রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে স্থানান্তর
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৩৭ পিএম, ৩ মার্চ ২০১৯ রবিবার

দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনার প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের গত সপ্তাহে নির্দেশ দিয়েছেন ১৫ এপ্রিলের মধ্যে ২৩ হাজার পরিবার (একেক পরিবারের চার-পাঁচজন) অর্থাৎ এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য। শিগগিরই রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর শুরু হবে।’
রবিবার (৩ মার্চ) সচিবালয়ের নিজ অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানকার অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ঘর, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসেবা, বেড়িবাঁধ, সাইক্লোন শেল্টার সবকিছু তৈরি করা আছে।’
জাতিসংঘ ও আন্তার্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পিএমও থেকে তাদের সঙ্গে এর আগে একটি বৈঠক করা হয়েছে। আগামী ৬ মার্চে আরেকটি বৈঠক হবে। ’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকে আজ আমরা ৪৫ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিচ্ছি। ২০১৯ সালে আমরা মোট ১০৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়া ২০১৭ এর আগস্ট থেকে এই পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা ৫০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছি। ’
উল্লেখ্য বর্তমানে দ্বীপটির প্রায় ১৩ হাজার একর জমির অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করছে নৌবাহিনী, যার মধ্য দিয়ে সেখানে ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সুপেয় পানি, পয়ঃব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি নিষ্কাশন, পুকুর খনন, স্কুল ও মসজিদ নির্মাণ, অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন, সাইক্লোন শেল্টার স্টেশন, দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণসহ পুরো দ্বীপটিকে শরণার্থীদের বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে।
ভাসানচর নোয়াখালী সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অন্যদিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং হাতিয়া সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার পূর্বদিকে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা বিচ্ছিন্ন ও জনমানবশূন্য চর ভাসানচর। এটি আয়তনে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার প্রায় মূল ভূখণ্ডের সমান। এর দক্ষিণে গাঙ্গুরিয়ার চর ও উত্তরে রয়েছে জাহাজিয়ার চর যা বর্তমানে স্বর্ণদ্বীপ নামে পরিচিত।
সর্বপ্রথম ১৯৯০ সালের দিকে ভাসানচরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। হাতিয়ার স্থানীয় জেলেরা মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে মেঘনা এবং বঙ্গোপসাগরের মোহনায় একটি ডুবোচরের অস্তিত্ব খুঁজে পান। পরবর্তী ৫ বছরের ব্যবধানে এটি চরে রূপ নিতে থাকে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই চর আজকের ভূমি রূপ পায়। কোন জনবসতি গড়ে না ওঠা এবং মহিষের বাথান হিসেবে পরিচিত পাওয়ায় স্থানীয় জেলেরা এর নামকরণ করে ভাসানচর।
এসি