ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

ডাকসুতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৬১ ছাত্রলীগের ৫০

তবিবুর রহমান

প্রকাশিত : ১১:৫৪ এএম, ৪ মার্চ ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৩:৫৪ পিএম, ৪ মার্চ ২০১৯ সোমবার

২৮ বছরের বেশি সময় পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১১ মার্চ ভোটের তারিখ নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্বাচন ঘিরে চলছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা। প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে চাইছেন ভোট। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। এই নির্বাচনে ২৫ পদের বিপরীতে লড়বেন ২২৯ জন। এর মধ্যে ভিপি পদে ২১, জিএস পদে ১৪ এবং এজিএস পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

চূড়ান্ত তালিকা বিশ্লেষণ ও হলে হলে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ১৮ হলে ৬১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এর মধ্যে ছাত্রলীগের ৫০জন প্রার্থী রয়েছে। এজিএস পদে ৩, সম্পাদক পদে ২৭ এবং সদস্যপদে ৩১ জন রয়েছেন।

এবিষয় জানতে চাইলে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এসএম মাহফুজুর রহমান একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, আগামী ১১ মার্চে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হয়েছে। প্রার্থিতা নিয়ে আর কোনো আপত্তি গ্রহণ করা হবে না। শুধু নামের বানান ভুলসংক্রান্ত আপত্তি গ্রহণ করা হবে।

সদস্যপদের ৩১ জনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৪টি করে পদের বিপরীতে শুধু ৪ জন করেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। অন্য হলগুলোতে ৪টি পদের বিপরীতে ৫-৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে ২৩ সদস্যপদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকা সত্ত্বেও কে বাদ যাবেন, তা নির্ণয়ে প্রার্থীদের ভোটে অংশ নিতে হবে। এই হিসাবে হল সংসদের মোট ২৩৪ পদের মধ্যে নির্বাচন হবে ১৯৬ পদে।

চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ৯, কমনরুম ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক ৯, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ১১, সাহিত্য সম্পাদক ৮, সংস্কৃতি সম্পাদক ১২, ক্রীড়া সম্পাদক ১১, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক ১০, সমাজসেবা সম্পাদক ১৪ এবং ১৩টি সদস্যপদের বিপরীতে ৮৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এবিষয় জানতে চাইলে, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, ছাত্রলীগের ইতিহাস বিজয়ের ইতিহাস। ইতোমধ্যে আপনার দেখেছেন, ৮১ হলে ৫০ জন ছাত্রীলীগের প্রার্থী জয় লাভ করেছে। ছাত্রলীগ হলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের আচ্ছার সংগঠন। ডাকসুতে ভোটারদের সমর্থন নিয়ে নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করবে ছাত্রলীগ। আমরা ছাত্রদের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে ছাত্রদের হল সংকট সমাধানে ২২ শত কোটি টাকা একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, অন্য ছাত্র সংগঠন বিভিন্ন পদে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ছাত্রলীগের ৫০ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছে।

বুধবার ২৫টি পদের বিপরীতে প্রাথমিকভাবে ২৩১ জনকে যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আগামী ১১ মার্চ ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল শনিবার বেলা ১টা। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এসএম মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছি। আর কোনো আপত্তি গ্রহণ করা হবে না। তালিকায় প্রার্থীদের যে ক্রম দেয়া হয়েছে, সেটি ব্যালট নম্বর নয়। পরবর্তী সময়ে সব প্রার্থীর নামের বানান নিশ্চিত হয়ে ব্যালট নম্বর দেয়া হবে। এখন থেকে ভোটের দিনের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। তবে প্রচারের সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত।

এটি আচরণবিধির ৯(গ) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ডাকসু নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ডাকসুর আচরণবিধির প্রতি আমরা সব সময় শ্রদ্ধাশীল। কারও প্রচারে ছাত্রলীগের বাধা দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সবাই সবার মতো কাজ করবে। ছাত্রলীগ সাধারণ ভোটারদের সমর্থন নিয়ে নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করবে। ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক এসএম মাহফুজুর রহমান বলেন, কারও বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। হল সংসদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা ব্যবস্থা নেবে।

 


টিআর/