জাহালমের সব মামলার নথি ৯ এপ্রিল দাখিলের নির্দেশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:৩৩ পিএম, ৬ মার্চ ২০১৯ বুধবার

নিরীহ জাহালমের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৩৩ মামলার সব নথি আগামি ৯ এপ্রিল আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন। পাঁচ ব্যাংকের পক্ষভুক্তের আবেদন গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে চ্যানেল ২৪ কেও পক্ষভুক্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান এই আবেদনের ওপর আজ শুনানির কথা জানিয়েছিলেন।
দুদক বলছে, জাহালমের জেল খাটার দায় সোনালী ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকগুলোর। কেননা ব্যাংকগুলোই টাকা আত্মসাতের প্রকৃত আসামি ঠাকুরগাঁওয়ের আবু সালেকের পরিবর্তে টাঙ্গাইলের জাহালমকে আসামি হিসেবে চিহ্নিত করে।
খুরশীদ আলম খান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকের নথির ভিত্তিতেই দুদক অভিযোগপত্র দিয়েছে। ব্যাংকের দেওয়া নথির ভিত্তিতে সরল বিশ্বাসে এটি করা হয়েছে। জাহালমকে শনাক্ত করার দায়িত্ব ব্যাংকেরেই। এ কারণে পাঁচটি ব্যাংককে পক্ষভুক্ত করতে আবেদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকের কর্মকর্তারা তাকে (জাহালম) আইডেন্টিফাই করেছেন। আমরা সে কথাগুলো এফিডেবিট ইন ফ্যাক্টসে (হলফনামা আকারে ঘটনার বর্ণনা বা ব্যাখ্যা) জমা দিয়েছি। ব্যাংকগুলোকে পক্ষভুক্ত করতে যে আবেদন করা হয়েছে, আমরা তার শুনানি আগে চাচ্ছি। কারণ এখানে ব্যাংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, ব্যাংকগুলা এসে তাদের কথা বলুক।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে মিস ম্যানেজমেন্ট হয়েছে। সোনালী ব্যাংকও বলেছে এই কথা। ব্যাংকের ১৮টি শাখা এখানে ইনভলব। যদিও আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংককে পক্ষভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছি। আমরা মনে করি, এতেই সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নিরীহ জাহালমের কারাবাসের জন্য যে যুক্তিতে এবং দুদক আইনের যে ধারার বলে দায় এড়াতে চাইছে দুদক, তা অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য। দুদকের এই যুক্তি ‘সরল বিশ্বাস’ ধারণার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। দুদকের দায়িত্ব হচ্ছে যথাযথ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, জাহালমের ক্ষেত্রে দুদকের তিনটি ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। এগুলো হচ্ছে- দুদকের তদন্তপ্রক্রিয়ার দুর্বলতা, কর্মকর্তাদের অবহেলা এবং প্রকৃত আসামির সঙ্গে যোগসাজশ।
প্রসঙ্গত, সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলার মূল আসামি আবু সালেক। কিন্তু তার বদলে এ মামলার আসামি হয়ে বিনা অপরাধে প্রায় ৩ বছর কারাগারে বন্দি ছিলেন পাটকল শ্রমিক জাহালম। পরে দুদকের দায়ের করা মামলায় ভুল আসামি জাহালমকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন হাইকোর্ট।
একে//