ঢাকা, শনিবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩২

চাই মত প্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা

রাশেদ আহম্মেদ :

প্রকাশিত : ১১:৩৫ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৯ শনিবার

জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জের গ্রেফতারে আমি ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। প্রতিবাদ করতে ইচ্ছে করছে চিৎকার করে। ইকুয়েডরের সরকারের প্রতিও শ্রদ্ধাবোধ কমে গেছে। শেষপর্যন্ত আপোস!

পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেতে ২০১২ সালে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। তখন তার পক্ষে বাইরে অপেক্ষায় থাকা জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি অবাধ তথ্য প্রবাহের এক বিশ্ব চাই। জনগণের তথ্য জানার অধিকার আছে। চাই মত প্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করবে। জনগনকে তথ্য জানাবে।’

অবরুদ্ধ থাকা অবস্থাই আরেক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ‘হুমকির মুখেও উইকিলিকস দাঁড়িয়ে আছে। টিকে আছে মত প্রকাশের অধিকার ও আমাদের সামাজিক সবলতা। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বোধোদয় চাই। তারা রাষ্ট্রের ভিত্তিমূল মূল্যবোধে ফিরে আসুক। বিপদজনক ও নিপীড়নকারী এক দুনিয়ার দিকে আমাদের সবাইকে টেনে নেয়া থেকে বিরত থাকুক। আজ সাংবাদিকরা প্রতিহিংসার ভয়ে ভীত এবং নাগরিকরা কথা বলে অন্ধকারে ফিসফিস করে। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই বদলাতে হবে।’

২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠার পর এটি আমার মতো অনেকের কাছেই অজানা ছিল। ২০১০ সালে বিশ্ব কাঁপিয়ে দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার গোপন দলিল ফাঁস করে দিয়ে। বেরিয়ে যায় মার্কিনের আসল চরিত্র। দেশে দেশে মার্কিন কৌশল, নিবর্তনমূলক আচরণ উন্মোচিত হয়ে যায়। আর তাই খড়গ তুলে ধরে জুলিয়ানের ওপর, যেমন তুলে ধরা হয়েছিল অতীতে আরও অনেকের ওপর। তার বিরুদ্ধে দুটি নারী নির্যাতন মামলা করা হয়। লন্ডন পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য জুলিয়ান আশ্রয় নেন ইকুয়েডরের দূতাবাসে। আমরা যারা সংবাদকর্মী তাদের কাছে জুলিয়ান বড় আদর্শ। আমাদের নায়ক বলি ওঁকে। আমরাও অবাধ তথ্য প্রবাহে বিশ্বাসী। জনগনের জানার অধিকার আছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথি হ্যাক করে কোন অন্যায় করেনি জুলিয়ান। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা ঠুনকো একটি বিষয়। এরপরও মামলায় লড়বেন জুলিয়ান। তাকে আটক রেখে নয়, জামিন দিয়ে মামলা মোকাবেলা করার সুযোগ দেয়া হোক।

জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জের মুক্তি চাই। উইকিলিকস বেঁচে থাক। আসুন সবাই অবাধ তথ্য প্রবাহের দাবিতে সোচ্চার হই।

লেখক : সিনিয়র বার্তা সম্পাদক

মাছরাঙা টেলিভিশন

এসএ/