ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রক্তদান বড় ত্যাগ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:০৫ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:১১ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ শুক্রবার

রক্তদান বড় ত্যাগ। একাত্তরে বীর মুক্তি সেনারা রক্ত দিয়েছিলেন বলেই আজ দেশ স্বাধীন হয়েছে। মুক্তি সেনাদের  সেই মহান কাজটি করে যাচ্ছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। আর ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই রক্তদাতারা মানবতার সেবা করে দেশের কল্যাণে অবদান রাখতে পারছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, মানুষের সেবাই স্রষ্ঠার প্রতি শ্রেষ্ঠ ইবাদত। চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, রাজনীতিবিদরা যার যার অবস্থান থেকে সেবা করে যাচ্ছেন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের রক্তের চাহিদা মেটাতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এমন সেবার মাধ্যমেই দেশ ও জাতির ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব।



সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডাক্তার, নার্স ও সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে এসেছিল বলেই এতো বড় দুর্ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বর্তমান সময়ের মানসিক অস্থিরতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কোয়ান্টাম মেথড মেডিটেশন কোর্স মানসিক চাপ নিরাময়েও ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। এর ফলে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ১০, ২৫ ও ৫০ বার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন এমন ৩০০ জন রক্তদাতাকে সনদপত্র, আইডি কার্ড, সম্মাননা ক্রেস্ট ও মেডেল প্রদান করা হয়। এর মধ্যে স্বেচ্ছা রক্তদাতা ফাতেমা তুজ জোহরা এবং নিয়মিত রক্তগ্রহীতা থ্যালাসেমিয়া রোগী সানজিদা খাতুন মুন্নি তাদের অনুভূতি বর্ণনা করেন।

স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম ইউনুস জানান, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৮ লক্ষ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে যদি ৪ লক্ষ নিয়মিত রক্তদাতা থাকেন এবং তারা বছরে ২ বার রক্তদান করেন তবে সহজেই ৮ লক্ষ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব। বর্তমানে স্বেচ্ছায় রক্তদানের পরিমাণ মাত্র ৩০-৩৫ শতাংশ। দানকৃত রক্তের ৫৫-৬০ শতাংশ রক্তই আসে রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের কাছ থেকে আর বাকিটা আসে পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের কাছ থেকে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মাদাম নাহার আল বোখারী রক্তদাতা ও অতিথিদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, রক্তদানের মতো এমন একটি মহৎ কাজের যথাযথ পুরস্কার মানুষের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়, স্রষ্টাই এর উপযুক্ত পুরস্কার দিতে পারেন।

উল্লেখ্য, দেশে রক্ত ঘাটতির বিপুল চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে গত এক যুগ ধরে এ পর্যন্ত ১০, ৫৯, ০০৩ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহ করে মানুষের জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রেখেছে কোয়ান্টাম। রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত উপকারী। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নিয়মিত স্বেচ্ছা রক্তদাতারা দূরারোগ্য রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকেন। তাদের হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও অনেক কম।

আরকে//