ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

জমে উঠেছে বৈশাখী আয়োজন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:১৩ পিএম, ৭ এপ্রিল ২০১৯ রবিবার

আসছে বৈশাখ। আর তাই আসন্ন বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে বৈশাখী আয়োজন। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে পোশাক, জুতা, প্রসাধনী, খাদ্যপণ্য, গৃহসামগ্রী। চাহিদাও বেড়েছে অনেক। এসব পণ্যের জোগান দিতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো পণ্য উৎপাদন বাড়িয়েছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে ফুল, ফল ও পর্যটনের ব্যবসাও।

এসব ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে এরই মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বৈশাখের অন্যতম একটি উপকরণ হচ্ছে ইলিশ। বছরের পুরো সময় ইলিশের দাম স্বাভাবিক থাকলেও বৈশাখী হাওয়া এলেই হু-হু করে বেড়ে যায় এর দম। আগে প্রতি এক কেজি ইলিশের দাম ছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এখন তা বেড়ে ২ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পহেলা বৈশাখ যত ঘনিয়ে আসবে, এর দাম আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে ইলিশকেন্দ্রিক বড় অঙ্কের অর্থের লেনদেন হচ্ছে। এর একটি অংশ উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে পর্যন্ত যাচ্ছে।

বৈশাখে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পোশাকের মধ্যে মেয়েদের শাড়ি, থ্রিপিস, সালোয়ার-কামিজ, অলংকার, গ্রামীণ চিত্রপট আঁকা নানা ধরনের সামগ্রী। এগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই থাকে দেশীয় তাঁতের কাপড়ের এবং দেশীয় উপকরণে তৈরি। এগুলো করে থাকেন গ্রামের তাঁতি ও ক্ষুদ্রশিল্পের উদ্যোক্তারা। ফলে এসব শিল্প চাঙা হয়ে ওঠে। গ্রাম ও শহরে যেসব বৈশাখী মেলা বসে, সেগুলোয় খেলনার পাশাপাশি থাকে নানা ধরনের উপকরণ।

বৈশাখে গৃহসামগ্রীর মধ্যে বিশেষ করে টেলিভিশন, ফ্রিজ, আসবাবপত্র, তৈজসপত্রসহ নানা উপকরণের চাহিদা বেড়েছে। ফলে এগুলোর উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনি এগুলোর ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে কোম্পানিগুলো বিশেষ ছাড়ে পণ্য বিক্রি করছে।

এদিকে বৈসাবি ও বৈশাখী উৎসব ঘিরে পাহাড়ের অর্থনীতিতে বিরাজ করছে চাঙাভাব। রাঙ্গামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় নতুন করে সাজানো হয়েছে শপিং মল ও বিপণিবিতানগুলো। জমজমাট মেলা বসেছে বিভিন্ন স্থানে। জমে উঠতে শুরু করেছে ফলমূল, সবজিসহ নিত্যপণ্যের বাজার।

পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসবকে নিজ ভাষায় ত্রিপুরারা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাইন এবং চাকমারা বিজু নামে পালন করে থাকে। এ তিন শব্দের আদ্যাক্ষর মিলিয়ে সম্মিলিত নাম দেয়া হয়েছে বৈসাবি। বৈসাবি পালিত হয় প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তি ও নববর্ষ উপলক্ষে ২৯-৩০ চৈত্র ও পহেলা বৈশাখ। বৈসাবিতে একাকার হয়ে যায় বৈশাখী উৎসব। পাহাড়িদের বৈসাবি এবং আবহমান বাংলার চিরায়িত বৈশাখী উৎসব ঘিরে এবারও চাঙা হয়ে উঠেছে পাহাড়ের ব্যবসাপাতি। বৈসাবি ও বৈশাখী উৎসবটি সামনে রেখে স্থানীয় বাজারে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে কেনাকাটা। তবে পুরোপুরি কেনাকাটা জমবে ৯ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত।

উৎসব ঘিরে পোশাক ও মনিহারি পণ্য কেনাকাটা শুরু হয়েছে রাঙ্গামাটির স্থানীয় বাজারে। দোকানিরা তুলেছেন বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক। নারী ও শিশুদের কাপড় সেলাই নিয়ে ব্যস্ত দর্জিরা। বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত মেলায় দর্শনার্থীদের পাশাপাশি ভিড় জমছে ক্রেতাদের।

রাঙ্গামাটির বাজারগুলোতে পাহাড়িদের শ্রমজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সব শ্রেণী ও পেশার মানুষের ভিড় জমছে ধীরে ধীরে। উৎসব আয়োজন ও আপ্যায়ন প্রস্তুতি নিয়ে গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা শুরু করেছেন কর্তা ও গৃহণীরা। তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোররা কিনছেন জামাকাপড় ও মনিহারি সামগ্রী।

এসএ/