ঢাকা, রবিবার   ১৩ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৮ ১৪৩২

ভিডিও প্রকাশে উদ্বেগ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টিভি মালিকদের বৈঠক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:২৬ পিএম, ১১ মার্চ ২০১৯ সোমবার

অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোতে ভিডিও কন্টেন্ট এবং টকশো প্রচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স (এটকো)।

সোমবার (১১ মার্চ) সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন এটকো নেতারা। বৈঠকের পর এটকোর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু সাংবাদিকের এ তথ্য জানান।

বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের ব্যাপক বিকাশের পাশাপাশি এসব চ্যানেল পরিচালনায় তৈরি হয়েছে নানা জটিলতা। চ্যানেলগুলো ভালভাবে পরিচালনা করে সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা প্রদান এবং উপার্জন করে ব্যয় করার ক্ষেত্রে নানা ধরণের সমস্যা তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশেষ করে বিদেশি চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে আইন বহির্ভূতভাবে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করছে। বিদেশ থেকে অনেক বিজ্ঞাপন তৈরি করে এনে তা এদেশে প্রচার করা হচ্ছে। এসব নানা কারণে টেলিভিশনগুলোয় উপার্জন করে তা থেকে ব্যয় করার ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছে এবং ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ অঙ্গ। রাষ্ট্রের টেলিভিশনগুলোর গুরুত্ব এবং দায়িত্ব দুটোই অপরিসীম। এমন কোনো মানুষ নেই যারা বাড়িতে টেলিভিশন আছে কিন্তু টেলিভিশনের সামনের বসেন না, অন্তত সামান্য সময়ের জন্য। টেলিভিশনগুলো আমাদের দেশে বিনোদন যেমন দিচ্ছে, সংবাদ পরিবেশন করছে, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করছে তেমনি সমাজের চিত্র পরিস্ফুটনের ক্ষেত্রে এবং দায়িত্বশীলদের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে এসব চ্যানেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মন্ত্রী জানান, আজকের মিটিংয়ে আমরা আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো পরিচালনায় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবো। দেশের উন্নয়নে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো কিভাবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়েও আজ আলোচনা হবে। সমাজের মনন তৈরি হবার ক্ষেত্রে টেলিভিশনগুলো কীভাবে কাজ করতে পারে তা নিয়েও টেলিভিশন মালিকদের সঙ্গে আলাপ করা হবে।

এর আগে এটকো নেতারা বলেন, বিভিন্ন পোর্টাল... যেহেতু আমাদের পলিসি (অনলাইন নীতিমালা) হয়নি। পোর্টালগুলো... পত্রিকাগুলো নিউজ পোর্টাল হচ্ছে। পোর্টাল টেক্সট (লিখিত নিউজ) করছে কোনো আপত্তি নাই, কিন্তু আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি কিছু কিছু পত্রিকার পোর্টাল ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করছে। টকশোর আয়োজন করছে, আমরা মনে করি এগুলো কোনোভাবেই বৈধতার মধ্যে পড়ে না। সম্প্রচার নীতিমালায় এ জিনিসগুলো পরিস্কার করার জন্য মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি।

তিনি বলেন, আইপি টিভির নামে যে নৈরাজ্য চলছে সেগুলোর ব্যাপারেও মন্ত্রী নজর দেবেন বলে জানিয়েছেন। আপনারা জানেন, টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি অত্যন্ত সিক (অসুস্থ) হয়ে পড়ছে, বিজ্ঞাপন মার্কেট ছোট এবং বিজ্ঞাপন যতটুকুই ছিল ততটুকুর একটা বড় অংশ বিদেশে পাচার হচ্ছে। আরেকটা বড় অংশ ডিজিটাল মিডিয়ামে অবৈধভাবে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এগুলো বন্ধ করার ব্যাপারে আমরা তার (তথ্যমন্ত্রী) সঙ্গে কথা বলেছি এবং তার কাছ থেকে অত্যন্ত সহানুভুতিশীল সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি।

এটকোর এ নেতা বলেন, বিদেশি বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে মন্ত্রী বলেছেন, অবৈধ কাজ দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছে। আমরা অতীতে আন্দোলন করেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি, তিনি আশ্বস্ত করেছেন। বর্তমান মন্ত্রীও আশ্বস্ত করছেন, আমরা মনে করি অচিরেই, ১৫ দিনের মধ্যেই এই জিনিসটা বন্ধ হবে।

মোজাম্মেল বাবু বলেন, প্রধানত দুইজন যেহেতু ডিস্টিবিউটর বিদেশি টেলিভিশনগুলোর, তাদের সঙ্গে আপনারা (মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা) বসবেন, বসার প্রেক্ষিতে এবং বিজ্ঞাপন শূন্যভাবে এবং ওদের যে লজিকটা (যুক্তি) থাকবে ওই বিজ্ঞাপনের গ্যাপে আমরা কী করব? আমরা বলব যে, লন্ডনে (সম্প্রচারে) আমাদেরকে লন্ডনের পাবলিক সার্ভিস এজেন্ডাগুলো তুলে ধরতে হয়। অতএত আমাদের দেশে অপারেট করলে বাংলাদেশের জনস্বার্থের বিজ্ঞাপনগুলো গ্যাপে দেবে।

সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, বাংলাদেশ কমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এককোর সদস্য অঞ্জন চৌধুরী, এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, ডিবিসি নিউজের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরীসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরকে//