ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪,   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

শিল্পনগরীর জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস স্থাপন করা হবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৯ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৯:৩৪ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, শিল্পের সম্প্রসারণ ও গুণগতমান উন্নয়নে শিল্প নগরীর জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস স্থাপন করা হবে। দেশের সম্ভাবনাময় শিল্পখাতসমূহের বিকাশে সরকারি সহায়তা আরও কার্যকরভাবে প্রদানের লক্ষ্যে ওয়ানস্টপ সেন্টার কাজ করবে।

সোমবার বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)ও বাংলা একাডেমী যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী বৈশাখি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন একথা বলেন।

বিসিক চেয়ারম্যান মোশ্তাক হাসান এনডিসি এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিম, সংস্কৃতিবিষয়ক সচিব ড.মো.আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি ও নাসিব কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মির্জা নূরুল গণি শোভন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

শিল্পমন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশ এখন আর পিছিয়ে নেই। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী শিল্পখাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। শিল্পখাতের সমস্যা নিরসনে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে শিল্পোদ্যোক্তাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প পণ্যের বিদেশি ক্রেতা বৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সমূহে এ সকল পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি এ সকল পণ্যের ডিজাইন ও মান আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, প্রতিটি গ্রামে শহরের সুবিধাসমূহ প্রসারিত করতে স্থানীয় শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা আরো সহজলভ্য করতে হবে।

শিল্পসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে শিল্পখাতের বিকাশে অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। এই পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ প্রতিবেশি দেশের তুলনায় দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে বিসিক চেয়ারম্যান মোশ্তাক হাসান এনডিসি বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কপোরেশনের (বিসিক) মাধ্যমে দেশের বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। স্কয়ার ফার্মাসিটিকেলের জন্ম পাবনা বিসিকে,  প্রাণ-আরএফএল শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্ম রংপুর বিসিকে, বিআরবি ক্যাবলসের জন্ম কুষ্টিয়া বিসিকে। ক্ষুদ্র শিল্প আর ক্ষুদ্র নেই। তারা এখন বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

বিসিক চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিসিক বহুল প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে, মানিকগঞ্জে জমি খুঁজছে। ইতোমধ্যে তিনি শিল্পমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে পছন্দসই জায়গাগুলো পরিদর্শন করেছেন। বিসিক জমি পেলে প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে শিল্পনগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হস্ত, কুটির কারুশিল্পী ও উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর প্রায় ২০০টি স্টল স্থান পেয়েছে। মেলায় ১০টি স্টলে কারুশিল্পীগণ তাদের বিভিন্ন পণ্য মেলার মাঠে তৈরি করে তা প্রদর্শন ও বিক্রি করছেন। মেলা উপলক্ষে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীতসহ অন্যান্য গান পরিবেশিত হবে।

শিল্পমন্ত্রী প্রথমে ফিতা কেটে মেলার শুভ উদ্ভোধন করেন। এসময় মাননীয় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শিল্প সচিব মো.আবদুল হালিম, সংস্কৃতি সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি, বিসিক চেয়ারম্যান মোশ্তাক হাসান এনডিসি, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয় ও বিসিকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। মেলা আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উম্মুক্ত থাকবে।

শিল্পমন্ত্রী ১৪২৫ সনের শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পী হিসেবে পরেশ চন্দ্র দাশ (বাঁশ-বেত শিল্প), সোনারগাঁও, নারায়নগঞ্জে হাতে ‘কারুরত্ন পুরস্কার, একটি অভিজ্ঞানপত্র তুলে দেন। তাছাড়া দক্ষ কারুশিল্পী হিসেবে ১) মো. আনোয়ার হোসেন (শতরঞ্চি), পীরগাছা, রংপুর; ২) মিসেস জিং চেওময় বম (ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কারুশিল্প), উজানীপাড়া, বান্দরবান; ৩) অনুপ নাগ (শঙ্খ ও ঝিনুক), শাখারী বাজার, ঢাকা; ৪) কাঁসি চন্দ্র ত্রিপুরা (ক্ষুদ্র  নৃগোষ্ঠী কারুশিল্প), রোয়াংছড়ি, বান্দরবান; ৫) সানজানা হোসেন, (পুতুল), নারিন্দা, ঢাকা, ৬) হোসনে আরা বেগম (সূচী শিল্প), সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ,৭) সুবোধ কুমার পাল, (মৃৎ শিল্প) বাগধানী, রাজশাহী, ৮) খন্দকার আহাদুজ্জোহা (সূচী শিল্প), ঝিকরগাছা, যশোর -এদের হাতে ‘কারুগৌরব’ পুরস্কার, ক্রেস্ট ও অভিজ্ঞানপত্র তুলে দেন।

কেআই/