ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

সাবেক সিবিএ নেতার দখলে থাকা সরকারি পাজেরো উদ্ধার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৫ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সোমবার

সরকারি পাজেরো গাড়ি ব্যবহারের এখতিয়ার যুগ্ম সচিব মর্যাদার কর্মকর্তাদের। অথচ ১০ বছর ধরে এমন একটি জিপ ব্যবহার করছিলেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে বছর দুই আগে অবসরে যাওয়া সাবেক সিবিএ নেতা মো. আলাউদ্দিন মিয়া। গাড়িটি সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ, চালকের বেতনসহ সব খরচ দিয়েছে প্রতিষ্ঠান। সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করেছে।

অভিযান শেষে দুপুরে দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের সমন্বয়ক ও দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।

এ সময় জানানো হয়, সম্প্রতি দুদকের হটলাইনে ওই অভিযোগটি করা হয়। পরে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সোমবার গাড়িটি উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় দুদক পুলিশ ইউনিটের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তবে অভিযানকালে অবৈধভাবে গাড়ি ব্যবহারকারী পিডিবি সিবিএ`র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিবিএ`র সাবেক ওই নেতার গাড়ি ব্যবহারের পেছনে কোনো না কোনো কর্মকর্তার সায় ছিল। আলাউদ্দিনকে ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের বিনিময়েও গাড়িটি ব্যবহার করতে দেওয়া হতে পারে। অভিযান চালানোর আগে দুদক অবৈধভাবে গাড়িটি ব্যবহারের গোড়ার তথ্য সংগ্রহ করেনি। অভিযোগটি পাওয়ার পর তড়িঘড়ি করে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়।

পিডিবির ওই সিবিএ নেতা স্টেনো টাইপিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি ঢাকা মেট্রো ঘ-১১-২৮২৭ নম্বরের গাড়িটি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করে আসছিলেন। এর মধ্যে বছর দুই আগে অবসরে যান তিনি। সোমবার মতিঝিল থেকে গাড়িটি আটকের সময় চালক মো. আবুল হোসেন জনি ও নিরাপত্তা কর্মী মো. সামছু মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, প্রতিমাসে গাড়িটির জন্য ডিজেল বরাদ্দ হয় ৪৫০ লিটার, যার আর্থিক মূল্য ২৯ হাজার ২৫০ টাকা। এ হারে প্রতি বছরে জ্বালানি বাবদ ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সিবিএ নেতা আলাউদ্দিন এভাবে ২০০৯ সাল থেকে গত ১০ বছরে গাড়িটির জন্য পিডিবি থেকে ডিজেল খরচ তুলেছেন ৩৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি মাসে চালকের বেতন বাবদ ৪১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত গাড়ির চালককে ৩৭ লাখ টাকার বেশি বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিমাসে গাড়িটির পেছনে ১০ লিটার মবিল এবং সঙ্গে মেরামত ব্যয়েও অর্থ খরচ হয়েছে। গাড়িটির লগ বইয়ে আলাউদ্দিন মিয়া সই করতেন না। সই করতেন পিডিবির একজন কর্মচারী।

অভিযান প্রসঙ্গে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের সমন্বয়ক ও দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী বলেন, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়েও ২০০৯ সাল থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে গাড়িটি ব্যবহার করেছেন আলাউদ্দিন। গাড়িটির পেছনে গত ৯ বছরে জ্বালানি তেল, মেরামত এবং চালকের বেতন বাবদ সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। শিগগির এ ঘটনা অনুসন্ধান করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরকে//