ঢাকা, রবিবার   ০৫ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২২ ১৪৩১

পেপটিক আলসারের কারণ ও প্রতিকার

ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

প্রকাশিত : ০১:২৬ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার

পেট খালি থাকলে আমাদের পেটের উপরিভাগে যে ধরনের ব্যথা বা জ্বালাপোড়া অনুভূত হয় তাকে সচরাচর আমরা গ্যাস্ট্রিক পেইন বলে থাকি। গ্যাস্ট্রিক শব্দের প্রকৃত অর্থ পাকস্থলী বা স্টমাক। পেটের উপরি অংশে এ ধরনের ব্যথা অনুভূত হলে, চিকিৎসাগত পরিভাষায় তাকে পেপটিক আলসার বলা হয়।

বিভিন্ন কারণে এ সমস্যা হতে পারে। খাদ্যগুলো পাকস্থলীতে জমা হয়। সেখান থেকে এসিড নিঃসরণ হয়। এই এসিড নিঃসরণ যেন চারদিকে না ছড়িয়ে যায়, তার জন্য কিছু ব্যবস্থা মানুষের শরীরে আছে। সব সময় এটি একটি ভারসাম্যের মধ্যে থাকে। এই ভারসাম্য যদি কোনও কারণে এসিডের দিকে বেশি চলে যায় এবং উপাদানের ক্ষমতা যদি কমে আসে, তাহলে পেপটিক আলসার রোগ হতে পারে। আর আলসার মানে সহজ বাংলায় হলো ঘা। ঘায়ে দীর্ঘ সময় সুরক্ষা ক্ষমতা না থাকলে আলসার হতে থাকবে। সহজ ভাষায় বললে পেপটিক হলো খাদ্যভাণ্ডার পাকস্থলীর ঘা। অনেক কারণে এটি হতে পারে।

অনেকে  ভাবে, বিভিন্ন ধরনের খাদ্য খেলে গ্যাস্ট্রিক হয়। অথবা শুধু ঝাল খেলে হয়। শুধু ঝাল খেলে যে গ্যাস্ট্রিক আলসার হবে- এমন কোনও প্রমাণ নেই। কিন্তু দেখা গেছে, যারা অনেক বেশি টিনজাত খাবার খায় বা খাবার সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন পদার্থ আছে, এর ব্যবহার করলে তার গ্যাস্ট্রিক আলসার হওয়ার প্রবণতা বেশি। আবার শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা অনেক বেড়ে গেলে গ্যাস্ট্রিক বা পেপটিক আলসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। হ্যালিকোবেকটার পাইলোরি নামের একটি ব্যাকটেরিয়া আছে। এটি ক্ষুদ্রান্তে থাকে। এসিডের মাত্রা অথবা সুরক্ষার ক্ষমতা বেড়ে গেলে ব্যাকটেরিয়া চলে আসে। তখন এই আলসার অথবা ঘাকে আস্তে আস্তে বাড়িয়ে দিতে পারে। অনেক দিনের গবেষণার পর এটি জানা গেছে। বর্তমানে এই সমস্যা হলে আগের ওষুধের পাশাপাশি আমরা অ্যান্টিবায়োটিকও ব্যবহার করে থাকি। তাই সমস্যার শুরুতেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন, ভালো থাকুন।

লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, হেপাটোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।