আমি কোনো নাম চাই না, দেশের জন্য কাজ করতে চাই : প্রধানমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৫৭ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রবিবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিশ্বব্যাংক। এ নিয়ে কানাডার আদালতে মামলাও হয়েছিল। কিন্তু সেই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি বিশ্বব্যাংক। সেই পদ্মাসেতু নিয়ে যখন এত কিছু হয়ে গেছে, তখন সেটা পদ্মাসেতুর নামেই থাকবে। আমি কোনো নাম চাই না, কিছুই চাই না। কারণ আমি সব হারিয়ে রিক্ত হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে এসেছি।’
আজ রোববার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের বোরিং কার্যক্রম এবং লালখানবাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং প্রকল্পের ফলক উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘চট্টগ্রাম শুধু বাণিজ্যিক শহরই নয়, এটি অপরুপ সৌন্দয্যের লীলাভূমি। দেশের অন্যন্যা স্থানের মতো চট্টগ্রামের উন্নয়নেও কাজ করছে সরকার। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম টানেল হচ্ছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে। ২০১০ সালে এই টানেল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম। এই টানেল নির্মাণ হলে যোগাযোগের শুধু উন্নয়ন হবে না, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নেরও উন্নয়ন হবে।’
তিনি বলেন, ‘জলবায়ূ পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য এখনই আমরা বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছি। সেই সঙ্গে আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাটা এমন ভাবে নিয়েছি, যাতে সেই ক্ষতির হাত থেকে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষজন রক্ষা পায়। এসব দিকে লক্ষ রেখেই আমাদের ব্যপক উন্নয়নের কাজ চলছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের যা যা প্রয়োজন, একে একে আমরা সেসব কাজ করে যাচ্ছি।’
এ সময় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ওপর সেতুমন্ত্রীর অনেক ক্ষোভ। কারণ তিনি আমার নামে পদ্মাসেতু করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি সেটা নাকচ করে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পদ্মাসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম ২০০১ সালে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে পদ্মাসেতুর কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আবার আমরা উদ্যোগ নেই পদ্মাসেতু নির্মাণের। তখন সবচেয়ে বেশি উৎসাহ দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। তবে হঠাৎ মাঝামাঝি সময়ে এসে তারা অভিযোগ আনলো এখানে দুর্নীতি হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সময় চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম কোথায় দুর্নীতি হয়ে তা দেখাতে হবে, দুর্নীতির প্রমাণ দিতে হবে। কিন্তু বিশ্বব্যাংক সেই দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে কানাডার আদালতেও মামলা হয়েছে। পরে আদালত বলেছেন, বিশ্বব্যাংক যে অভিযোগ তুলেছে তা মিথ্যা, ভূয়া। এরপর আমার নিজেদের অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, সেই পদ্মাসেতু এখন দৃশ্যমান।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে যখন এত কিছু হয়ে গেছে, তখন সেটা পদ্মাসেতুর নামেই থাকবে। এটার সঙ্গে আর কোনো নাম যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কাজেই আমার মন্ত্রীকে বলবো রাগ ক্ষোভ করার কিছু নেই। আমি কোনো নাম চাই না, কিছুই চাই না। কারণ আমি সব হারিয়ে রিক্ত হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে এসেছি।’
এসএ/