অস্টিওপোরোসিস থেকে দূরে থাকার উপায়
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:১১ পিএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার

কর্মব্যস্ত জীবনে বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সুবিধা যত বেড়েছে, ততো অসুবিধাও বেড়েছে। ঘণ্টার পর ঘন্টা কাজের চাপে ভুলতে বসেছি যে, আমাদের শরীরের নেওয়ারও একটা সীমা আছে। অনিয়ম আর অত্যাচারে শরীরের সহ্যক্ষমতা যখন পার হয়ে যাচ্ছে, আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে একের পর এক রোগ। এ রকমই অস্টিওপোরোসিস একটা রোগ, যা আজকাল বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে বয়স্কালে হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটা একটা হাড়ের রোগ, যাতে শরীরের হাড় আক্রান্ত হয়। ক্রমাগত দুর্বল হতে থাকে হাড় আর ক্রমশ তা ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। ঠিক কি কারণে হয় এই রোগ? কারা এই সমস্যায় বেশি পড়েন? প্রতিকার কি? এগুলোই জেনে নেওয়া যাক।
এটা একটা হাড়ের রোগ। যাতে হাড় ভঙ্গুর হতে দুর্বল হতে থাকে। সাধারণ অবস্থায় আমাদের শরীরে সবসময় নতুন টিস্যু তৈরি হতে থাকে যা পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু কে সরিয়ে সেই জায়গা কে অক্ষত আর ঠিক রাখে। যে কারণে আমাদের শরীর এর কাঠামো ঠিক থাকে। ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত এই নতুন টিস্যু তৈরির কাজ চলতে থাকে, যা ২৫ বছরে সবচেয়ে বেশি হয়। ৪০ বছর বা তার পর থেকে এই টিস্যু তৈরির কাজ কম হতে থাকে। ফলে কোনো হাড়ের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রয়োজন মত টিস্যুর যোগান শরীর নাও দিতে পারে। সোজা কথায় টিস্যু উৎপাদনের পরিমাণ কম হওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া টিস্যুর জায়গা ভরাট না হওয়ার কারণে আমাদের শরীরের হাড় দুর্বল হতে থাকে। হাড় ক্ষয় পেতে থাকে। এক সময় অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়। আগে থেকে এর বোঝার সেভাবে উপায় নেই। অল্প কোনো চোট, বা ব্যথায় কোনো কারণে এক্স রে করলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
পুরুষ বা নারী, উভয়কেই সাবধান থাকতে হবে এর ব্যাপারে। যে কারুরই হতে পারে কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশ মনে করেন, মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেনের ঘাটতি হওয়ার থেকে অনেক সময় নারী এই রোগের শিকার বেশি হন। সাধারণত এই ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত যে জায়গাগুলো হয়, তা হলো কোমর, কোমর এর নিচে, কব্জি, হাঁটু এবং শিরদাঁড়া তে।
ক্যালসিয়াম এর ঘাটতি থেকে হতে পারে এই রোগ। যার জন্যে ক্যালসিয়াম এর দরকার অনুযায়ী তা খাওয়া তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো। একই সঙ্গে হাড়ের প্রয়োজনীয় এবং শরীরের আবশ্যক খনিজ এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাওয়া। যেহেতু এটা একটা একমুখী প্রক্রিয়া তাই আপনি এটা আশা করতে পারবেন না যে চিকিৎসা আপনাকে একদম আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে। তাই অতিরিক্ত ব্যথার ক্ষেত্রে পেইনকিলার ভরসা এবং দরকার প্রয়োজনীয় ওষুধ যা আপনার হাড় ক্ষয়িভূত হওয়ার প্রক্রিয়াকে মন্থর করবে। তবে এ সবই আপনার জানার জন্যে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই নিজের রোগের চিকিৎসা করুন।
নিজের লাইফস্টাইল চেঞ্জ করলে কিছুটা সুফল মিলতে পারে। একটানা এক জায়গায় বসে থেকে কাজ, ঘাড় নিচু করে ফোনে বা কম্পিউটারে বসে থাকা কখনোই আপনার জন্যে ভালো নয়। অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়াও ক্ষতিকারক শরীরের পক্ষে। তামাক বা অ্যালকোহল সেবন থেকে বিরত থাকলেই ভালো। ফাস্ট ফুড বা নেশার মত জিনিস আপনার বাকি অর্গানগুলোকে নষ্ট করলে তাদেরও খাবার থেকে প্রয়োজনীয় খনিজ নেওয়ার ক্ষমতা কমতে থাকে, যার প্রভাব পড়ে আপনার হাড়ের উপরেও।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
একে//