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ৩য় এশিয়ান খো খো চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ জাতীয় খো খো দল অংশগ্রহণ করে রৌপ্য পদক অর্জন করে। জাতীয় দলের ১২ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের ১০ (দশ) জন খেলোয়াড় অংশ নেয়। টুর্নামেন্টে ৫টি দেশ অংশ নেয়। সেগুলো হচ্ছে ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, বাংলাদেশ ও উত্তর কোরিয়া।

এছাড়া, ৮ম বাংলাদেশ গেমসে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক অর্জন, জাতীয় খো খো দলে খেলার যোগ্যতা লাভ, জাতীয় খো খো-তে রানার আপ ও তৃতীয় স্থান অর্জন, ১ম জাতীয় স্কুল খো খো-তে চ্যাম্পিয়ন, বিজয় দিবস খো খো প্রতিযোগিতা-২০১৭ ও ২০১৮ এ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়।  

টেবিল টেনিস  

২০১৭ সালে ৪৬তম শীতকালীন জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় টেবিল টেনিস ইভেন্টে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ঢাকাতে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায় ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রামহিমলিয়ান বম এবং ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী পাঅং বম এই সাফল্য অর্জন করে এবং বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন ট্রফি গ্রহণ করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

২০১৬ সালে ৪৫ তম শীতকালীন জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় টেবিল টেনিস দ্বৈত ইভেন্টে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এছাড়া জাতীয় স্কুল-মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় টেবিল টেনিসে চ্যাম্পিয়ন, শেখ রাসেল স্কুল টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় দলগত ইভেন্টে রানার আপ, জাতীয় উম্মুক্ত টেবিল টেনিসে খেলার স্ট্যাটাস অর্জনসহ জেলা উপজেলায় অনুষ্ঠিত খেলায় তারা সাফল্যে অর্জন করে।

২০১৫ সালের জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশেও রয়েছে তাদের অসাধারণ সাফল্য। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে প্রথমবারই ১ম স্থান অধিকার করে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন।

এর পরের বছরও তারা একই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। এছাড়া চট্টগ্রামে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশ গ্রহন করে তারা প্রথম স্থান অধিকার করে।    

ব্যান্ড দলের সাফল্যে   

২০০৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের মার্চপাস্টের ছোট ও বড় দল প্রথম স্থান অধিকার করে গৌরব অর্জন করে।  

২০১৫ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশের কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর পাশাপাশি প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে কোনো স্কুল বাদক দল এই ব্যান্ড পরিবেশন করে। ৪৭ জন কোয়ান্টার সমন্বয়ে গঠিত ব্যান্ড দলে ছিলো অত্যাধুনিক ব্রাস ব্যান্ডের সরঞ্জামসমূহ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোয়ান্টাদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করেন। এরপরের বছরও তারা অংশ নেয় এবং প্রথম স্থান লাভ করে।  

ডিসপ্লে তে সাফল্যে  

এই বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা ২০০৯ ও ২০১০ সালে চট্টগ্রামে বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ডিসপ্লেতে প্রথম স্থান অধিকার করে। জেলা পর্যায়েও রয়েছে ব্যাপক সাফল্যে। ২০০৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ ডিসপ্লেতে প্রথম স্থান অধিকার করে।

আরচ্যারি

২০১২ সালের ২১ জুন ৩১ জন কোয়ান্টাকে নিয়ে ১৫ দিনব্যাপী এক আরচ্যারি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয় কোয়ান্টামমে। আর এভাবেই যাত্রা শুরু করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এন্ড কলেজের আরচ্যারি টিম।

২০১৩ সালে বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশনের আয়োজনে আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে সারাদেশ থেকে মাত্র ১০ জন প্রতিযোগী মনোনীত হয়। এদের ৩ জনই ছিল কোয়ান্টা। প্রশিক্ষণের ফলাফলে এরা যথাক্রমে প্রথম, চতুর্থ ও ষষ্ঠ হয়। এছাড়া বিশ্ব যুব অলিম্পিকের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীত হয় কসমো স্কুলেরই এক কোয়ান্টা।      

২০১৪ সালের (১-১৪) এপ্রিল বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশন আর্মি এভিয়েশনে আয়োজন করে ১৪ দিনব্যাপী একটি আপগ্রেডিং কোর্স। এতে কসমো স্কুলের ৭ আরচ্যার কোয়ান্টা সুযোগ পায়। একই বছর ১ম ক্লাব কাপ চ্যাম্পিয়নশিপে সেনাবাহিনী দলকে হারিয়ে ৪টি পদক লাভ করে।      

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের প্রথম সুযোগ আসে ২০১৩ সালে। সে বছর একমাত্র বাংলাদেশি প্রতিযোগী হিসেবে বিশ্ব যুব অলিম্পিকের সাব কন্টিনেন্টাল কোয়ালিফাইয়িং রাউন্ডে অংশ নিতে চাইনিজ তাইপে-তে যায় কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের সপ্তম শ্রেণির একজন কোয়ান্টা। জাপানের প্রতিযোগীকে হারিয়ে সে ৪র্থ হয় এবং সুযোগ পায় বিশ্ব যুব অলিম্পিকে খেলার। ২০১৪ সালে চীনের নানজিংয়ে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতার প্রি কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত সে উন্নীত হয়। সে ছিল প্রথম কোনো পাহাড়ি বাংলাদেশি যে অলিম্পিক আরচ্যারিতে খেলার সুযোগ লাভ করে।

পরবর্তীতে সে এশিয়ান আরচ্যারি গ্রান্ড প্রিক্সের প্রথম ও দ্বিতীয় আসরেও অংশ নেয় যথাক্রমে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ও চাইনিজ তাইপেতে। দ্বিতীয় আসরে অর্জন করে ব্রোঞ্জ পদক। ২০১৪ তে কোরিয়ার ইনচেনে যে ১৭ তম এশিয়ান গেমস অনুষ্ঠিত হয়, তাতেও বাংলাদেশের পক্ষ হয়ে অংশ নেয় এই কোয়ান্টা! ২০১৫ সালে ৫ম কমনওয়েলথ ইয়ুথ গেমসের বাছাই দলেও সুযোগ পায় সে।  

১ম জাতীয় যুব আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৫-তে দলগতভাবে সোনা ও এককভাবে সোনা, রুপা ও ব্রোঞ্জ- তিনটিই পায় কোয়ান্টারা  

২০১৭ সালে ৯ম জাতীয় আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য আর্জন করে। ২০১৮ সালে ন্যাশনাল র‌্যাংকিং স্টেজ-২ তে সেরা দশে তিন কোয়ান্টার অন্তর্ভুক্তি ও ২য় যুব আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপে একক ইভেন্টে স্বর্ণ পদক লাভ করে।   

কাবাডি   

২০১৩ সালে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল কাবাডি টিমের পথ চলা শুরু করে। বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সহযোগিতায় জাতীয় কাবাডি প্রশিক্ষকের পরিচালনায় ১৫ দিনের কাবাডি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ যাত্রা শুরু হয়।     

২০১৫ সাল থেকেই তারা অংশ নিতে শুরু করে জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আসরে। ২০১৬-তে এ প্রতিযোগিতায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় ওরা।

২০১৭ সালে বান্দরবানে স্বাধীনতা দিবস কাবাডি প্রতিযোগিতায় রানার আপ হয়। 

২০১৭ সালে আইজিপি কাপ কাবাডি জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন, চূড়ান্ত পর্বে রানার আপ হয়। ২০১৭ সালে কাবাডি প্রতিযোগিতায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।   

হ্যান্ডবলে সাফল্যে       

কোয়ান্টাম স্কুলের হ্যান্ডবলের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে।  জতীয় হ্যান্ডবল ফেডারেশনের একজন প্রশিক্ষক এর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে কসমো স্কুলের হ্যান্ডবল টিম।   

২০১২ সালে বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশন আয়োজিত দ্বিতীয় বিভাগ হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ১২টি দলের মধ্যে চতুর্থ হয় কোয়ান্টাম এবং পরের বছর থেকে অর্জন করে প্রথম বিভাগে খেলার যোগ্যতা।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা। এতে রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার হয়ে অংশ নেয় কসমো স্কুলের ১৬ হ্যান্ডবল খেলোয়াড়। ৪৫টি জেলার মধ্যে সপ্তম হয় রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থা।  

২০১৪ সালে `মার্সেল এলইডি টেলিভিশন প্রথম বিভাগ হ্যান্ডবল লীগে` অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে ২০১৫ থেকে প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে কসমো স্কুল। 

২০১৫ সালে ২৬ তম জাতীয় পুরুষ হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপে বান্দরবান জেলা দলের পক্ষে অংশগ্রহণ করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ৫ম স্থান অর্জন করে।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য এসএ গেমস উপলক্ষে হ্যান্ডবলের বাংলাদেশ জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তির জন্যে যে বিশেষ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়, তাতে স্থান পায় কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের তিন কোয়ান্টা। 

২০১৬ সালে ২৭ তম জাতীয় পুরুষ হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষে অংশগ্রহণ করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল চতুর্থ স্থান অর্জন করে।   

২০১৬ সালের (৯-১৩) অক্টোবর আইএইচএফ ট্রফির সাউথ সেন্ট্রাল জোনের প্রতিযোগিতায় রানার আপ হয় বাংলাদেশ। কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের দুই কোয়ান্টা ছিল এ দলে। প্রতিযোগিতার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক খেলোয়াড়কে এক লক্ষ টাকা করে উপহার দেন।  

২০১৮ তে প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লীগ খেলার সুযোগ পায় কোয়ান্টারা। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নামে গঠিত এই টিমের খেলোয়াড়রা সবাই নবম থেকে একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। তাদেরকেই খেলতে হয় বয়স বড় অভিজ্ঞ, পেশাজীবী, এমনকি বিদেশি খেলোয়াড়সমেত সব দলের সাথে। প্রথমবার এসেই সবাইকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় কোয়ান্টারা।     

কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের বালিকা হ্যান্ডবল টিম গঠিত হয় ২০১৬ সালে শিশুসদনের ২৩ জন বালিকা কোয়ান্টাকে নিয়ে। চলতে থাকে তাদের নিয়মিত অনুশীলন। ২০১৮ সালে তারা প্রথম অবতীর্ণ হয় প্রথম কোনো জাতীয় প্রতিযোগিতায়। ৪৭ তম জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উপজেলা, জেলা ও অঞ্চল পর্যায়ের প্রতিটি খেলায় বিপুল ব্যবধানে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে তারা জাতীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়। ‘বকুল অঞ্চল’ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তারা মুখোমুখি হয় বাকি তিনটি অঞ্চল-চ্যাম্পিয়নের (গোলাপ, চাঁপা ও পদ্ম)। কিন্তু বয়সে বড় (কোনো কোনো ক্ষেত্রে পেশাজীবী খেলোয়াড়সমৃদ্ধ) এসব দলের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে তারা পড়ে এবং চতুর্থ হয়।

২০১৮-র জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়ার হ্যান্ডবলে পর পর তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় কোয়ান্টাম কসমো স্কুল। কোনো স্কুলের এটাই প্রথম অর্জন।  

স্কুলের তত্তাবধায়ক সালেহ আহমেদ বলেন, কোয়ান্টামের ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা, ব্যায়াম, খেলা-ধুলা, মেডিটেশনসহ সবকিছু নিয়েই তারা অন্যরকমভাবে গড়ে উঠছে। তারা সবকিছুতে সাফল্যের সাক্ষর রাখছে। এই স্কুলে তাদের জীবন গড়ার সব শিক্ষাই দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে আগামী দিনে তারা দেশে-বিদেশে সব জায়গায় মানবতার কল্যাণে কাজ করবে বলে আমরা মনে করি।                          

এসি