ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য ক্রীড়াবিদ মহসিন আর নেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২১ এএম, ৩ মার্চ ২০১৯ রবিবার

বাংলাদেশ হকির সোনালি প্রজন্মের ক্রীড়াবিদ বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য মোহাম্মদ মহসিন আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল শনিবার ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ৭১ বছর বয়সী জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়া এই ক্রীড়াবিদ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

ঢাকা আবাহনীতে ক্যারিয়ারের বড় অংশ কাটানো মোহাম্মদ মহসিন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভীষণ প্রিয়। মহসিন নিজের পরিচয় দিতে ভালোবাসতেন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গাড়িচালক’ হিসেবে। যদিও তার চাকরিটা ছিল বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তারক্ষীর। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন তার গাড়িটা চালাতে। জাতির জনকের এই বিশ্বাস আর আস্থাই জীবনের সেরা পাওয়া বলে মনে করতেন মহসিন।

তিনি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। একটি কিডনি বাদ দিতে হয়েছে ১৯৮৬ সালে। ওপেন হার্ট সার্জারি করাতে হয়েছে ২০০২ সালে। ২০১২ সালে হয়েছিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ। তখন থেকেই ছিলেন একপ্রকার শয্যাশায়ী। ছোট ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। বেড়েছিল ডায়াবেটিসের মাত্রা। কিডনির ক্রিয়েটিনিন বাড়ায় গত ২৫ জানুয়ারি মহসিনকে বড় ছেলে তাহসিন আহমেদ গালিব ভর্তি করেন হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে আর বাড়ি ফেরা হলো না মহসিনের।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মাহুতটুলীতে জন্মগ্রহণ করেন মহসিন। ১৯৬৭ ও ’৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান হকি একাদশের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু প্রাপ্ত হন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফর করা জাতীয় হকি দলের হয়ে গিয়েছিলেন ভারতে। ১৯৮৫ সালে দ্বিতীয় এশিয়া কাপে বাংলাদেশ হকি দলের কোচের দায়িত্বও পালন করেন মহসিন। ক্রীড়ায় অসামান্য অবদানের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়া কৃতী খেলোয়াড় ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত আবাহনী ক্রীড়া চক্রের হয়ে নিয়মিত খেলেছেন হকি ও ফুটবল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর রাতে মহসিনের ডিউটি ছিল না। ঘটনা শোনার পর প্রচণ্ড মানসিক আঘাত পেয়ে নির্বাক হয়ে যান তিনি। কথা বন্ধ ছিল কয়েক মাস। বের হতেন না বাড়ি থেকেও। বঙ্গবন্ধুর সব খবর জানতেন বলে তাকে হত্যার জন্যও খোঁজা হচ্ছিল তখন। জীবন বাঁচাতে মহসিন চলে যান বিদেশে। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ সময় কাটিয়েছেন মহসিন।

গতকাল শনিবার শেষবারের মতো তার নিথর দেহ আনা হয়েছিলেন প্রিয় ক্লাব প্রাঙ্গণে। সেখানেই জানাজা শেষে সাবেক সতীর্থ, অনুজরা জানিয়েছেন শেষ বিদায়।

এসএ/