ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ওজন কমানোর ঔষধ দিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০২ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রবিবার

মশা তাড়াতে কত কিছুইনা করেছেন। কিন্তু তারপরও মশার কামড় থেকে বাঁচতে পারছেন না। খুব সাবধান ছিলেন কিন্তু মশারীর কোন এক কোনায় লুকানো একটি মশাই হয়ত সারা রাত আপনাকে গান শুনিয়ে ঘুমের বারোটা বাজিয়েছে।

নিউ ইয়র্কের রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক বলছেন তারা ‘ডায়েট ড্রাগস’ ব্যবহার করে মশার কামড় কমাতে সক্ষম হয়েছেন।

নতুন এই গবেষণা এখনো যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন সফল হলে খুব কাজে আসবে যিকা, বা ম্যালেরিয়ার মতো মশা-বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে।

পশ্চিমা বিশ্বে ওজন কমাতে বেশ জনপ্রিয় হল ‘ডায়েট পিল’। সেটাই নাকি কাজ করেছে মশার উপরেও। গবেষকরা এডিস মশার উপর পরীক্ষা চালিয়েছেন। সাধারণত স্ত্রী প্রজাতির মশা মানুষকে কামড়ায়।

এই প্রজাতির স্ত্রী মশা অন্য প্রাণীর তুলনায় মানুষের প্রতি খুবই আকর্ষণ বোধ করে। কারণ মানুষের রক্তে একটি বিশেষ প্রোটিন রয়েছে যা এডিস মশার ডিম উৎপাদনে সহায়তা করে।

ডায়েট পিলের কাজ হল মানুষের খাওয়ার আগ্রহ কমিয়ে দেওয়া। বিজ্ঞানীরা বলছেন তারা যখন মশাকে ‘ডায়েট পিল’ মেশানো স্যালাইন জাতিয় খাবার দিয়েছেন মশার রক্ত খাওয়ার রুচি বেশ কমে গেছে।

ঠিক মানুষের যেমন খাবার আগ্রহ কমে যায় সেরকমই মশাও রক্ত খাওয়ার আগ্রহ পাচ্ছিলো না।

মশাদের রক্ত খাওয়ার মাত্রা পরিমাপ করতে বিজ্ঞানীরা মানুষের শরীরের দুর্গন্ধযুক্ত নাইলনের মোজা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। মশারা এমন মোজার প্রতি সাধারণত খুবই আকর্ষণ বোধ করে, কারণ তারা খাবারের গন্ধ পেতে থাকে এবং রক্ত খেতে উদগ্রীব হয়ে পড়ে।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন এই ঔষধ দেয়ার ফলে দেখা গেছে মশা বেশ কদিন ধরে রক্ত খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন তার অর্থ হল মানুষের প্রতি ও তার রক্ত খাওয়ার প্রতি মশার আগ্রহে পরিবর্তন হয়।

গবেষণাগারে নাহয় আটকে রেখে মশাকে ঔষধ খাওয়ানো গেলো কিন্তু প্রকৃতিতে মশাকে এই ঔষধ কিভাবে খাওয়াবেন সেটি একটা বড় সমস্যা।

গবেষকদের একজন লেসলি ভশাল বলছেন, নারী মশাকে আকর্ষণ করে এমন ফাঁদ তৈরি করতে হবে। গবেষকরা মশাদের খাওয়ার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটি বিশেষ উপাদান মশার শরীরে খুঁজে পেয়েছে।

মানুষের শরীরের উপযোগী এই ঔষধের মতোই তবে শুধু মশার উপরে কাজ করবে এমন একটি উপাদানও খুঁজে পেয়েছে তারা। ভবিষ্যৎ গবেষণায় বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

লেসলি ভশাল বলছেন, ‘মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমরা নতুন আর কোন বুদ্ধি খুঁজে পাচ্ছি না। কীটনাশকও ব্যর্থ হচ্ছে কারণ মশারা এমনকি কীটনাশক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। তাই এখন একদম নতুন কিছু করতে হবে।’

তবে তিনি আরও বলেন মশাদের পুরোপুরি নিধন করা তাদের উদ্দেশ্য নয়। এই ঔষধ সাময়িকভাবে খাবার রুচি নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এর প্রভাব স্থায়ী নয়।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

এমএইচ/