ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

বোমা ফাটল শ্রীলঙ্কায়, ভারতে ভোট চাইলেন মোদি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৩৬ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০১৯ সোমবার

চলছে দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯। গতকাল রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তিনটি সভা ছিল। প্রথমটি নিজ-রাজ্য গুজরাতের পাটানে। যেখানে দল কঠিন লড়াইয়ের মুখে। তখনও শ্রীলঙ্কার ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পুরো রিপোর্ট পাননি। কিন্তু সেখানেও পুরোদমে জাতীয়তাবাদের তাস খেলতে শুরু করেন। নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে সুকৌশলে টেনে আনেন বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের কথা।

মোদির দাবি, অভিনন্দনকে না-ছাড়লে যে পাকিস্তানকে ফলভোগ করতে হবে, সেই কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আমেরিকার এক কর্তাও বলেন, মোদি ১২টি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি রেখেছেন। পাকিস্তান দ্বিতীয় দিনেই অভিনন্দনকে ছাড়ার ঘোষণা করে। তা না-হলে ‘কোতলের রাত’ হত। পরমাণু অস্ত্র নিয়েও পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মোদি বলেন, পাকিস্তানের হুমকিতে ভয় পাওয়া ছেড়ে দিয়েছে ভারত। রোজ পরমাণু বোতামের কথা বলত। আমাদের কাছে তবে কী আছে? আমরা কি তা দীপাবলির জন্য বাঁচিয়ে রেখেছি?

মোদির পরের সভা ছিল রাজস্থানের চিতোরগড়ে। ততক্ষণে শ্রীলঙ্কার নাশকতার খবর পেয়ে গেছেন। এবার তিনি বললেন, রানা প্রতাপের জমি থেকে রাজস্থানের প্রচার শুরুর পথেই শুনলাম, আমাদের বন্ধু পড়শি দেশ শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসবাদীরা অনেক ‘বোম- ধামাকা’ করেছে। গির্জায়, হোটেলে। আজ পুরো বিশ্ব ইস্টারের পবিত্র পর্ব পালন করছে, প্রভু যিশুর শান্তির বার্তা আত্মস্থ করতে পূজাপাঠ করছে, সেই সময় নরাধম সন্ত্রাসবাদীরা শত শত নির্দোষের উপরে রক্তের খেলা খেলল। সঙ্কটের মুহূর্তে ভারত শ্রীলঙ্কার পাশে রয়েছে পুরো শক্তিতে।

এর পরে এক নিঃশ্বাসে মোদি বলে চলেন, ‘ভাই ও বোনেরা, আপনারা যখন পদ্মচিহ্নে ভোট দেবেন, মনে রাখবেন, এই সন্ত্রাসবাদ খতম করার জন্য বোতাম টিপছেন আপনারা। আপনার আঙুলে শক্তি আছে। আপনি পদ্মে ভোট দেবেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমার লড়াইয়ে শক্তি আসবে। বলুন, এই সন্ত্রাসবাদ কে খতম করতে পারে?… মোদি ছাড়া আর কোনও নাম দেখছেন আপনারা? আর কেউ করতে পারে?… ফলে যখন ভোট দেবেন, বীর সৈনিকের মতো সচেতন থাকা উচিত। দেশের জন্য ভোট দিলে সেই ভোট মোদির কাছে যাবে।’

রাহুল গান্ধী যতই বেকারত্ব, কৃষক দুর্দশার মতো মৌলিক বিষয় নিয়ে প্রচার করছেন, মোদি ততই চড়াচ্ছেন উগ্র জাতীয়তাবাদের সুর। সে কারণে দিল্লিতে সার্জিকাল স্ট্রাইকের ‘হিরো’ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি এস হুডাকে সামনে আনল কংগ্রেস। যার নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে একটি টাস্ক ফোর্স গড়েছেন রাহুল গান্ধী। সেই টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টও প্রকাশিত হল। সঙ্গে এলেন পি চিদম্বরম আর জয়রাম রমেশ। সেনা নিয়ে মোদির রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন রাহুল। বললেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট। তার পরেও সেনা নিয়ে কোনও রকম রাজনীতি দুঃখজনক।’ চিদম্বরম বললেন, ‘এই চড়া জাতীয়তাবাদে মুগ্ধ হওয়ার কিছু নেই। সেনাকে সব সময় খোলা পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া রয়েছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ফের দেবে।’

কংগ্রেসের আক্রমণ আসবে মোদি জানতেন। তাই বাড়মেরে তৃতীয় তথা এ দিনের শেষ সভায় ফের কংগ্রেসকে বিঁধলেন। বেশ কয়েক বার ‘পাকিস্তান’ ‘পাকিস্তান’ করলেন। বললেন, ‘২৩ মে যখন ফের মোদি সরকার আনবেন আপনারা, তার আওয়াজ শোনা যাবে সীমান্তপারে। সন্ত্রাসবাদকে শিক্ষা দেওয়ার পণ করেছি আমি। ঘরে ঢুকে মারি। কিন্তু কংগ্রেস বলে, শৌর্যের কথা বলা উচিত নয়। কেন? আমি কি ভজনমণ্ডলী করতে এসেছি?’

সূত্র: আনন্দবাজার

একে//